1443H Week-36
Friday, 15 April 2022
ZAKAT | যাকাত
THE INSTITUTION OF ZAKAT | যাকাত বিধানের সারসংক্ষেপ
যাকাতের অর্থ
আরবী الزكاة ‘যাকাত’ শব্দের আভিধানিক অর্থ বৃদ্ধি ও উন্নতি। যাকাত শব্দের আভিধানিক আরেকটি অর্থ হয় التطهير (তাতহির), যার বাংলা অনুবাদ পবিত্র করা। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
﴿قَدۡ أَفۡلَحَ مَن زَكَّىٰهَا ٩﴾ [الشمس: 9]
“সে নিশ্চিত সফল হয়েছে যে তাকে (নফসকে) পবিত্র করেছে”। [সূরা আশ-শামস, আয়াত: ৯]
যাকাতের প্রতি উৎসাহ প্রদান ও যাকাত না দেওয়ার পরিণতি
১. আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿خُذۡ مِنۡ أَمۡوَٰلِهِمۡ صَدَقَةٗ تُطَهِّرُهُمۡ وَتُزَكِّيهِم بِهَا وَصَلِّ عَلَيۡهِمۡۖ إِنَّ صَلَوٰتَكَ سَكَنٞ لَّهُمۡۗ وَٱللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ ١٠٣﴾ [التوبة: 103]
“তাদের সম্পদ থেকে সদকা নাও, এর মাধ্যমে তাদেরকে তুমি পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করবে এবং তাদের জন্য দো‘আ কর, নিশ্চয় তোমার দো‘আ তাদের জন্য প্রশান্তিদায়ক”। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৩]
অপর আয়াতে তিনি বলেন:
﴿إِنَّ ٱلۡمُتَّقِينَ فِي جَنَّٰتٖ وَعُيُونٍ ١٥ ءَاخِذِينَ مَآ ءَاتَىٰهُمۡ رَبُّهُمۡۚ إِنَّهُمۡ كَانُواْ قَبۡلَ ذَٰلِكَ مُحۡسِنِينَ ١٦ كَانُواْ قَلِيلٗا مِّنَ ٱلَّيۡلِ مَا يَهۡجَعُونَ ١٧ وَبِٱلۡأَسۡحَارِ هُمۡ يَسۡتَغۡفِرُونَ ١٨ وَفِيٓ أَمۡوَٰلِهِمۡ حَقّٞ لِّلسَّآئِلِ وَٱلۡمَحۡرُومِ ١٩﴾ [الذاريات: 15-19]
“নিশ্চয় মুত্তাকিরা থাকবে জান্নাতসমূহে ও ঝর্ণাধারায়, তাদের রব তাদের যা দিবেন তা তারা খুশীতে গ্রহণকারী হবে। ইতোপূর্বে এরাই ছিল সৎকর্মশীল। রাতের সামান্য অংশই এরা ঘুমিয়ে কাটাতো। আর রাতের শেষ প্রহরে এরা ক্ষমা চাওয়ায় রত থাকত। আর তাদের সম্পদে রয়েছে প্রার্থী ও বঞ্চিতের হক”। [সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত: ১৫-১৯]
অপর আয়াতে তিনি বলেন:
﴿وَٱلَّذِينَ يَكۡنِزُونَ ٱلذَّهَبَ وَٱلۡفِضَّةَ وَلَا يُنفِقُونَهَا فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ فَبَشِّرۡهُم بِعَذَابٍ أَلِيمٖ ٣٤﴾ [التوبة:34]
“যারা সোনা ও রূপা পুঞ্জীভূত করে রাখে এবং তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না, তুমি তাদেরকে বেদনাদায়ক আযাবের সুসংবাদ দাও”। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৩৪]
২. ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, মু‘আয ইবন জাবাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে ইয়ামান পাঠানোর সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেন:
«إنك تأتي قوماً من أهل الكتاب، فادْعُهُم إلى شهادة أنْ لا إله إلا الله، وأني رسول الله، فإنْ هم أطاعوا لذلك، فأعْلِمْهُم أن الله افترض عليهم خمس صلوات في كل يوم وليلة، فإنْ هم أطاعوا لذلك، فأعْلِمْهُم أن الله افترض عليهم صدقة تُؤخَذ مِن أغنيائهم فتُرَدّ في فقرائهم، فإنْ هم أطاعُوا لذلك، فإيَّاكَ وَكَرَائِمُ أموالهم (يعني لا تأخذ الزكاة مِن أفضل أموالهم وأحَبّهَا إليهم كما سيأتي)، واتقِ دعوة المظلوم، فإنه ليس بينها وبين الله حِجاب».
“তুমি কিতাবিদের এক কওমের নিকট যাচ্ছ, অতএব, তাদেরকে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ ও আমি আল্লাহর রাসূল’ সাক্ষীর দিকে আহ্বান কর, যদি তারা এতে আনুগত্য প্রকাশ করে, তাদেরকে জানিয়ে দাও যে, প্রত্যেক দিন ও রাতে আল্লাহ তাদের ওপর পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরয করেছেন। যদি তারা এতে আনুগত্য প্রকাশ করে, তাদেরকে জানিয়ে দাও যে, আল্লাহ তাদের ওপর সদকা ফরয করেছেন, যা তাদের ধনীদের থেকে গ্রহণ করে তাদেরই গরীবদের মাঝে বণ্টন করা হবে, যদি তারা এতে আনুগত্য প্রকাশ করে, তুমি তাদের দামী সম্পদ গ্রহণ করা পরিহার কর, (অর্থাৎ যে সম্পদ তাদের নিকট অতি উত্তম ও অধিক পছন্দনীয় যাকাত হিসেবে সেখান থেকে তুমি গ্রহণ করবে না), আর মজলুমের দো‘আ থেকে বাঁচ। কারণ, তার মাঝে ও আল্লাহর মাঝে কোনো পর্দা নেই”।[সহীহ বুখারী]
বিভিন্ন প্রকার যাকাত
বিভিন্ন প্রকার যাকাত রয়েছে, যেমন স্বর্ণের যাকাত, চেক ও ব্যাংক নোটের যাকাত, যাকাতুল ফিতর, ব্যবসায়ী পণ্যের যাকাত, গুপ্তধনের যাকাত, জীব-জন্তুর যাকাত এবং ফল ও ফসলের যাকাত।
যাকাত ফরয হওয়ার শর্তসমূহ:
১ম শর্ত: ব্যক্তির স্বাধীন হওয়া
২য় শর্ত: মুসলিম হওয়া
৩য় শর্ত: সম্পদ নিসাব পরিমাণ হওয়া
৪র্থ শর্ত: নিসাব পরিমাণ সম্পদে হিজরী এক বছর পূর্ণ হওয়া
Criteria for Zakat Payment:
As a Muslim, Zakat becomes obligatory (Fard) on you when you meet the following four conditions:
1. You are the `owner of Nisab'.
2. You are meeting the basic needs of yourself and your family,
3. You are not an insolvent debtor ( i.e., you are meeting the financial obligations of your debt),
4. You have possessed the wealth/livestock for one complete lunar year (Haul), or raised and harvested crop, or gained the ownership of fortuitous fortune.
Zakatability of the Possessions:
The items of one’s possessions can be classified into two groups:
Zakatable Possessions
Non-Zakatable Possessions
Zakatable Possessions:
An item is Zakatable when it meets the following four conditions:
1. The item is not intended for one’s personal or household use and/or consumption
2. The item is in one’s complete ownership. (A person is considered a complete owner of a property when it is in his lawful possession and he is able to dispose of it at his will).
3. The item is held in one’s possession for a stipulated period of time.
4. The amount of the item in one’s possession exceeds a prescribed limit (Nisab).
Non-Zakatable Possessions
The items of one’s basic needs and necessities are exempted from Zakat. All items of value, (movables and immovable), that are designated for personal and household use and/or consumption are non-Zakatable.
প্রথম: অলঙ্কারের যাকাত
অলঙ্কার দু’প্রকার:
প্রথম প্রকার: দু’টি নগদ মুদ্রা, অর্থাৎ স্বর্ণ ও রূপা। স্বর্ণ ও রূপার যাকাত সম্পর্কে আহলে ইলমগণ একাধিক মত পোষণ করেছেন। কেউ ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন দেখতে হবে: স্বর্ণ-রূপা সাজ-সজ্জা ও সৌন্দর্য গ্রহণ করার জন্য, না সঞ্চয় করে রাখার জন্য, না ব্যবসা বা অন্য কোনো কাজের জন্য। অধিক বিশুদ্ধ মত হচ্ছে: নিসাব পরিমাণ স্বর্ণ-রূপার ওপর হিজরী এক বছর পূর্ণ হলে যাকাত ওয়াজিব হবে, যে উদ্দেশ্যেই তা সংগ্রহ করুক।
দ্বিতীয় প্রকার: স্বর্ণ-রূপা ব্যতীত অন্যান্য বস্তু যেমন হীরা, মুক্তা, ইয়াকুত, মোতি, মুক্তোদানা, গোমেদ-পীতবর্ণ মণিবিশেষ ইত্যাদি বস্তুর ভেতর যাকাত ওয়াজিব হয় না; তার মূল্য যাই হোক, তবে ব্যবসার জন্য হলে ব্যবসায়ী পণ্য হিসেবে তার ওপর যাকাত ওয়াজিব হবে।
স্বর্ণ ও রূপার যাকাতের নিসাব
স্বর্ণের নিসাব: স্বর্ণের নিসাব বিশ দিরহাম স্বর্ণ, যা ওজন করলে ৮৫ গ্রাম স্বর্ণ হয়। কারও মালিকানাধীন যদি ৮৫ গ্রাম বা ততোধিক স্বর্ণ থাকে, ক্যারেট যাই হোক, তার ওপর হিজরী এক বছর পূর্ণ হলে যাকাত ওয়াজিব হবে। যাকাতের পরিমাণ এক-দশমাংশের এক চতুর্থাংশ, অর্থাৎ মোট স্বর্ণের ২.৫ পার্সেন্ট।
যাকাত দেওয়ার নিয়ম: ব্যক্তির মালিকানায় যে ক্যারেট স্বর্ণ রয়েছে সেই ক্যারেটের একগ্রাম স্বর্ণের বাজার দর জানবে প্রথম। যদি একাধিক ক্যারেটের স্বর্ণ থাকে, যে ক্যারেট স্বর্ণ বেশি আছে তার বাজার দর জানবে, অতঃপর একগ্রাম স্বর্ণের মূল্যকে তার নিকট যে ক’গ্রাম স্বর্ণ রয়েছে তার সংখ্যা দিয়ে পূরণ দিবে। এভাবে স্বর্ণের গ্রামকে মুদ্রায় পরিণত করবে, অতঃপর ক্যালকুলেটর দিয়ে মোট মূল্য থেকে ২.৫% বের করবে, যে অংক আসবে তাই স্বর্ণের যাকাত।
রূপার নিসাব: ২০০ দিরহাম রূপা, যা ওজন করলে ৫৯৫ গ্রাম হয়। কারও মালিকানায় যদি ২০০ দিরহাম বা তার চেয়ে বেশি রূপা থাকে এবং তার ওপর হিজরী এক বছর পূর্ণ হয়, তবেই তাতে যাকাত ফরয হবে। যাকাতের পরিমাণ: এক-দশমাংশের এক-চতুর্থাংশ, অর্থাৎ মোট রূপার ২.৫%।
যাকাত বের করার নিয়ম: যে ক্যারেট রূপা তার কাছে রয়েছে, প্রথম তার বাজার দর জানবে, আর যদি একাধিক ক্যারেটের রূপা থাকে, যে ক্যারেট রূপা বেশি রয়েছে তার বাজার দর জানবে। অতঃপর যত গ্রাম রূপা তার মালিকানায় রয়েছে তার সংখ্যা দিয়ে একগ্রাম রূপার বাজার দরকে গুণ দিবে, গুণফল থেকে ২.৫% যাকাত বের করবে, যে অংক বের হবে সেটি ৫৯৫ গ্রাম রূপার যাকাত।
দ্বিতীয়: ব্যাংক নোটের যাকাত
ব্যাংক নোট যেমন ডলার, জুনাই, রিয়াল ও অন্যান্য মুদ্রা, যা নগদ অর্থ হিসেবে পরিচিত। অনুরূপ অর্থের বিভিন্ন দলীল, যেমন চেক, বিল, বিনিয়োগ সার্টিফিকেট ও অন্যান্য কাগজপত্র, যার বৈষয়িক মূল্য রয়েছে।
জ্ঞাতব্য যে, ব্যাংক নোট ও চেক মূলত তার মূল্যের দলীলস্বরূপ, অতএব, তার মূল্য যদি নিসাব পরিমাণ হয়, তার ওপর হিজরী এক বছর পূর্ণ হলে যাকাত ওয়াজিব হবে। প্রতি হাজারে পঁচিশ টাকা যাকাত আসবে।
ঋণের যাকাত
আলিমগণ দ্বিমত পোষণ করেছেন যে, মানুষের নিকট যার যাকাতের নিসাব পরিমাণ ঋণ বা পাওনা আছে এবং সে ঋণের ওপর হিজরী এক বছরও পূর্ণ হয়েছে, তার যাকাত বের করা কি ওয়াজিব?
আলিমদের বিশুদ্ধ মত হচ্ছে, ঋণের ওপর যাকাত নেই, ঋণ ফেরত পাওয়া নিশ্চিত বা অনিশ্চিত যাই হোক। ঋণ ফেরত পাওয়া নিশ্চিত যেমন দেনাদার ঋণ স্বীকার করে, ভবিষ্যতে অস্বীকার করবে না এবং তার থেকে উসুল করাও সম্ভব। ঋণ ফেরত পাওয়া অনিশ্চিত যেমন দেনাদার ঋণ অস্বীকার করে অথবা গরীব-ঋণ পরিশোধ করার সামর্থ্য তার নেই অথবা ঋণ নিয়ে টালবাহানাকারী। এসব ক্ষেত্রে যাকাত নেই। কারণ, ঋণ তার পূর্ণ আয়ত্তে নেই, সে তাতে কর্তৃত্ব করার ক্ষমতা রাখে না, যেহেতু তার কাছে নেই, তবুও যারা বলেন, ঋণের ওপর যাকাত ফরয তাদের মতকে মূল্যহীন বলি না।
তৃতীয়: ব্যবসায়ী পণ্যের যাকাত
অর্থাৎ যেসব বস্তু দিয়ে ব্যবসা করা হয়, যেমন ব্যবসার নানা পণ্য, জমি, গাড়ি ও ব্যবসার অন্যান্য সামগ্রী। অধিকাংশ আলিম বলেন: ব্যবসায়ী পণ্যে যাকাত ওয়াজিব। এটিই বিশুদ্ধ মত।
ব্যবসায়ী পণ্যে যাকাত ওয়াজিব হওয়ার শর্তসমূহ:
ক. মালিকানা পদ্ধতি অনুসরণ করে ব্যবসায়ী পণ্যের পূর্ণ মালিক হওয়া, যেমন ক্রয় বা হেবা বা মিরাস বা অন্য কোনোভাবে ব্যবসায়ী পণ্যের পূর্ণ মালিক হওয়া। এটিই বিশুদ্ধ মত। অতএব, কেউ যদি ব্যবসায়ী পণ্যের আমানতদার বা রক্ষণাবেক্ষণকারী বা জিম্মাদার হয় তার ওপর যাকাত ফরয হবে না।
খ. ব্যবসায়ী পণ্যের উদ্দেশ্য ব্যবসা হওয়া, যদি জমা ও ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে সম্পদের মালিক হয়, ব্যবসায়ী পণ্য হিসেবে গণ্য হবে না।
গ. ব্যবসায়ী পণ্যের মূল্য স্বর্ণ বা রূপার নিসাব সমপরিমাণ হওয়া, অর্থাৎ সে যদি যাকাতের জন্য স্বর্ণের নিসাবকে গ্রহণ করে, তাহলে দেখবে তার ব্যবসায়ী পণ্যের মূল্য স্বর্ণের নিসাবের মূল্য বরাবর কি-না। আর যদি রূপার হিসেব আমলে নেয়, তাহলে দেখবে তার ব্যবসায়ী পণ্যের মূল্য রূপার নিসাবের মূল্য বরাবর কি-না।
ঘ. ব্যবসায়ী পণ্যের ওপর হিজরী এক বছর পূর্ণ হওয়া।
চতুর্থ: গুপ্তধনের যাকাত
প্রথমত: গুপ্তধনের সংজ্ঞা: অধিকাংশ আলিম বলেছেন, —আর তাদের সংজ্ঞাটিই বিশুদ্ধ: গুপ্তধন বলতে জমিনে পুতে রাখা সকল সম্পদকে বুঝানো হয়, যেমন প্রত্নতত্ত্ব, স্বর্ণ, রূপা, সীসা, পিতল, বাসন-কোসন ও অন্যান্য আসবাব-পত্র, তবে জাহিলি যুগের হওয়া শর্ত, অর্থাৎ নিশ্চিত হতে হবে যে, গুপ্তধন ইসলামের পূর্বযুগে মাটিতে পুতে রাখা হয়েছে, (গুপ্তধনের গায়ের তারিখ ও অন্যান্য নিদর্শন দেখে যা বুঝা যায়) অতঃপর কেউ নিজের জমি খনন করতে গিয়ে তার সন্ধান পায়। যেমন, ঘরের খুঁটি অথবা কুপ অথবা কোনও খনন কাজে বেরিয়ে আসে। আর যদি গুপ্তধন বের করতে টাকা-পয়সা ব্যয় হয় তখন সেটি গুপ্তধন থাকবে না, যাকাতের সম্পদের ন্যায় সাধারণ সম্পদ গণ্য হবে, যেমন পূর্বে বলেছি।
দ্বিতীয়ত: গুপ্তধন থেকে যাকাত দেওয়ার পরিমাণ: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: وفي الرِّكَاز: الخُمس “গুপ্তধনের যাকাত এক পঞ্চমাংশ”।[2] অর্থাৎ যে গুপ্তধন পাবে সে গুপ্তধন থেকে এক-পঞ্চমাংশ যাকাত দিবে। অধিকাংশ আলিম বলেছেন: যে গুপ্তধন পাবে তার দায়িত্ব এক পঞ্চমাংশ যাকাত বের করা, সে মুসলিম হোক বা মুসলিম দেশে বসবাসকারী যিম্মি হোক। গুপ্তধন প্রাপককে মুসলিম শাসক বাধ্য করবেন, যেন রাষ্ট্রের নিকট এক পঞ্চমাংশ যাকাত হস্তান্তর করে, সে ছোট, বড়, সুস্থ বা পাগল যাই হোক। এটি বিশুদ্ধ মত, কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী وفي الرِّكَاز: الخُمس ব্যাপক: ছোট-বড়-সুস্থ-পাগল সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে। আরেকটি বিষয় জানা প্রয়োজন যে, হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় পাঁচভাগ থেকে অবশিষ্ট চার ভাগ প্রাপকের হক।
তৃতীয়ত: গুপ্তধনের নিসাব: হাদীসের বাহ্যিক অর্থ বলে, গুপ্তধনে যাকাত ওয়াজিব হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিসাব শর্ত নয়। অধিকাংশ আলিম এ কথা বলেছেন। অতএব, যে জাহিলি যুগের গুপ্তধন পাবে, সে তার এক পঞ্চমাংশ যাকাত দিবে, তার পরিমাণ কম হোক বা বেশি হোক।
চতুর্থত: এক পঞ্চমাংশ গুপ্তধনের হকদার: গুপ্তধনের খাত হাদীসে নির্ণয় করা হয়নি, তাই ফকিহগণ ইখতিলাফ করেছেন: গুপ্তধন থেকে এক পঞ্চমাংশ যাকাতের আট খাতে ব্যয় করবে, না গণিমতের ন্যায় জনস্বার্থে ব্যয় করবে?
পঞ্চম: চতুষ্পদ প্রাণীর যাকাত
এ অধ্যায় দ্বারা উদ্দেশ্য উট, গরু ও বকরির যাকাত। কারণ, এসব প্রাণী ব্যতীত অন্যান্য প্রাণীর যাকাতের কথা হাদীসে উল্লেখ নেই। অতএব, সাধারণ পাখি, মুরগি, ঘোড়া, গাধা, খরগোশ ও অন্যান্য প্রাণীতে যাকাত নেই, তার সংখ্যা যত বেশি হোক, তবে কোনও প্রাণী ব্যবসার জন্য নির্ধারিত হলে ব্যবসায়ী পণ্য হিসেবে তাতে যাকাত ওয়াজিব হবে। চতুষ্পদ প্রাণীর যাকাতের জন্য শর্তসমূহ:
১. নিসাব পরিমাণ হওয়া, যার ব্যাখ্যা সামনে আসছে।
২. হিজরী এক বছর পূর্ণ হওয়া।
৩. যাকাতের পশু সায়েমা হওয়া।
ষষ্ঠ: ফল ও ফসলের যাকাত
হাদীসে যেসব ফসলের নাম উল্লেখ করে যাকাত নির্ধারণ করা হয়েছে সেগুলো চার প্রকার: ক. الحِنطة বা গম, খ. الشعير বা যব, গ. التمر বা খেজুর, ও ঘ. الزبيب বা কিশমিশ।
ফল ও ফসলের যাকাতের নিসাব: অধিকাংশ আলিম বলেছেন: ফল ও ফসলের নিসাব পাঁচ ওসাক, যা সাধারণত ৬৪৭ কেজি হয়। লক্ষণীয় যে, এই পরিমাপ করবে শস্য খোসা থেকে পরিস্কার করার পর। অনুরূপ ফল শুকানোর পর। উদাহরণত কারও ১০ ওসাক আঙ্গুর আছে, শুকানোর পর যদি পাঁচ ওসাক থেকে কম হয়, তাতে যাকাত ওয়াজিব হবে না, কারণ নিসাব পর্যন্ত পৌঁছেনি, অর্থাৎ পাঁচ ওসাক।
যদি ফল ও ফসল খোসাসহ গুদামজাত করা হয়, বিশুদ্ধ মতে অভিজ্ঞগণ চিন্তা করে বলবেন খোসা থেকে পরিস্কার করা হলে কি পরিমাণ ফসল টিকবে, যদি পাঁচ ওসাক বা তার চেয়ে বেশি টিকে তাতে যাকাত ওয়াজিব হবে।
ফসলে যাকাতের পরিমাণ: দশ ভাগের একভাগ ফসল যাকাত দেওয়া ওয়াজিব, অর্থাৎ মোট ফল ও ফসলের ১০% যাকাত দিবে, যদি প্রাকৃতিক সেচ দিয়ে বিনা খরচে ফসল উৎপন্ন হয়, যেমন নদী-খাল ও বৃষ্টির পানির ফসল। অনুরূপ যে গাছগাছালি লম্বা শিকড় দিয়ে দূর থেকে পানি চুষে নেয়, সেচ করার প্রয়োজন হয় না তার হুকুমও এক, যেমন খেজুর গাছ। আর যদি ফল ও ফসলের জমি টাকা খরচ করে সেচ করা হয়, যেমন মেশিন দিয়ে সেচ করা হয়, তার ৫% অর্থাৎ এক দশমাংশের অর্ধেক বা বিশ ভাগের এক ভাগ যাকাত দিবে। চার ইমামের মাযহাব এটি, এতে কেউ দ্বিমত করেন নি।
ফল ও ফসলের যাকাত দেওয়ার সময়: বিশুদ্ধ মতে, ফল যখন ব্যবহার উপযোগী হয় ও পেকে যায়, যেমন ফলের আঁটি শক্ত বা খেজুর লাল হয়, তখন তার ওপর যাকাত ওয়াজিব হয়, তবে যখন ফসল খোসা থেকে পরিস্কার করবে বা তাতে মেশিন লাগাবে, তখন আদায় করবে, অনুরূপ খেজুর শুকানোর পর তার যাকাত দিবে।
DUE DATE OF ZAKAT
In case of Un-invested wealth, invested wealth and livestock, the payment of Zakat becomes due exactly at the end of one lunar year (Haul) from the time the Nisab is attained. Accounts of the availability of Nisab at the beginning and at the end of the year are to be kept. The decrease in the availability of Nisab at any time in between the year may not matter. Muslims traditionally earmark the month of Ramadan for the payment of their Zakat
Advance payment of Zakat, before the completion of the year, is permissible. Zakat payments are also permissible in installments to make it easy on the payer. Upon completion of the year one should calculate his/her Zakat to ascertain the correct amount of the Zakat due.
In case of the agricultural produce and fortuitous fortune the payment of Zakat becomes due immediately after the wealth is in the possession of the owner.
যাকাতের হকদার
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿إِنَّمَا ٱلصَّدَقَٰتُ لِلۡفُقَرَآءِ وَٱلۡمَسَٰكِينِ وَٱلۡعَٰمِلِينَ عَلَيۡهَا وَٱلۡمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمۡ وَفِي ٱلرِّقَابِ وَٱلۡغَٰرِمِينَ وَفِي سَبِيلِ ٱللَّهِ وَٱبۡنِ ٱلسَّبِيلِۖ فَرِيضَةٗ مِّنَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٞ ٦٠﴾ [التوبة: 60]
“নিশ্চয় সদকা হচ্ছে ফকীর ও মিসকীনদের জন্য এবং এতে নিয়োজিত কর্মচারীদের জন্য, আর যাদের অন্তর আকৃষ্ট করতে হয় তাদের জন্য, (তা আরও বণ্টন করা যায়) দাস আযাদ করার ক্ষেত্রে, ঋণগ্রস্তদের মধ্যে, আল্লাহর রাস্তায় এবং মুসাফিরদের মধ্যে। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত, আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়”।[সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৬] এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা যাকাতের হকদার আট প্রকার নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন, নিম্নে তার বিস্তারিত বর্ণনা দেখুন:
যাকাতের প্রথম ও দ্বিতীয় হকদার:
ফকীর ও মিসকীন: ফকীর ও মিসকীন শব্দ দু’টির পার্থক্য নির্ণয় করতে গিয়ে আহলে ইলমগণ দ্বিমত পোষণ করেছন, সংজ্ঞা যাই বলা হোক তারা অর্থাৎ ফকীর ও মিসকীন যাকাতের হকদার। সারকথা হচ্ছে, ফকীর ও মিসকীন তাদেরকে বলা হয়, যাদের সম্পদ ও সম্পদ উপার্জন করার উপায় নেই। অনুরূপ কারও সম্পদ ও সম্পদ উপার্জন করার ক্ষমতা আছে, কিন্তু তা দিয়ে তার নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জরুরি প্রয়োজন পূরণ হয় না, যেমন খাবার, পোশাক, বাড়ি-ভাড়া, চিকিৎসা খরচ, অপারেশন, বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানির বিল ইত্যাদি তার সম্পদ দিয়ে যথেষ্ট হয় না।
যাকাতের তৃতীয় হকদার:
যাকাতের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ: যাকাতের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ দ্বারা উদ্দেশ্য যাকাত উসুলকারীগণ। অর্থাৎ বিত্তশালীদের নিকট থেকে যাকাত উসুল করার জন্য খলিফা বা তার প্রতিনিধি যাদেরকে নিয়োগ দেন তারাই যাকাত উসুলকারী। অনুরূপ যাকাত সংরক্ষণকারী, অর্থাৎ যারা গুদামে সংরক্ষিত যাকাত রক্ষণা-বেক্ষণ করেন। অনুরূপ যারা গরীবদের মাঝে যাকাত বণ্টন করার দায়িত্বে নিয়োজিত তাদেরকে যাকাত থেকে দেওয়া বৈধ, যদিও তারা ধনী হয়। এটি তাদের বৈধ হক, যা শরী‘আত তাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছে, তারা যদি এই হক ত্যাগ করে সমস্যা নেই।
যাকাতের চতুর্থ হকদার:
যাদের অন্তর ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করা জরুরি, তাদেরকে যাকাত দেওয়া বৈধ। যাদেরকে যাকাত দিলে ইসলাম গ্রহণ করবে অথবা যাদেরকে যাকাত দিলে ঈমান শক্তিশালী হবে অথবা যাদেরকে যাকাত দিলে মুসলিমদের ক্ষতি করা থেকে বিরত থাকবে, তাদেরকে যাকাত দেওয়া বৈধ, তারা সবাই এই খাতের অন্তর্ভুক্ত।
যাকাতের পঞ্চম হকদার:
গোলাম মুক্ত করা: আরবি رقاب শব্দটি বহুবচন, একবচন رقبة যার অর্থ দাস-দাসী। আর আল্লাহ তা‘আলার বাণী "وفي الرقاب" দ্বারা উদ্দেশ্য দাস-দাসীকে দাসত্ব থেকে মুক্ত করা। আয়াতের উদ্দেশ্য দাস-দাসীকে সম্পদ দেওয়া নয়, বরং তাদেরকে দাসত্ব থেকে মুক্ত করা উদ্দেশ্য।
যাকাতের ষষ্ঠ হকদার:
ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি: আরবী غارمون বহুবচন, একবচন হচ্ছে غارم অর্থাৎ ঋণগ্রস্ত মুসলিম। ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি দু’প্রকার:
এক. মানুষের মাঝে সুসম্পর্ক পুণঃপ্রতিষ্ঠার জন্য খরচ করে যিনি ঋণগ্রস্ত হয়েছেন। যেমন কেউ বিভিন্ন গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের মধ্যে ঝগড়া বিবাদের মীমাংসার জন্য নিজের জিম্মাদারীতে কিছু সম্পদের দায়িত্ব গ্রহণ করে যাতে সম্পদ প্রদান করতে হয়। যেমন এক পক্ষকে কিছু টাকা দিয়ে তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেওয়া। অথবা যদি এমন কোনো নগদ টাকা ব্যয় করে খাবারের আয়োজন করে যাতে উভয় বিবদমান পক্ষকে নিমন্ত্রণ করে তাদের মাঝে মীমাংসা করার ব্যবস্থা করা হয়। অথবা উভয় বিবদমান গোষ্ঠীর জন্য হাদীয়া ক্রয় ও তা প্রদানের মাধ্যমে সম্প্রীতির ব্যবস্থা করে দেওয়া। সুতরাং যারা এ কাজ করার জন্য ঋণ করবে তারা ধনী হলেও তাদেরকে যাকাতের সম্পদ দেওয়া যাবে এ কাজকে যথাযথভাবে আঞ্জাম দেওয়ার জন্য।
দুই. ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি: অর্থাৎ যে নিজের প্রয়োজনে ঋণ করেছে, যেমন অভাব অথবা চিকিৎসা অথবা পোশাক-পরিচ্ছদ অথবা বিবাহ অথবা ঘরের আসবাব-পত্র কেনার জন্য ঋণ করেছে, (পুরনো ফার্নিচার নতুন করার জন্য ঋণ করলে এই খাতের অন্তর্ভুক্ত হবে না)। অনুরূপ যার সম্পদ ধ্বংস হয়ে গেছে সেও এই খাতের অন্তর্ভুক্ত, যেমন অগ্নিকাণ্ড অথবা জলোচ্ছ্বাস অথবা মাটিতে ধসে যাওয়া ইত্যাদি।
যাকাতের সপ্তম হকদার:
ফী সাবীল্লিাহ বা আল্লাহর রাস্তার যাত্রীগণ: আল্লাহর রাস্তা দ্বারা উদ্দেশ্য জিহাদ। অতএব, মুজাহিদ ও মুজাহিদদের অস্ত্র-শস্ত্রের জন্য যাকাত খরচ করবে, যদিও তারা ধনী হয়। অতএব, গোলাবারুদ ও অস্ত্র-শস্ত্র খরিদ করা, যুদ্ধের বিমান ঘাটি তৈরি করা, শত্রুদের সন্ধান দাতার বেতন ইত্যাদি এই খাতের অন্তর্ভুক্ত। এটি শাফেঈ, মালেকী ও হাম্বলীদের মাযহাব, তবে শাফেঈ ও হাম্বলীগণ শর্ত করেছেন: মুজাহিদদের স্বেচ্ছাসেবক হওয়া জরুরি, অর্থাৎ যাদের জন্য সরকারি বেতন-ভাতা বরাদ্দ নেই। আর হানাফীরা في سبيل الله এর ক্ষেত্রে অনেক ব্যাপকতা আরোপ করেছে, তাদের নিকট কল্যাণকর প্রত্যেক খাতে যাকাত ব্যবহার করা বৈধ, তাদের মাযহাবটি খুব দুর্বল। অধিকাংশ আলিমের মাযহাব-ই বিশুদ্ধ।
যাকাতের অষ্টম হকদার:
ইবনুস সাবিল বা মুসাফির: ইবনুস সাবিল অর্থ মুসাফির, অর্থাৎ যার রাহ খরচ নেই। রাহ খরচ হারিয়ে গেছে অথবা ফুরিয়ে গেছে অথবা কোনও বিপদের কারণে তার অর্থ প্রয়োজন। এরূপ ব্যক্তিকে সফর পূর্ণ করে দেশে ফিরার জন্য যাকাত দেওয়া বৈধ, যদিও সে নিজ দেশে ধনী।
YOUTH
FAMILY OF FAITH
Prophet Ya'qoub and his Beloved Son
A Special Family of Faith
In this hadeeth, Prophet Muhammad (S) was referring to Prophet Yousuf (A) and his ancestors. Yousuf was the son of Prophet Ya'qoub (A), who was the son of Prophet ls'haq, who was the son of Prophet Ibraheern, peace be upon them all. Rasoolullah (S) was stressing how honorable all these men were. They were truly a family of great faith.
Prophet Yaqoub and his Family
Prophet Ya'qoub was also known as Israel, which means in Hebrew "working hard for God." His father was Is'haq, the younger brother of Isma'eet. Ya'qoub had four wives. From three of them, he had ten sons. One of his wives was very beautiful. Her name was Rahil, which is Arabic for Rachel. In his old age, he had from Rahil two sons: Yousuf and Benyamin. Benyamin was the younger son of Rahil and Ya'qoub.
Ya'qoub lived with his wife and sons in Palestine, near Jerusalem. Yousuf was a righteous child and was extremely handsome. Prophet Muhammad (S) had said, "Yousuf had half of the beauty in the world." Ya'qoub loved his son Yousuf very dearly. He knew his son was very special. Ya'qoub's ten other older sons were jealous of Yousuf, because their father seemed to love him more. They allowed Shaytan to make them envy their brother and wish that he would lose favor.
Jealousy leads to envy, Envy or hasad is Shaytan's way to make brothers, sisters, relatives and friends hate each other.
The act of hasad is to wish in your heart that others would lose a favor they have from Allah, and wish that gift to come to you instead. This is haram in Islam. A good believer should hope that others keep enjoying Allah's gifts and favors, and wish that he or she will also be given similar favors from Allah.
Yousuf's Vision
One day, Yousuf came to his father and told him that he had a vision wherein he saw eleven stars, the sun and the moon prostrating to him.
Ya'qoub was wise. He told Yousuf not to tell his brothers about his vision. He knew that the other sons might plot to hurt Yousuf.
Ya'qoub predicted that his son would be a prophet, like him. He told Yousuf that God would teach him the meaning of stories and events, and that God would give blessings to him and his family.
Yousuf was young and innocent and did not know anything about his brothers' hatred, But Ya'qoub knew and warned him. Ya'qoub trusted Allah would do what was best. He knew how his father Is'haq, and grandfather, lbraheem, had trusted Allah. They both kept their faith through all hardships, and Allah helped and supported them.
Yousuf's Jealous Brothers
Just as Ya'qoub sensed, the ten brothers plotted to get rid of Yousuf. In their mean hearts, they thought that would bring their father's love back to them. They thought that after getting rid of Yousuf by killing him, they would repent and be good again.
One of the brothers, who was less cruel said, "Don't kill Yousuf! Throw him into the well! Some travelers passing by will pick him up and take him to a faraway land. If not, at least we shall not have killed him."
Allah planned to keep Yousuf alive, so the brothers went ahead with their plot. They asked their father to let them take Yousuf to play with them. They argued that he would have a good time in the open air.
Prophet Ya'qoub was suspicious about the situation and did not trust his sons with Yousuf. However, he did not know about their evil plans. Anyway, he didn't want to make them angry. If they became angry, he thought, they may hurt Yousuf. So Ya'qoub decided he must deal with them wisely and cautiously.
He told them that he was old, and would miss Yousuf very much and be sad without him. And after all, Yousuf was not of an age to play with them. They would be busy playing, and a wolf might come and attack Yousuf. When he said this, the wicked sons thought to use the very same excuse when they would come back without Yousuf.
The Evil Plot
The brothers took Yousuf anyway and carried out their evil plan.
They threw him in a well, but not before taking his shirt. Yousuf was betrayed by his brothers. They did not care if he died or if he was sold into slavery. But Yousuf's heart was fearless. He had courage. As a matter of fact, he had the feeling that God would save him.
The plotters went back home, ready with their false tale for their father. They told their father a wolf had attacked and killed Yousuf. To make it look real, they came late in the evening crying, as if they felt bad about losing their brother. They even killed a goat and used its blood to stain Yousuf's shirt. They told Ya'qoub that they were having a race when they left Yousuf with their belongings. They said that when they were racing, they could not see the wolf or save their little brother. They thought that their father's fears about the wolf could make him believe their story.
They were surprised that their father did not believe the story, and he treated them coldly. They pretended to be hurt, to make it look like they were innocent. Even the blood-stained shirt did not convince him.
Prophet Ya'qoub (A) knew that there had been foul play, and he plainly told his sons what he thought. He deeply grieved over the loss of his precious son, but he had faith in Allah and prayed for His assistance. Prophet Ya'qoub showed great patience.
Yousuf Becomes a Slave
Meanwhile, a caravan of travelers came to the well where Yousuf had been thrown. They were surprised when instead of water, they saw a boy, as innocent as an angel, with a face as radiant as the sun. seeing him was a delight.
It was a caravan of merchants who thought of everything in terms of money. In front of them, they had a beautiful boy who seemed very smart. If he could be old the slave market, they wou make a lot of money! They lad indeed found a treasure, but they were afraid that he was a lost child or a slave, and that his master would come soon and claim him. So, they hid him all the way to Egypt.
Yousuf in Egypt
Now, Ya'qoub was sorrowful over the toss of his son. The ten brothers were finally rid of the brother they had envied throughout the years. Yousuf was alone in the hands of strangers, and the merchants were excited about the money they would make. This was all part of Allah's plan.
The merchants took Yousuf to Egypt. There, he was sold for only a few dirhams. A high court official, who was called "Al-Azeez," bought him. He took Yousuf to his wife, Zuleikha, to be his mother. She would treat him as an honored member of the family. Al- Azeez told his wife that there could be some benefit in adopting Yousuf. he job of Al-Azeez was to handle Egypt's treasury. He taught Yousuf how to manage finances (money affairs) in Egypt. This again was part of Allah's plan. He wanted to prepare Yousuf for his mission. Al- Azeez was powerful, and this helped Yousuf learn about power.
During this time, Allah gave Yousuf the knowledge to understand events and visions.
Yousuf Goes to Prison
After several years, Allah willed for Yousuf to be sent to prison. Yousuf was accused of a crime that he did not commit. At the same time, two Egyptian men entered the prison with him. One was the king's servant and the other was his baker. When they met Yousuf, they admired him. They admired his character, morals, guidance, manners, and speech. Mostly, they appreciated his strong faith.
One night, the two men had dreams. The servant told Yousuf that he had a dream. He saw himself pressing grapes to make wine.
The baker saw himself carrying baskets of bread on his head, and the birds were eating the bread. They knew that Yousuf was honest and knowledgeable. They said, "We can see that you are a good man. Please tell us what our dreams mean."
Yousuf kindly told them that he would interpret their dreams, but he wanted to tell them about himself first.
Yousuf told them that his Egyptian family worshiped many gods. He told them that the only right way was to worship the One True God. He called them to the truth. Then Yousef told the servant that he would one day be making wine for the king. This was good news, but he said that the king would soon order the baker to be put to death. When die servant was leaving, Yousuf asked him a favor. He asked the servant to tell the king that he was innocent, so that he could be freed. However, when the servant was let out from jail, he forgot about Yousuf. Shaytan made him forget.
God wanted to teach Yousuf a lesson for depending on the servant without asking Him first. It is said that Jibreel came to Yousuf in prison and asked him, "Who saved you from your brothers?
He said, "Allah."
Jibreel asked, "And who saved you from the well?" He said, "Allah."
"And who saved you from slavery?"
He said, "Allah."
"And who protected you in the house of Al-Azeez?" He said, "Allah."
Jibreel then asked, "Then why do you depend on the king to save you from prison?" Jibreel was teaching Prophet Yousuf that he should always be patient, depend on Allah first, and trust His plan. Allah, for a wise reason, decided that Yousuf would stay in prison for a few more years. That was a real test and trial for Yousuf.
Questions
Describe the family of Prophet Ya'qoub.
Why were Yousuf's brothers so jealous?
Flow did Ya'qoub react to the false news of his beloved son's death?
What was the wisdom behind the fact that Al-Azeez adopted Yousuf?
What was the first thing that Yousuf told the men in the prison, and why do you think this is so?