1443H Week-23
Friday, 14 January 2022
QURAN
An-Nur | The Light | Verse 55-64
وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ مِنكُمْ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُمْ فِى ٱلْأَرْضِ كَمَا ٱسْتَخْلَفَ ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ وَلَيُمَكِّنَنَّ لَهُمْ دِينَهُمُ ٱلَّذِى ٱرْتَضَىٰ لَهُمْ وَلَيُبَدِّلَنَّهُم مِّنۢ بَعْدِ خَوْفِهِمْ أَمْنًا ۚ يَعْبُدُونَنِى لَا يُشْرِكُونَ بِى شَيْـًٔا ۚ وَمَن كَفَرَ بَعْدَ ذَٰلِكَ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ هُمُ ٱلْفَـٰسِقُونَ
তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যে, তিনি তাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিনিধিত্ব দান করবেনই, যেমন তিনি প্রতিনিধিত্ব দান করেছিলেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে এবং তিনি অবশ্যই তাদের জন্য সুদৃঢ় করবেন তাদের দীনকে যা তিনি তাদের জন্য মনোনীত করেছেন এবং তাদের ভয় ভীতির পরিবর্তে তাদেরকে অবশ্যই নিরাপত্তা দান করবেন; তারা আমার ইবাদাত করবে, আমার সাথে কোন শরীক করবেনা, অতঃপর যারা অকৃতজ্ঞ হবে তারাতো সত্যত্যাগী।
— Sheikh Mujibur Rahman
Allah has promised those who have believed among you and done righteous deeds that He will surely grant them succession [to authority] upon the earth just as He granted it to those before them and that He will surely establish for them [therein] their religion which He has preferred for them and that He will surely substitute for them, after their fear, security, [for] they worship Me, not associating anything with Me. But whoever disbelieves1 after that - then those are the defiantly disobedient.
— Saheeh International
وَأَقِيمُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتُوا۟ ٱلزَّكَوٰةَ وَأَطِيعُوا۟ ٱلرَّسُولَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
তোমরা সালাত কায়েম কর, যাকাত প্রদান কর এবং রাসূলের আনুগত্য কর, যাতে তোমরা অনুগ্রহ প্রাপ্ত হতে পার।
— Sheikh Mujibur Rahman
And establish prayer and give zakāh and obey the Messenger - that you may receive mercy.
— Saheeh International
لَا تَحْسَبَنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ مُعْجِزِينَ فِى ٱلْأَرْضِ ۚ وَمَأْوَىٰهُمُ ٱلنَّارُ ۖ وَلَبِئْسَ ٱلْمَصِيرُ
তুমি কাফিরদেরকে পৃথিবীতে প্রবল মনে করনা; তাদের আশ্রয়স্থল আগুন; কত নিকৃষ্ট এই পরিণাম!
— Sheikh Mujibur Rahman
Never think that the disbelievers are causing failure [to Allah] upon the earth. Their refuge will be the Fire - and how wretched the destination.
— Saheeh International
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ لِيَسْتَـْٔذِنكُمُ ٱلَّذِينَ مَلَكَتْ أَيْمَـٰنُكُمْ وَٱلَّذِينَ لَمْ يَبْلُغُوا۟ ٱلْحُلُمَ مِنكُمْ ثَلَـٰثَ مَرَّٰتٍ ۚ مِّن قَبْلِ صَلَوٰةِ ٱلْفَجْرِ وَحِينَ تَضَعُونَ ثِيَابَكُم مِّنَ ٱلظَّهِيرَةِ وَمِنۢ بَعْدِ صَلَوٰةِ ٱلْعِشَآءِ ۚ ثَلَـٰثُ عَوْرَٰتٍ لَّكُمْ ۚ لَيْسَ عَلَيْكُمْ وَلَا عَلَيْهِمْ جُنَاحٌۢ بَعْدَهُنَّ ۚ طَوَّٰفُونَ عَلَيْكُم بَعْضُكُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ ۚ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ ٱللَّهُ لَكُمُ ٱلْـَٔايَـٰتِ ۗ وَٱللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
হে মু’মিনগণ! তোমাদের মালিকানাধীন দাস-দাসীরা এবং তোমাদের মধ্যে যারা বয়ঃপ্রাপ্ত হয়নি তারা যেন তোমাদের কক্ষে প্রবেশ করতে তিন সময়ে অনুমতি গ্রহণ করে। ফাজরের সালাতের পূর্বে, দ্বিপ্রহরে যখন তোমরা তোমাদের পোশাক খুলে রাখ এবং ইশার সালাতের পর। এই তিন সময় তোমাদের দেহ খোলা রাখার সময়; এই তিন সময় ছাড়া অন্য সময়ে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করলে তোমাদের জন্য ও তাদের জন্য কোন দোষ নেই; তোমাদের এক জনকে অপর জনের নিকটতো যাতায়াত করতেই হয়। এভাবে আল্লাহ তোমাদের নিকট তাঁর নির্দেশ সুস্পষ্ট রূপে বিবৃত করেন; আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
— Sheikh Mujibur Rahman
O you who have believed, let those whom your right hands possess and those who have not [yet] reached puberty among you ask permission of you [before entering] at three times: before the dawn prayer and when you put aside your clothing [for rest] at noon and after the night prayer. [These are] three times of privacy1 for you. There is no blame upon you nor upon them beyond these [periods], for they continually circulate among you - some of you, among others. Thus does Allah make clear to you the verses [i.e., His ordinances]; and Allah is Knowing and Wise.
— Saheeh International
وَإِذَا بَلَغَ ٱلْأَطْفَـٰلُ مِنكُمُ ٱلْحُلُمَ فَلْيَسْتَـْٔذِنُوا۟ كَمَا ٱسْتَـْٔذَنَ ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ ۚ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ ٱللَّهُ لَكُمْ ءَايَـٰتِهِۦ ۗ وَٱللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
এবং তোমাদের সন্তান-সন্ততি বয়ঃপ্রাপ্ত হলে তারাও যেন অনুমতি প্রার্থনা করে তাদের বয়ঃজ্যেষ্ঠদের ন্যায়। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর নির্দেশ সুস্পষ্টভাবে বিবৃত করেন; আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
— Sheikh Mujibur Rahman
And when the children among you reach puberty, let them ask permission [at all times] as those before them have done. Thus does Allah make clear to you His verses; and Allah is Knowing and Wise.
— Saheeh International
وَٱلْقَوَٰعِدُ مِنَ ٱلنِّسَآءِ ٱلَّـٰتِى لَا يَرْجُونَ نِكَاحًا فَلَيْسَ عَلَيْهِنَّ جُنَاحٌ أَن يَضَعْنَ ثِيَابَهُنَّ غَيْرَ مُتَبَرِّجَـٰتٍۭ بِزِينَةٍ ۖ وَأَن يَسْتَعْفِفْنَ خَيْرٌ لَّهُنَّ ۗ وَٱللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
আর বৃদ্ধা নারী, যারা বিয়ের আশা রাখেনা, তাদের জন্য অপরাধ নেই যদি তারা তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে তাদের বহির্বাস খুলে রাখে; তবে এটা হতে বিরত থাকাই তাদের জন্য উত্তম। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
— Sheikh Mujibur Rahman
And women of post-menstrual age who have no desire for marriage - there is no blame upon them for putting aside their outer garments [but] not displaying adornment. But to modestly refrain [from that] is better for them. And Allah is Hearing and Knowing.
— Saheeh International
لَّيْسَ عَلَى ٱلْأَعْمَىٰ حَرَجٌ وَلَا عَلَى ٱلْأَعْرَجِ حَرَجٌ وَلَا عَلَى ٱلْمَرِيضِ حَرَجٌ وَلَا عَلَىٰٓ أَنفُسِكُمْ أَن تَأْكُلُوا۟ مِنۢ بُيُوتِكُمْ أَوْ بُيُوتِ ءَابَآئِكُمْ أَوْ بُيُوتِ أُمَّهَـٰتِكُمْ أَوْ بُيُوتِ إِخْوَٰنِكُمْ أَوْ بُيُوتِ أَخَوَٰتِكُمْ أَوْ بُيُوتِ أَعْمَـٰمِكُمْ أَوْ بُيُوتِ عَمَّـٰتِكُمْ أَوْ بُيُوتِ أَخْوَٰلِكُمْ أَوْ بُيُوتِ خَـٰلَـٰتِكُمْ أَوْ مَا مَلَكْتُم مَّفَاتِحَهُۥٓ أَوْ صَدِيقِكُمْ ۚ لَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَن تَأْكُلُوا۟ جَمِيعًا أَوْ أَشْتَاتًا ۚ فَإِذَا دَخَلْتُم بُيُوتًا فَسَلِّمُوا۟ عَلَىٰٓ أَنفُسِكُمْ تَحِيَّةً مِّنْ عِندِ ٱللَّهِ مُبَـٰرَكَةً طَيِّبَةً ۚ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ ٱللَّهُ لَكُمُ ٱلْـَٔايَـٰتِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ
অন্ধের জন্য দোষ নেই, খোঁড়ার জন্য দোষ নেই, আর দোষ নেই রোগীর জন্য এবং তোমাদের নিজেদের জন্যও দোষ নেই আহার করায় নিজেদের গৃহে অথবা তোমাদের পিতাদের গৃহে অথবা তোমাদের মাতাদের গৃহে অথবা তোমাদের ভাইদের গৃহে অথবা তোমাদের বোনদের গৃহে অথবা তোমাদের চাচাদের গৃহে অথবা তোমাদের ফুফুদের গৃহে অথবা তোমাদের মামাদের গৃহে অথবা তোমাদের খালাদের গৃহে অথবা সেই গৃহে যার চাবি রয়েছে তোমাদের কাছে অথবা তোমাদের প্রকৃত বন্ধুদের গৃহে। তোমরা একত্রে আহার কর অথবা পৃথকভাবে আহার কর তাতে তোমাদের জন্য কোনো অপরাধ নেই। তবে যখন তোমরা গৃহে প্রবেশ করবে তখন তোমরা তোমাদের স্বজনদের প্রতি সালাম করবে অভিবাদন স্বরূপ, যা আল্লাহর নিকট হতে কল্যাণময় ও পবিত্র। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর নির্দেশ বিশদভাবে বর্ণনা করেন যাতে তোমরা বুঝতে পার।
— Sheikh Mujibur Rahman
There is not upon the blind [any] constraint nor upon the lame constraint nor upon the ill constraint nor upon yourselves when you eat from your [own] houses or the houses of your fathers or the houses of your mothers or the houses of your brothers or the houses of your sisters or the houses of your father's brothers or the houses of your father's sisters or the houses of your mother's brothers or the houses of your mother's sisters or [from houses] whose keys you possess or [from the house] of your friend. There is no blame upon you whether you eat together or separately. But when you enter houses, give greetings of peace1 upon each other - a greeting from Allah, blessed and good. Thus does Allah make clear to you the verses [of ordinance] that you may understand.
— Saheeh International
إِنَّمَا ٱلْمُؤْمِنُونَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَإِذَا كَانُوا۟ مَعَهُۥ عَلَىٰٓ أَمْرٍ جَامِعٍ لَّمْ يَذْهَبُوا۟ حَتَّىٰ يَسْتَـْٔذِنُوهُ ۚ إِنَّ ٱلَّذِينَ يَسْتَـْٔذِنُونَكَ أُو۟لَـٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ ۚ فَإِذَا ٱسْتَـْٔذَنُوكَ لِبَعْضِ شَأْنِهِمْ فَأْذَن لِّمَن شِئْتَ مِنْهُمْ وَٱسْتَغْفِرْ لَهُمُ ٱللَّهَ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
তারাই মু’মিন যারা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের উপর ঈমান আনে এবং রাসূলের সঙ্গে সমষ্টিগত ব্যাপারে একত্র হলে তার অনুমতি ব্যতীত তারা সরে পড়েনা; যারা অনুমতি প্রার্থনা করে তারাই আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলে বিশ্বাসী; অতএব তারা তাদের কোন কাজে বাইরে যাবার জন্য তোমার অনুমতি চাইলে তাদের মধ্যে যাদেরকে ইচ্ছা তুমি অনুমতি দিবে এবং তাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবে; আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
— Sheikh Mujibur Rahman
The believers are only those who believe in Allah and His Messenger and, when they are [meeting] with him for a matter of common interest, do not depart until they have asked his permission. Indeed, those who ask your permission, [O Muḥammad] - those are the ones who believe in Allah and His Messenger. So when they ask your permission due to something of their affairs, then give permission to whom you will among them and ask forgiveness for them of Allah. Indeed, Allah is Forgiving and Merciful.
— Saheeh International
لَّا تَجْعَلُوا۟ دُعَآءَ ٱلرَّسُولِ بَيْنَكُمْ كَدُعَآءِ بَعْضِكُم بَعْضًا ۚ قَدْ يَعْلَمُ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ يَتَسَلَّلُونَ مِنكُمْ لِوَاذًا ۚ فَلْيَحْذَرِ ٱلَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِۦٓ أَن تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
রাসূলের আহবানকে তোমরা একে অপরের প্রতি আহবানের মত গণ্য করনা; তোমাদের মধ্যে যারা চুপি চুপি সরে পড়ে আল্লাহ তাদেরকে জানেন। সুতরাং যারা তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তারা সতর্ক হোক যে, বিপর্যয় তাদের উপর আপতিত হবে অথবা আপতিত হবে তাদের উপর কঠিন শাস্তি।
— Sheikh Mujibur Rahman
Do not make [your] calling of the Messenger among yourselves as the call of one of you to another. Already Allah knows those of you who slip away, concealed by others. So let those beware who dissent from his [i.e., the Prophet's] order,1 lest fitnah2 strike them or a painful punishment.
— Saheeh International
أَلَآ إِنَّ لِلَّهِ مَا فِى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ ۖ قَدْ يَعْلَمُ مَآ أَنتُمْ عَلَيْهِ وَيَوْمَ يُرْجَعُونَ إِلَيْهِ فَيُنَبِّئُهُم بِمَا عَمِلُوا۟ ۗ وَٱللَّهُ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيمٌۢ
জেনে রেখ, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু রয়েছে তা আল্লাহরই, তোমরা যাতে ব্যাপৃত তিনি তা জানেন; যেদিন তারা তাঁর নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে সেদিন তিনি তাদেরকে জানিয়ে দিবেন তারা যা করত; আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বজ্ঞ।
— Sheikh Mujibur Rahman
Unquestionably, to Allah belongs whatever is in the heavens and earth. Already He knows that upon which you [stand]1 and [knows] the Day2 when they will be returned to Him and He will inform them of what they have done. And Allah is Knowing of all things.
— Saheeh International
Tafsir Ibn Kathir
Allah's Promise to the Believers that He would grant them Succession
This is a promise from Allah to His Messenger that He would cause his Ummah to become successors on earth, i.e., they would become the leaders and rulers of mankind, through whom He would reform the world and to whom people would submit, so that they would have in exchange a safe security after their fear. This is what Allah did indeed do, may He be glorified and exalted, and to Him be praise and blessings. For He did not cause His Messenger to die until He had given him victory over Makkah, Khaybar, Bahrayn, all of the Arabian Peninsula and Yemen; and he took Jizyah from the Zoroastrians of Hajar and from some of the border lands of Syria; and he exchanged gifts with Heraclius the ruler of Byzantium, the ruler of Egypt and Alexandria, the Muqawqis, the kings of Oman and An-Najashi of Abyssinia, who had become king after Ashamah, may Allah have mercy on him and grant him honor. Then when the Messenger died, his successor (Khalifah) Abu Bakr As-Siddiq took over the reins of power and united the Ummah, preventing its disintegration. He took control of the entire Arabian Peninsula, and he sent the Islamic armies to the land of Persia, under the leadership of Khalid bin Al-Walid, may Allah be pleased with him, who conquered a part of it and killed some of its people. He sent another army under the leadership of Abu `Ubaydah, may Allah be pleased with him, and the other commanders who came after him in the lands of Syria. He sent a third army under the leadership of `Amr bin Al-`As, may Allah be pleased with him, to Egypt. Allah enabled the army sent to Syria to conquer Busra and Damascus and their provinces the land of Hawran and its environs. Then Allah chose for Abu Bakr to honor him with Him and he died. The people of Islam were blessed that As-Siddiq was inspired to appoint `Umar Al-Faruq as his successor, so he took the reins of power after him and did a perfect job. After the Prophets, the world never saw anyone like `Umar in excellence of conduct and perfect justice. During his time, the rest of Syria and Egypt, and most of Persia, was conquered. Kisra was defeated and utterly humiliated, and he retreated to the furthest point of his kingdom. Mighty Caesar was brought low, his rule over Syria was overthrown, and he retreated to Constantinople. Their wealth was spent for the sake of Allah, as the Messenger of Allah had foretold and promised. May Allah's perfect peace and purest blessing be upon him. During the rule of `Uthman, the Islamic domains spread to the furthest points of the earth, east and west. The lands of the west were conquered as far as Cyprus and Andalusia, Kairouan and Sebta which adjoins the Atlantic Ocean. Towards the east, the conquests extended as far as China. Kisra was killed, his kingdom was utterly destroyed and the cities of Iraq, Khurasan and Al-Ahwaz were conquered. The Muslims killed a great number of Turks and Allah humiliated their great king Khaqan. Taxes were collected from the east and the west, and brought to the Commander of the faithful `Uthman bin `Affan, may Allah be pleased with him. This was a blessing brought by his recitation and study of the Qur'an, and his bringing the Ummah together to preserve and protect it. In the Sahih it was recorded that the Messenger of Allah said:
«إِنَّ اللهَ زَوَى لِيَ الْأَرْضَ فَرَأَيْتُ مَشَارِقَهَا وَمَغَارِبَهَا، وَسَيَبْلُغُ مُلْكُ أُمَّتِي مَا زُوِيَ لِي مِنْهَا»
(Allah showed me the earth and I looked at the east and the west. The dominion of my Ummah will reach everywhere I was shown.) And now we are enjoying that which Allah and His Messenger promised us, for Allah and His Messenger spoke the truth. We ask Allah to give us faith in Him and His Messenger, and to help us to give thanks to Him in a manner that will earn us His pleasure.
وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ ءامَنُواْ مِنْكُمْ وَعَمِلُواْ الصَّـلِحَاتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُمْ فِى الاْرْضِ كَمَا اسْتَخْلَفَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ وَلَيُمَكّنَنَّ لَهُمْ دِينَهُمُ الَّذِى ارْتَضَى لَهُمْ وَلَيُبَدّلَنَّهُمْ مّن بَعْدِ خَوْفِهِمْ أَمْناً
(Allah has promised those among you who believe and do righteous good deeds, that He will certainly grant them succession in the land, as He granted it to those before them, and that He will grant them the authority to practise their religion which He has chosen for them. And He will surely, give them in exchange a safe security after their fear...) Ar-Rabi` bin Anas narrated that Abu Al-`Aliyah said, "The Prophet and his Companions were in Makkah for nearly ten years, calling people in secret to worship Allah Alone with no partner or associate. They were in a state of fear and were not instructed to fight until after they were commanded to migrate to Al-Madinah. When they came to Al-Madinah, then Allah instructed them to fight. In Al-Madinah they were afraid and they carried their weapons morning and evening. This is how they remained for as long as Allah willed..." Then Allah revealed this Ayah. He caused His Prophet to prevail over the Arabian Peninsula, and then they felt safe and put down their weapons. Then Allah took His Prophet and they remained safe throughout the time of Abu Bakr, `Umar and `Uthman, until what happened happened, and fear again prevailed over them, so they instituted a police force and guards. They changed, so their situation changed. One of the Salaf said, "The Khilafah of Abu Bakr and `Umar was true and adhered to the Book of Allah. Then he recited this Ayah." Al-Bara' bin `Azib said, "This Ayah was revealed when we were in a state of extreme fear." This Ayah is like the Ayah:
وَاذْكُرُواْ إِذْ أَنتُمْ قَلِيلٌ مُّسْتَضْعَفُونَ فِى الاٌّرْضِ
(And remember when you were few and were reckoned weak in the land) Until His statement:
لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
(so that you might be grateful) 8:26.
كَمَا اسْتَخْلَفَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ
(as He granted succession to those before them,) This is like the Ayah where Allah tells us that Musa said to his people:
عَسَى رَبُّكُمْ أَن يُهْلِكَ عَدُوَّكُمْ وَيَسْتَخْلِفَكُمْ فِى الاٌّرْضِ
("It may be that your Lord will destroy your enemy and make you successors on the earth...") 7:129 And Allah says:
وَنُرِيدُ أَن نَّمُنَّ عَلَى الَّذِينَ اسْتُضْعِفُواْ فِى الاٌّرْضِ
(And We wished to do a favor to those who were weak in the land,) until the two Ayat there after. 28: 5-6
وَلَيُمَكِّنَنَّ لَهُمْ دِينَهُمُ الَّذِى ارْتَضَى لَهُمْ
(and that He will grant them the authority to practise their religion which He has chosen for them...) vAs the Messenger of Allah said to `Adiyy bin Hatim when he came to him in a delegation:
«أَتَعْرِفُ الْحِيرَةَ؟»
(Do you know Al-Hirah) He said, "I do not know it, but I have heard of it." The Messenger of Allah said:
«فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَيُتِمَّنَّ اللهُ هَذَا الْأَمْرَ حَتَّى تَخْرُجَ الظَّعِينَةُ مِنَ الْحِيرَةِ حَتَّى تَطُوفَ بِالْبَيْتِ فِي غَيْرِ جِوَارِ أَحَدٍ، وَلَتَفْتَحُنَّ كُنُوزَ كِسْرَى بْنِ هُرْمُزَ»
(By the One in Whose Hand is my soul, Allah will make this matter i.e., Islam prevail until a woman riding a camel will come from Al-Hirah and perform Tawaf around the House without needing the protection of anybody, and the treasures of Kisra the son of Hurmuz will be opened.) He said, "Kisra the son of Hurmuz" He said,
«نَعَمْ، كِسْرَى بْنُ هُرْمُزَ، وَلَيُبْذَلَنَّ الْمَالُ حَتَّى لَا يَقْبَلَهُ أَحَدٌ»
(Yes, Kisra the son of Hurmuz, and wealth will be given until there will be no one who will accept it.) `Adiyy bin Hatim said: "Now it is happening that a woman riding a camel comes from Al-Hirah and performs Tawaf around the House without needing the protection of anybody, and I was among those who opened the treasure of Kisra the son of Hurmuz. By the One in Whose Hand is my soul, the third thing will also come to pass, because the Messenger of Allah said it."
يَعْبُدُونَنِى لاَ يُشْرِكُونَ بِى شَيْئاً
(if they worship Me and do not associate anything with Me.) Imam Ahmad recorded from Anas that Mu`adh bin Jabal told him, "While I was riding behind the Prophet on a donkey, with nothing between me and him but the back of his saddle, he said,
«يَا مُعَاذُ بْنَ جَبَلٍ»
(O Mu`adh bin Jabal.) I said, `Here I am at your service, O Messenger of Allah.' Then a while passed, then he said,
«يَا مُعَاذُ بْنَ جَبَلٍ»
(O Mu`adh bin Jabal.) I said, `Here I am at your service, O Messenger of Allah.' Then a while passed, then he said,
«يَا مُعَاذُ بْنَ جَبَلٍ»
(O Mu`adh bin Jabal.) I said, `Here I am at your service, O Messenger of Allah.' He said,
«هَلْ تَدْرِي مَا حَقُّ اللهِ عَلَى الْعِبَادِ؟»
(Do you know the rights that Allah has over His servants) I said, `Allah and His Messenger know best.' He said,
«فَإِنَّ حَقَّ اللهِ عَلَى الْعِبَادِ أَنْ يَعْبُدُوهُ وَلَا يُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا»
(The rights that Allah has over His servants are that they should worship Him and not associate anything with Him.) Then a while passed, then he said,
«يَا مُعَاذُ بْنَ جَبَلٍ»
(O Mu`adh bin Jabal.) I said, `Here I am at your service, O Messenger of Allah.' He said,
«فَهَلْ تَدْرِي مَا حَقُّ الْعِبَادِ عَلَى اللهِ إِذَا فَعَلُوا ذَلِكَ؟»
(Do you know the rights that people have over Allah if they do that) I said, `Allah and His Messenger know best.' He said,
«فَإِنَّ حَقَّ الْعِبَادِ عَلَى اللهِ أَنْ لَا يُعَذِّبَهُمْ»
(The rights that people have over Allah is that He will not punish them.)" This was also recorded in the Two Sahihs.
وَمَن كَفَرَ بَعْدَ ذلِكَ فَأُوْلَـئِكَ هُمُ الْفَـسِقُونَ
(But whoever disbelieved after this, they are the rebellious.) means, `whoever then stops obeying Me after that, has stopped obeying the command of his Lord, and that is a great sin.' The Companions -- may Allah be pleased with them -- were the most committed of people after the Prophet to the commands of Allah and the most obedient to Allah. Their victories were in accordance with their level of commitment. They caused the Word of Allah to prevail in the east and the west, and Allah supported them so much that they governed all the people and all the lands. When the people subsequently fell short in their commitment to some of the commandments, their strength and victory fell short accordingly, but it is confirmed through more than one route in the Two Sahihs that the Messenger of Allah said:
«لَا تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي ظَاهِرِينَ عَلَى الْحَقِّ، لَا يَضُرُّهُمْ مَنْ خَذَلَهُمْ وَلَا مَنْ خَالَفَهُمْ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ»
(There will remain a group of my Ummah adhering to the truth, and those who forsake them or oppose them will not harm them until the Day of Resurrection. ) According to another report:
«حَتَّى يَأْتِيَ أَمْرُ اللهِ وَهُمْ كَذَلِكَ»
(.. until the command of Allah comes to pass and they are like that.) According to another report:
«حَتَّى يُقَاتِلُوا الدَّجَّالَ»
(... until they fight the Dajjal.) According to another report:
«حَتَّى يَنْزِلَ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ وَهُمْ ظَاهِرُونَ»
(... until `Isa bin Maryam comes down and they are prevailing.) All of these reports are Sahih, and there is no contradiction between them.
The Command to pray, give the Zakah and obey the Messenger ; the inability of the Disbelievers to escape, and the ultimate Destiny
Allah commands His believing servants to establish prayer, which means worshipping Allah Alone with no partner or associate; to pay the Zakah, which is an act of kindness towards His poor and weak creatures; and by doing so to obey the Messenger of Allah , i.e., to do as he commands them and to avoid what he forbids them, so that Allah will have mercy on them for that. No doubt, whoever does that, Allah will have mercy on him, as Allah says in another Ayah:
أُوْلَـئِكَ سَيَرْحَمُهُمُ اللَّهُ
(Allah will have His mercy on them) 9:71
لاَ تَحْسَبَنَّ
(Consider not) means, `do not think, O Muhammad,' that:
الَّذِينَ كَفَرُواْ
(the disbelievers) meaning, those who opposed and denied you,
مُعْجِزِينَ فِى الاٌّرْضِ
(can escape in the land.) means, that they can flee from Allah. No, Allah is able to deal with them and He will punish them most severely for that. Allah says:
وَمَأْوَاهُمُ
(Their abode) meaning, in the Hereafter,
النَّارُ وَلَبِئْسَ الْمَصِيرُ
(shall be the Fire -- and worst indeed is that destination.) means, how terrible the consequences will be for the disbelievers, how evil a place to stay in and how awful a place to rest!
The Times when Servants and Young Children should seek Permission to enter
These Ayat include a discussion of how people who are closely related should seek permission to enter upon one another. What was mentioned earlier in the Surah had to do with how unrelated people should seek permission to enter upon one another. Allah commanded the believers to ensure that their servants and their children who have not yet reached puberty should seek permission at three times: the first is before the Fajr prayer, because people are asleep in their beds at that time.
وَحِينَ تَضَعُونَ ثِيَـبَكُمْ مِّنَ الظَّهِيرَةِ
(and while you put off your clothes during the afternoon,) means, at the time of rest, because a man may be in a state of undress with his wife at that time.
وَمِن بَعْدِ صَلَوةِ الْعِشَآءِ
(and after the `Isha' prayer.) because this is the time for sleep. Servants and children are commanded not to enter upon household members at these times, because it is feared that a man may be in an intimate situation with his wife and so on. Allah says:
ثَلاَثُ عَوْرَاتٍ لَّكُمْ لَيْسَ عَلَيْكُمْ وَلاَ عَلَيْهِمْ جُنَاحٌ بَعْدَهُنَّ
((These) three (times) are of privacy for you; other than these times there is no sin on you or on them) If they enter at a time other than these, there is no sin on you if you let them enter, and no sin on them if they see something at a time other than these times. They have been given permission to enter suddenly, because they are those who go around in the house, i.e., to serve you etc., and as such they may be forgiven for things that others will not be forgiven. Although this Ayah is quite clear and has not been abrogated, people hardly follow it, and `Abdullah bin `Abbas denounced the people for that. Abu Dawud recorded that Ibn `Abbas said: "Most of the people do not follow it, the Ayah that speaks about asking permission, but I tell my servant woman to seek permission to enter." Abu Dawud said: `Ata' also narrated that Ibn `Abbas commanded this. Ath-Thawri narrated that Musa bin Abi `A'ishah said, "I asked Ash-Sha`bi about the Ayah:
لِيَسْتَأْذِنكُمُ الَّذِينَ مَلَكَتْ أَيْمَـنُكُمْ
(Let your slaves and slave-girls ask your permission.) He said, `It has not been abrogated.' I said: `But the people do not do that.' He said, `May Allah help them."' Then Allah says:
وَإِذَا بَلَغَ الاٌّطْفَالُ مِنكُمُ الْحُلُمَ فَلْيَسْتَأْذِنُواْ كَمَا اسْتَأْذَنَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ
(And when the children among you come to puberty, then let them (also) ask for permission, as those senior to them (in age)) meaning: when the children who used to seek permission at the three times of privacy reach puberty, then they have to seek permission at all times, i.e., with regard to those who are non-relatives, and at times when a man may be in a state of intimacy with his wife, even if it is not one of the three times stated above.
There is no Sin on Elderly Women if They do not wear a Cloak
وَالْقَوَاعِدُ مِنَ النِّسَآءِ
(And the Qawa`id among women.) Sa`id bin Jubayr, Muqatil bin Hayyan, Ad-Dahhak and Qatadah said that these are the women who no longer think that they can bear children,
الَّلَـتِى لاَ يَرْجُونَ نِكَاحاً
(who do not hope for marriage,) meaning, they no longer have any desire for marriage,
فَلَيْسَ عَلَيْهِنَّ جُنَاحٌ أَن يَضَعْنَ ثِيَابَهُنَّ غَيْرَ مُتَبَرِّجَـتِ بِزِينَةٍ
(it is no sin on them if they discard their (outer) clothing in such a way as not to show their adornment.) meaning, they do not have to cover themselves in the same way that other women have to. Abu Dawud recorded that Ibn `Abbas said that the Ayah:
وَقُل لِّلْمُؤْمِنَـتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَـرِهِنَّ
(And tell the believing women to lower their gaze) 24:31 was abrogated and an exception was made in the case of:
وَالْقَوَاعِدُ مِنَ النِّسَآءِ الَّلَـتِى لاَ يَرْجُونَ نِكَاحاً
(the past childbearing among women who do not hope for marriage, .)
فَلَيْسَ عَلَيْهِنَّ جُنَاحٌ أَن يَضَعْنَ ثِيَابَهُنَّ
(it is no sin on them if they discard their (outer) clothing) Ibn Mas`ud said about (outer) clothing,, "The Jilbab or Rida'." A similar view was also narrated from Ibn `Abbas, Ibn `Umar, Mujahid, Sa`id bin Jubayr, Abu Ash-Sha`tha', Ibrahim An-Nakha`i, Al-Hasan, Qatadah, Az-Zuhri, Al-`Awza`i and others.
غَيْرَ مُتَبَرِّجَـتِ بِزِينَةٍ
(in such a way as not to show their adornment.) Sa`id bin Jubayr said, "They should not make a wanton display of themselves by removing their outer garment so that their adornment may be seen."
وَأَن يَسْتَعْفِفْنَ خَيْرٌ لَّهُنَّ
(But to refrain is better for them.) means, not removing their outer garment, even though that is permissible for them, is better for them.
وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
(And Allah is All-Hearer, All-Knower.)
Eating from One's Relatives' Houses
What is referred to here is the fact that they used to feel too embarrassed to eat with the blind, because they could not see the food or where the best morsels were, so others might take the best pieces before they could. They felt too embarrassed to eat with the lame because they could not sit comfortably, and their companions might take advantage of them, and they felt embarrassed to eat with the sick because they might not eat as much as others. So they were afraid to eat with them lest they were unfair to them in some way. Then Allah revealed this Ayah, granting them a dispensation in this matter. This was the view of Sa`id bin Jubayr and Miqsam. Ad-Dahhak said: "Before the Prophet's Mission, they used to feel too embarrassed and too proud to eat with these people, lest they might have to help them. So Allah revealed this Ayah."
لَّيْسَ عَلَى الاٌّعْمَى حَرَجٌ
(nor any restriction on the lame,) `Abdur-Razzaq recorded that Mujahid said: "A man would take a blind, lame or sick person to the house of his brother or sister or aunt, and those disabled people would feel ashamed of that and say, `they are taking us to other people's houses.' So this Ayah was revealed granting permission for that." As-Suddi said: "A man would enter the house of his father or brother or son, and the lady of the house would bring him some food, but he would refrain from eating because the master of the house was not there, so Allah revealed:
لَّيْسَ عَلَى الاٌّعْمَى حَرَجٌ
(There is no restriction on the blind. ..)
وَلاَ عَلَى أَنفُسِكُمْ أَن تَأْكُلُواْ مِن بُيُوتِكُمْ
(nor on yourselves, if you eat from your houses,) This is stated here although it is obvious, so that from this starting point the houses of others may be mentioned, and to make it clear that the ruling applies equally to what comes after. Sons' houses are included in this even though they are not mentioned by name, and this is used as evidence by those who regard the son's wealth as being like the father's wealth. In the Musnad and the Sunan, it is reported through several routes that the Messenger of Allah said:
«أَنْتَ وَمَالُكَ لِأَبِيكَ»
(You and your wealth belong to your father.)
أَوْ بُيُوتِ ءَابَآئِكُمْ أَوْ بُيُوتِ أُمَّهَـتِكُمْ
(or the houses of your fathers, or the houses of your mothers,) until His statement;
أَوْ مَا مَلَكْتُم مَّفَاتِحهُ
(or (from that) whereof you hold keys,) This is obvious, and this is used as evidence by those who think that it is obligatory for relatives to spend on one another.
أَوْ مَا مَلَكْتُم مَّفَاتِحهُ
(or (from that) whereof you hold keys,) Sa`id bin Jubayr and As-Suddi said, "This refers to a people's servants, whether a slave or otherwise. There is nothing wrong with them eating from the food that is stored with them, within reason." Az-Zuhri narrated from `Urwah that `A'isha, may Allah be pleased with her, said, "The Muslims used to go out on military campaigns with the Messenger of Allah and they would give their keys to people they trusted and say, `We permit you to eat whatever you need.' But they would say, `It is not permissible for us to eat, they have given us permission reluctantly and we are only trustees.' Then Allah revealed:
أَوْ مَا مَلَكْتُم مَّفَاتِحهُ
(or (from that) whereof you hold keys)."
أَوْ صَدِيقِكُمْ
(or (from the house) of a friend.) means, there is no sin on you if you eat from their houses, so long as you know that this does not upset them and they do not dislike it.
لَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَن تَأْكُلُواْ جَمِيعاً أَوْ أَشْتَاتاً
(No sin on you whether you eat together or apart.) `Ali bin Abi Talhah reported from Ibn `Abbas concerning this Ayah, "When Allah revealed the Ayah:
يَـأَيُّهَا الَّذِينَ ءَامَنُواْ لاَ تَأْكُلُواْ أَمْوَلَكُمْ بَيْنَكُمْ بِالْبَـطِلِ
(O you who believe! Eat not up your property among yourselves unjustly) 4: 29, the Muslims said, `Allah has forbidden us to eat up our property among ourselves unjustly, and food is the best of property, so it is not permissible for anyone among us to eat at the house of anyone else.' So the people stopped doing that. Then Allah revealed:
لَّيْسَ عَلَى الاٌّعْمَى حَرَجٌ
(There is no restriction on the blind,) until His statement;
أَوْ صَدِيقِكُمْ
(or (from the house) of a friend.) A man would also feel embarrassed and would refrain from eating alone until someone else came along, but Allah made the matter easier for them and said:
لَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَن تَأْكُلُواْ جَمِيعاً أَوْ أَشْتَاتاً
(No sin on you whether you eat together or apart.)" Qatadah said, "This was a clan of Banu Kinanah who during the Jahiliyyah thought that it was a source of shame for one of them to eat alone, to such an extent that a man might keep on driving his laden camel even though he was hungry, until he could find someone to eat and drink with him. Then Allah revealed:
لَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَن تَأْكُلُواْ جَمِيعاً أَوْ أَشْتَاتاً
(No sin on you whether you eat together or apart.) So this was a dispensation from Allah, allowing people to eat either alone or with others, even though eating with others is more blessed and is better. Imam Ahmad recorded from Wahshi bin Harb from his father from his grandfather that a man said to the Prophet , "We eat but we do not feel satisfied." He said:
«لَعَلَّكُمْ تَأْكُلُونَ مُتَفَرِّقِينَ، اجْتَمِعُوا عَلَى طَعَامِكُمْ، وَاذْكُرُوا اسْمَ اللهِ، يُبَارَكْ لَكُمْ فِيهِ»
(Perhaps you are eating separately. Eat together and mention the Name of Allah, and He will bless the food for you.) It was also recorded by Abu Dawud and Ibn Majah. Ibn Majah also recorded that Salim reported from his father from `Umar, may Allah be pleased with him, that the Messenger of Allah said:
«كُلُوا جَمِيعًا، وَلَا تَفَرَّقُوا، فَإِنَّ الْبَرَكَةَ مَعَ الْجَمَاعَةِ»
(Eat together and not separately, for the blessing is in being together.)
فَإِذَا دَخَلْتُمْ بُيُوتاً فَسَلِّمُواْ عَلَى أَنفُسِكُمْ
(But when you enter the houses, greet one another) Sa`id bin Jubayr, Al-Hasan Al-Basri, Qatadah and Az-Zuhri said, "This means greet one another with Salam." Ibn Jurayj said: Abu Az-Zubayr said, "I heard Jabir bin `Abdullah say, `When you enter upon your family, greet them with a greeting from Allah, blessed and good.' He said, `I do not think it is anything but obligatory."' Ibn Jurayj said: "And Ziyad said that Ibn Tawus used to say: `When any one of you enters his house, let him say Salam."' Mujahid said: "And when you enter the Masjid, say: `Peace be upon the Messenger of Allah'; when you enter upon your families, greet them with Salam; and when you enter a house in which there is nobody, say: `As-Salamu `Alayna wa `Ala `Ibad-Allah-is-Salihin (peace be upon us and upon the righteous servants of Allah).' This is what one is commanded to do, and it has been narrated to us that the angels will return his greeting."
كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمُ الاٌّيَـتِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ
(Thus Allah makes clear the Ayat to you that you may understand.) When Allah mentioned what wise rulings and reasonable, well-constructed laws are contained in this Surah, He points out to His servants that He explains the Ayat to them clearly so that they may ponder them and understand their meanings.
Asking Permission to leave when They are doing something together
This is another matter of etiquette to which Allah has guided His believing servants. Just as He commanded them to seek permission when entering, He also commanded them to seek permission when leaving, especially when they are doing something together with the Messenger , such as the Friday, `Id, or congregational prayers, or a meeting for the purpose of consultation and so on. Allah commanded them not to leave him in these situations until they had asked his permission. If they did this, then they were of the true believers. Then Allah commanded His Messenger to give permission when someone asked for it, if he wanted to. He said:
فَأْذَن لِّمَن شِئْتَ مِنْهُمْ وَاسْتَغْفِرْ لَهُمُ اللَّهَ
(give permission to whom you will of them, and ask Allah for their forgiveness.)Abu Dawud reported that Abu Hurayrah said, "The Messenger of Allah said:
«إِذَا انْتَهَى أَحَدُكُمْ إِلَى الْمَجْلِسِ فَلْيُسَلِّمْ، فَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَقُومَ فَلْيُسَلِّمْ، فَلَيْسَتِ الْأُولَى بِأَحَقَّ مِنَ الْآخِرَةِ»
(When any of you joins a gathering, let him say Salam, and when he wants to leave, let him say Salam. The former is not more important than the latter.) This was also recorded by At-Tirmidhi and An-Nasa'i; At-Tirmidhi said: "It is a Hasan Hadith."
The Etiquette of addressing the Prophet
Ad-Dahhak said, reporting from Ibn `Abbas: "They used to say, `O Muhammad,' or `O Abu Al-Qasim,' but Allah forbade them to do that, as a sign of respect towards His Prophet , and told them to say, `O Prophet of Allah,' `O Messenger of Allah."' This was also the view of Mujahid and Sa`id bin Jubayr. Qatadah said: "Allah commanded that His Prophet should be treated with respect and honor, and that he should be a leader." Muqatil said concerning the Ayah:
لاَّ تَجْعَلُواْ دُعَآءَ الرَّسُولِ بَيْنَكُمْ كَدُعَآءِ بَعْضِكُمْ بَعْضاً
(Make not the calling of the Messenger among you as your calling one of another.) "When you address him, do not say, `O Muhammad,' or `O son of `Abdullah'; rather honor him and say, `O Prophet of Allah,' or, `O Messenger of Allah.'
لاَّ تَجْعَلُواْ دُعَآءَ الرَّسُولِ بَيْنَكُمْ كَدُعَآءِ بَعْضِكُمْ بَعْضاً
(Make not the calling of the Messenger among you as your calling one of another.) A second view concerning the meaning of the Ayah is that it means `do not think that if he prays against you it is like when anyone else prays against you, because his prayers will be answered; so beware lest he prays against you and you will be doomed.' Ibn Abi Hatim recorded this from Ibn `Abbas, Al-Hasan Al-Basri and `Atiyyah Al-`Awfi. And Allah knows best.
قَدْ يَعْلَمُ اللَّهُ الَّذِينَ يَتَسَلَّلُونَ مِنكُمْ لِوَاذاً
(Allah knows those of you who slip away under shelter.) Muqatil bin Hayyan said, "This refers to the hypocrites who used to find it too difficult to listen to the Khutbah on Fridays, so they would hide behind some of the Companions of Muhammad and sneak out of the Masjid. It was not proper for a man to leave on Fridays once the Khutbah began, unless he had permission from the Prophet . If one of them wanted to leave, he would make a gesture to the Prophet with his finger, and the Prophet would give permission without the man speaking. This is because if the Prophet was giving the Khutbah and a man spoke, it would invalidate his Friday prayer." As-Suddi said, "If they were with him for a congregational prayer, they would hide behind one another so that he could not see them."
The Prohibition of going against the Messenger's Commandment
فَلْيَحْذَرِ الَّذِينَ يُخَـلِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ
(And let those beware who oppose the Messenger's commandment) This means going against the commandment of the Prophet , which is his way, methodology and Sunnah. All words and deeds will be measured against his words and deeds; those that are in accordance with his words and deeds will be accepted, and whatever does not match up will be rejected, no matter who the person is who said and did them. It was recorded in the Two Sahihs and elsewhere that the Messenger of Allah said:
«مَنْ عَمِلَ عَمَلًا لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ»
(Whoever does a deed that is not in accordance with this matter of ours will have it rejected.) meaning, let those beware who go against the Shari`ah of the Messenger , in secret and in the open,
أَن تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ
(lest some Fitnah should befall them), i.e., lest some disbelief or hypocrisy or innovation enter their hearts.
أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
(or a painful torment be inflicted on them.) means in this world afflicting them with capital punishment, or by law of prescribed punishment, or by confinement in prison, or so on. Imam Ahmad recorded that Abu Hurayrah said, "The Messenger of Allah said:
«مَثَلِي وَمَثَلُكُمْ كَمَثَلِ رَجُلٍ اسْتَوْقَدَ نَارًا فَلَمَّا أَضَاءَتْ مَا حَوْلَهَا جَعَلَ الْفَرَاشُ وَهَذِهِ الدَّوَابُّ اللَّائِي يَقَعْنَ فِي النَّارِ يَقَعْنَ فِيهَا، وَجَعَلَ يَحْجُزُهُنَّ وَيَغْلِبْنَهُ فَيَقْتَحِمْنَ فِيهَا قَالَ: فَذَلِكَ مَثَلِي وَمَثَلُكُمْ، أَنَا آخِذٌ بِحُجَزِكُمْ عَنِ النَّارِ هَلُمَّ عَنِ النَّارِ، فَتَغْلِبُونِي وَتَقْتَحِمُونَ فِيهَا»
(The parable of me and you is as the example of a man who kindled a fire and when it illuminated all around him, moths and other creatures started falling into the fire, and he was trying to stop them but they overwhelmed him and still kept falling in. This is the parable of me and you. I am trying to restrain you and keep you away from the fire, but you overwhelm me and fall in.) This was also narrated by Al-Bukhari and Muslim.
Allah knows your Condition
Allah tells us that He is the Sovereign of the heavens and the earth, and He knows the seen and the unseen. He knows what His servants do in secret and in the open. So He says:
قَدْ يَعْلَمُ مَآ أَنتُمْ عَلَيْهِ
(Indeed, He knows your condition) He knows and it is visible to Him, and not one iota is hidden from him. This is like the Ayah:
وَتَوكَّلْ عَلَى الْعَزِيزِ الرَّحِيمِ
(And put your trust in the All-Mighty, the Most Merciful,) until His saying;
إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
(Verily, He, only He, is the All-Hearer, the All-Knower) 26:217-220.
وَمَا تَكُونُ فِى شَأْنٍ وَمَا تَتْلُواْ مِنْهُ مِن قُرْءَانٍ وَلاَ تَعْمَلُونَ مِنْ عَمَلٍ إِلاَّ كُنَّا عَلَيْكُمْ شُهُودًا إِذْ تُفِيضُونَ فِيهِ وَمَا يَعْزُبُ عَن رَّبِّكَ مِن مِّثْقَالِ ذَرَّةٍ فِي الاٌّرْضِ وَلاَ فِى السَّمَآءِ وَلاَ أَصْغَرَ مِن ذَلِكَ وَلا أَكْبَرَ إِلاَّ فِى كِتَابٍ مُّبِينٍ
(Neither you do any deed nor recite any portion of the Qur'an, nor you do any deed but We are Witness thereof when you are doing it. And nothing is hidden from your Lord; (even) the weight of a speck of dust on the earth or in the heaven. Not what is less than that or what is greater than that but is in a Clear Record.) 10:61
أَفَمَنْ هُوَ قَآئِمٌ عَلَى كُلِّ نَفْسٍ بِمَا كَسَبَتْ
(Is then He Who takes charge of every person and knows all that he has earned) 13: 33 He sees all that His servants do, good and evil alike. And Allah says:
أَلا حِينَ يَسْتَغْشُونَ ثِيَابَهُمْ يَعْلَمُ مَا يُسِرُّونَ وَمَا يُعْلِنُونَ
(Surely, even when they cover themselves with their garments, He knows what they conceal and what they reveal) 11:5.
سَوَآءٌ مِّنْكُمْ مَّنْ أَسَرَّ الْقَوْلَ وَمَنْ جَهَرَ بِهِ
(It is the same (to Him) whether any of you conceals his speech or declares it openly) 13:10.
وَمَا مِن دَآبَّةٍ فِي الاٌّرْضِ إِلاَّ عَلَى اللَّهِ رِزْقُهَا وَيَعْلَمُ مُسْتَقَرَّهَا وَمُسْتَوْدَعَهَا كُلٌّ فِى كِتَابٍ مُّبِينٍ
(And no moving creature is there on earth but its provision is due from Allah. And He knows its dwelling place and its deposit. All is in a Clear Book.) 11:6
وَعِندَهُ مَفَاتِحُ الْغَيْبِ لاَ يَعْلَمُهَآ إِلاَّ هُوَ وَيَعْلَمُ مَا فِى الْبَرِّ وَالْبَحْرِ وَمَا تَسْقُطُ مِن وَرَقَةٍ إِلاَّ يَعْلَمُهَا وَلاَ حَبَّةٍ فِى ظُلُمَـتِ الاٌّرْضِ وَلاَ رَطْبٍ وَلاَ يَابِسٍ إِلاَّ فِى كِتَـبٍ مُّبِينٍ
(And with Him are the keys of the Unseen, none knows them but He. And He knows whatever there is in the land and in the sea; not a leaf falls, but He knows it. There is not a grain in the darkness of the earth nor anything fresh or dry, but is written in a Clear Record.) 6:59 And there are many Ayat and Hadiths which say similar things.
وَيَوْمَ يُرْجَعُونَ إِلَيْهِ
(the Day when they will be brought back to Him,) means, the day when all creatures will be brought back to Allah, which is the Day of Resurrection.
فَيُنَبِّئُهُمْ بِمَا عَمِلُواْ
(then He will inform them of what they did.) means, He will tell them everything they did in this life, major and minor, significant and insignificant. As Allah says:
يُنَبَّأُ الإِنسَـنُ يَوْمَئِذِ بِمَا قَدَّمَ وَأَخَّرَ
(On that Day man will be informed of what he sent forward (of deeds), and what he left behind.) 75:13
وَوُضِعَ الْكِتَـبُ فَتَرَى الْمُجْرِمِينَ مُشْفِقِينَ مِمَّا فِيهِ وَيَقُولُونَ يوَيْلَتَنَا مَا لِهَـذَا الْكِتَـبِ لاَ يُغَادِرُ صَغِيرَةً وَلاَ كَبِيرَةً إِلاَّ أَحْصَاهَا وَوَجَدُواْ مَا عَمِلُواْ حَاضِرًا وَلاَ يَظْلِمُ رَبُّكَ أَحَدًا
(And the Book will be placed, and you will see the criminals, fearful of that which is therein. They will say: "Woe to us! What sort of Book is this that leaves neither a small thing nor a big thing, but has recorded it with numbers!" And they will find all that they did, placed before them, and your Lord treats no one with injustice.) 18:49 Allah says here:
وَيَوْمَ يُرْجَعُونَ إِلَيْهِ فَيُنَبِّئُهُمْ بِمَا عَمِلُواْ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيمُ
(the Day when they will be brought back to Him, then He will inform them of what they did. And Allah is All-Knower of everything.) Praise be to Allah, the Lord of all that exists, and we ask Him to help us achieve perfection. The end of the Tafsir of Surat An-Nur, to Allah be praise and thanks.
তাফসীর ইবনে কাছীর
৫৫ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা স্বীয় রাসূল (সঃ)-এর সাথে ওয়াদা করছেন যে, তিনি তাঁর উম্মতকে যমীনের মালিক বানিয়ে দিবেন, তাদেরকে তিনি লোকদের নেতা করবেন এবং দেশ তাদের দ্বারা জনবসতিপূর্ণ হবে। আল্লাহর বান্দারা তাদের প্রতি সন্তুষ্ট থাকবে। আজ জনগণ লোকদের থেকে ভীত-সন্ত্রস্ত রয়েছে, কাল তারা পূর্ণ নিরাপত্তা লাভ করবে। হুকুমত তাদের হবে এবং তারাই হবে সাম্রাজ্যের মালিক। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর যে, হয়েছেও তাই। মক্কা, খায়বার, বাহরাইন, আরব উপদ্বীপ এবং ইয়ামন তো রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর যুগেই বিজিত হয়েছিল। হিজরের মাজুসীরা জিযিয়া কর দিতে স্বীকৃত হয়ে মুসলমানদের অধীনতা স্বীকার করে নেয়। সিরিয়ার কোন কোন অংশেরও এই অবস্থাই হয়। রোমক সম্রাট কায়সার উপহার উপঢৌকন পাঠিয়ে দেন। মিসরের গভর্নরও রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর খিদমতে উপঢৌকন পাঠায়। ইসকানদারিয়ার বাদশাহ মাকুকাস এবং আম্মানের বাদশাহরাও এটাই করেন এবং এইভাবে নিজেদের আনুগত্য প্রমাণ করেন। হাবশের বাদশাহ নাজ্জাসী (রঃ) তো মুসলমানই হয়ে যান যিনি আসহামার পরে হাবশের বাদশাহ হয়েছিলেন।
অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সঃ) যখন ইন্তেকাল করেন এবং হযরত আবু বকর (রাঃ) খিলাফতের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তখন তিনি হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ (রাঃ)-এর নেতৃত্বে এক সেনাবাহিনী পারস্য অভিমুখে প্রেরণ করেন। সেখানে তিনি ক্রমান্বয়ে বিজয় লাভ করতে থাকেন এবং কুফরীর গাছগুলোকে কেটে ফেলে চতুর্দিকে ইসলামের চারা রোপণ করেন। হযরত আবু উবাদাহ ইবনে জাররাহ (রাঃ) প্রমুখ সেনাবাহিনীর অধীনে ইসলামের বীর সৈনিকদেরকে সিরিয়ার রাজ্যগুলোর দিকে প্রেরণ করেন এবং তাঁরা সেখানে মুহাম্মাদ (সঃ) পতাকা উত্তোলন করেন এবং ক্রুশ চিহ্নযুক্ত পতাকাগুলোকে উল্টোমুখে নিক্ষেপ করেন। হযরত আমর ইবনুল আস (রাঃ)-এর নেতৃত্বে একদল সেনাবাহিনী মিসরের দিকে প্রেরিত হয়। বসরা, দামে, আম্মান প্রভৃতি রাজ্য বিজয়ের পর হযরত আবু বকর (রাঃ) মৃত্যুর ডাকে সাড়া দেন। মৃত্যুর পূর্বে তিনি মহান।
আল্লাহর ইঙ্গিতক্রমে হযরত উমার (রাঃ)-কে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করে যান। এটা সত্য কথা যে, আকাশের নীচে কোন নবীর পরে হযরত উমার (রাঃ)-এর যুগের মত যুগ আর আসেনি। তার স্বভাবগত শক্তি, তাঁর পুণ্য, তার চরিত্র, তাঁর ন্যায়পরায়ণতা এবং তার আল্লাহভীতির দৃষ্টান্ত দুনিয়ায় তার পরে অনুসন্ধান করা বৃথা কালক্ষেপণ ছাড়া কিছুই নয়। সমগ্র সিরিয়া ও মিসর এবং পারস্যের অধিকাংশ অঞ্চল তার খিলাফতের আমলে বিজিত হয়। পারস্য সম্রাট কিসরার সাম্রাজ্য ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। স্বয়ং সম্রাটের মাথা লুকাবার কোন জায়গা থাকে। তাকে লাঞ্ছিত অবস্থায় পালিয়ে বেড়াতে হয়। রোমক সম্রাট কায়সারকেও সাম্রাজ্যচ্যুত করা হয়। সিরিয়া সাম্রাজ্য তার হাত ছাড়া হয়ে যায় এবং কনস্টান্টিনোপলে পালিয়ে গিয়ে তাকে আত্মগোপন করতে হয়। এই সাম্রাজ্যগুলোর বহু বছরের সঞ্চিত ধন-সম্পদ মুসলমানদের হস্তগত হয়। আল্লাহর এই সৎ ও মধুর চরিত্রের অধিকারী বান্দাদের মধ্যে এগুলো বন্টন করা হয়। এইভাবে মহান আল্লাহ তাঁর ঐ ওয়াদা পূর্ণ করেন যা তিনি তার প্রিয় বন্ধু হযরত মুহাম্মাদ (সঃ)-এর সাথে করেছিলেন।অতঃপর হযরত উসমান (রাঃ)-এর খিলাফতের যুগ আসে এবং পূর্ব হতে পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত আল্লাহর দ্বীন ছড়িয়ে পড়ে। আল্লাহর সেনাবাহিনী একদিকে পূর্ব দিকের শেষ প্রান্ত এবং অপরদিকে পশ্চিম দিকের শেষ প্রান্তে পৌঁছে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। ইসলামী মুজাহিদদের উন্মুক্ত তরবারী আল্লাহর তাওহীদকে দুনিয়ার প্রান্তে প্রান্তে পৌঁছিয়ে দেন। স্পেন, কিবরাস এমন কি সুদূর চীন পর্যন্ত হযরত উমার (রাঃ)-এর যুগে বিজিত হয়। পারস্য সম্রাট কিসরা নিহত হয়। তার সাম্রাজ্যের নাম ও নিশানা নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়। অগ্নি উপাসকদের হাজার হাজার বছরের উপাসনালয় নির্বাপিত হয় এবং প্রত্যেকটি উঁচু টিলা হতে আল্লাহু আকবার ধ্বনি গুঞ্জরিত হয়।
অপরদিকে মাদায়েন, ইরাক, খখারাসান, আহওয়ায ইত্যাদি সাম্রাজ্য জয় করা হয়। তুর্কীদের সাথে বিশাল যুদ্ধ সংঘটিত হয়। অবশেষে তাদের বড় বাদশাহ খাকান মাটির সাথে মিশে যায়। সে চরমভাবে লাঞ্ছিত ও পর্যদস্ত হয় এবং যমীনের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্ত হতে হযরত উসমান (রাঃ)-এর দরবারে খাজনা পৌছতে থাকে। সত্য কথা তো এটাই যে, মুসলিম বীর পুরুষদের এই জীবন মরণ সংগ্রামের মূলে ছিল হযরত উসমান (রাঃ)-এর তিলাওয়াতে কুরআনের বরকত। কুরআন কারীমের প্রতি তাঁর যে আসক্তি ও অনুরাগ ছিল তা বর্ণনাতীত। কুরআনকে একত্রিতকরণ ও মুখস্থকরণ এবং প্রচার ও প্রসারকরণে তিনি যে খিদমত আঞ্জাম দেন তার তুলনা মিলে না। তাঁর যুগের থতি লক্ষ্য করলে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর ভবিষ্যদ্বাণীটি মানসপটে ভেসে ওঠে। তিনি বলেছিলেনঃ “আমার জন্যে যমীনকে এক জায়গায় একত্রিত ও জড় করা য়, এমনকি আমি পূর্ব দিক ও পশ্চিম দিক দেখে নিই। আমার উম্মতের সাম্রাজ্য ইন পর্যন্ত পৌঁছে যাবে যেখান পর্যন্ত আমাকে দেখানো হয়েছিল। এখন আৰা দেখতে পাই যে, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (সঃ) আমাদের সাথে যে ভদ করেছিলেন তা সত্যে পরিণত হয়েছে। সুতরাং আমরা আল্লাহর প্রতি এবং তৰ ৰাসূল (সঃ)-এর প্রতি ঈমানের প্রার্থনা করছি এবং যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশে তিনি সন্তুষ্ট হন সেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার আমরা তাঁর কাছে তাওফীক চাচ্ছি।
হযরত জাবির ইবনে সামুরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বলতে শুনেছি- “মুসলমানদের কাজ উত্তমরূপে চালু থাকবে, শেষ পর্যন্ত তাদের মধ্যে বারো জন খলীফা হবে।” অতঃপর তিনি একটি বাক্য আস্তে বলেন যা আমার কর্ণগোচর হয়নি। আমি ওটা আমার পিতাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) যে কথাটি আস্তে বলেছিলেন তাহলোঃ “এদের সবাই কুরায়েশী হবে।” (এ হাদীসটি ইমাম মুসলিম (রঃ) স্বীয় সহীহ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন)রাসূলুল্লাহ (সঃ) একথাটি ঐদিনের সন্ধ্যায় বলেছিলেন যেই দিন হযরত মায়েয ইবনে মালিক (রাঃ)-কে রজম বা প্রস্তরাঘাতে হত্যা করা হয়েছিল। সুতরাং জানা গেল যে, এই বারোজন খলীফা অবশ্যই হবেন। কিন্তু এটা স্মরণ রাখার বিষয় যে, এই বারো জন খলীফা তারা নয় যাদেরকে শিয়া সম্প্রদায় ধারণা করছে। কেননা শিয়াদের ইমামদের মধ্যে এমন বহু ইমামও রয়েছে যারা খিলাফত ও সালতানাতের কোন অংশ সারা জীবনেও লাভ করেনি। এই বারো জন খলীফা সবাই হবেন কুরায়েশ বংশের। তাঁরা হবেন ন্যায়ের সাথে ফায়সালাকারী। তাঁদের সুসংবাদ পূর্ববর্তী কিতাবসমূহেও রয়েছে। এটা শর্ত নয় যে, এই বারো জন খলীফা পর্যায়ক্রমে ও ক্রমিকভাবে হবেন। বরং হতে পারে যে, তারা বিভিন্ন যুগে হবেন। চার জন খলীফা তো ক্রমিকভাবেই হয়েছেন। যেমন হযরত আবু বকর (রাঃ), হযরত উমার (রাঃ), হযরত উসমান (রাঃ) এবং হযরত আলী (রাঃ)। তাঁদের পর ক্রম কেটে গেছে। পরে এরূপ খলীফা গত হয়েছেন এবং পরবর্তীতেও কোন কোন খলীফার আগমন ঘটতে পারে। সঠিক যুগের অবগতি একমাত্র মহান আল্লাহরই রয়েছে। তবে এটা নিশ্চিত কথা যে, ইমাম মেহেদীও এই বারো জনের একজন হবেন যার নাম ও কুনিয়াত হবে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নাম ও কুনিয়াত মুতাবেক।
তিনি সমগ্র ভূ-পৃষ্ঠকে আদল ও ইনসাফ দ্বারা পূর্ণ করে দিবেন, যখন সারা দুনিয়া অন্যায় ও অত্যাচারে ছেয়ে যাবে।রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর মুক্ত দাস হযরত সাফীনা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আমার (ইন্তেকালের) পরে ত্রিশ বছর পর্যন্ত খিলাফত থাকবে, তারপর দন্তকর্তিত রাজ্য হয়ে যাবে।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ), ইমাম আবু দাউদ (রঃ), ইমাম তিরমিযী (রঃ) এবং ইমাম নাসাঈ (রঃ) বর্ণনা করেছেন)আবুল আলিয়া (রঃ) আয়াতের তাফসীরে বলেন যে, (ইসলামের আবির্ভাবের পর) রাসূলুল্লাহ (সঃ) এবং তাঁর সহচরবর্গ দশ বছরের মত মক্কায় অবস্থান করেন। ঐ সময় তারা দুনিয়াবাসীকে আল্লাহর একত্ববাদ ও তাঁর ইবাদতের দিকে আহ্বান করতে থাকেন। কিন্তু ঐ যুগটি ছিল গোপনীয়তা, ভয় ও নিরাপত্তাহীনতার যুগ। তখন পর্যন্ত জিহাদের হুকুম নাযিল হয়নি। মুসলমানরা ছিলেন অত্যন্ত দুর্বল। এরপর হিজরতের হুকুম হয় এবং তাঁরা মদীনায় হিজরত করেন। অতঃপর জিহাদের হুকুম অবতীর্ণ হয়। চতুর্দিকে শত্রু পরিবেষ্টিত ছিল। মুসলমানরা ছিলেন ভীত-সন্ত্রস্ত। কোন সময়ই বিপদ শূন্য ছিল না। সকাল সন্ধ্যায় সাহাবীগণ (রাঃ) অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত থাকতেন। একজন সাহাবী একদা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমাদের জীবনের একটা মুহূর্তও কি শান্তিতে কাটবে না? হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! ক্ষণেকের জন্যেও কি আমরা অস্ত্র-শস্ত্র রেখে দিয়ে তৃপ্তি ও স্বস্তির শ্বাস গ্রহণ করতে পারবো না?” রাসূলুল্লাহ (সঃ) অত্যন্ত শান্তভাবে উত্তর দেনঃ “আরো কিছুদিন ধৈর্যধারণ কর। অতঃপর এমন শান্তি এবং নিরাপত্তা বিরাজ করবে যে, মানুষ ভরা মজলিসে আরামে ও নিশ্চিন্তে বসে থাকবে, একজনের কাছে কেন, কারো কাছেই কোন অস্ত্র থাকবে।" ঐ সময় আল্লাহ তা'আলা এই আয়াত অবতীর্ণ করেন।অতঃপর আল্লাহর নবী (সঃ) আরব উপদ্বীপের উপর বিজয় লাভ করেন। আরবে কোন কাফির থাকলো না।
সুতরাং মুসলমানদের অন্তর ভয়শূন্য হয়ে গেল। আর সদা-সর্বদা অস্ত্রে-শস্ত্রে সজ্জিত থাকার কোন প্রয়োজন থাকলো না। ভারপর রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর ইন্তেকালের পরেও তিনজন খলীফার যুগ পর্যন্ত সর্বত্র ঐ শান্তি ও নিরাপত্তাই বিরাজ করে। অর্থাৎ হযরত আবু বকর (রাঃ), হযরত উমার (রাঃ) এবং হযরত উসমান (রাঃ)-এর যুগ পর্যন্ত। এরপর মুসলমানদের মধ্যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। কাজেই আবার তাদের মধ্যে ভয় এসে পড়ে এবং প্রহরী, চৌকিদার, দারোগা ইত্যাতি নিযুক্ত করতে হয়। মুসলমানরা যখন নিজেদের অবস্থা নিজেরাই পরিবর্তন করে তখন তাদের অবস্থা পবির্তিত হয়ে যায়।পূর্ব যুগীয় কোন কোন গুরুজন হতে বর্ণিত আছে যে, তারা হযরত আবু বকর (রাঃ) ও হযরত উমার (রাঃ)-এর খিলাফতের সত্যতার ব্যাপারে এই আয়াতটিকে পেশ করেছেন।হযরত বারা ইবনে আযিব (রাঃ) বলেনঃ “যখন এই আয়াত অবতীর্ণ হয় তখন আমরা অত্যন্ত ভয় ও দুর্ভাবনার অবস্থায় ছিলাম। যেমন আল্লাহ তা'আলা (আরবি) অর্থাৎ “তোমরা স্মরণ কর, যখন তোমরা ছিলে খুবই অল্প এবং ভূ-পৃষ্ঠে তোমাদেরকে দুর্বল মনে করা হতো।” (৮:২৬) অর্থাৎ পদে পদে তোমরা ভীত ও শংকিত থাকতে। অতঃপর আল্লাহ তোমাদের সংখ্যা বাড়িয়ে দেন এবং তোমাদেরকে শক্তিশালী করেন। আর তিনি তোমাদেরকে নিরাপত্তা দান করেন।মহান আল্লাহ বলেনঃ যেমন তিনি প্রতিনিধিত্ব দান করেছিলেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে।
যেমন হযরত মূসা (আঃ) তাঁর কওমকে বলেছিলেন (আরবি) অর্থাৎ “এটা খুবই নিকটে যে, তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের শত্রুদেরকে ধ্বংস করবেন এবং যমীনে তোমাদেরকে তাদের স্থলাভিষিক্ত করবেন।” (৭:১২৯) অন্য আয়াতে বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “আমি চাই যে, ভূ-পৃষ্ঠে যাদেরকে দুর্বল জ্ঞান করা হতো তাদের প্রতি অনুগ্রহ করবো।” (২৮: ৫) এরপর মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ তিনি অবশ্যই তাদের জন্যে সুদৃঢ় করবেন তাদের দ্বীনকে যা তিনি তাদের জন্যে মনোনীত করেছেন এবং তাদের ভয়-ভীতির পরিবর্তে তাদেরকে অবশ্যই নিরাপত্তা দান করবেন। হযরত আদী ইবনে হাতিম (রাঃ) যখন প্রতিনিধি হিসেবে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকট আগমন করেন তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে জিজ্ঞেস করেনঃ “তুমি কি হীরা নামক দেশ দেখেছো?” উত্তরে হযরত আদী ইবনে হাতিম (রাঃ) বলেনঃ “জ্বী না, আমি হীরা দেখিনি, তবে নাম শুনেছি।” তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ “যার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে তাঁর শপথ! আল্লাহ তা'আলা আমার এই দ্বীনকে পূর্ণরূপে ছড়িয়ে দিবেন। তখন এমনভাবে শান্তি ও নিরাপত্তা এসে যাবে যে, হীরা হতে একজন মহিলা উন্ত্রীর উপর সওয়ার হয়ে একাই বেরিয়ে পড়বে এবং বায়তুল্লাহ শরীফে পৌঁছে তাওয়াফ কার্য সম্পন্ন করতঃ ফিরে আসবে। সে না কাউকেও ভয় করবে এবং না কারো আশ্রয়ে থাকবে। জেনে রেখো যে, ইরানের বাদশাহ কিসরা ইবনে হরমুযের কোষাগার বিজিত হবে।” হযরত আদী (রাঃ) বিস্ময়ের সুরে বলেনঃ “ইরানের বাদশাহ কিসরা ইবনে হরমুযের কোষাগার মুসলমানরা জয় করবেন!” উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ “হ্যাঁ, কিসরা ইবনে হরমুযের কোষাগারই বটে। ধন-সম্পদ এতো বৃদ্ধি পাবে যে, তা গ্রহণকারী কেউ থাকবে না।” হযরত আদী (রাঃ) বলেনঃ “দেখুন, বাস্তবিকই স্ত্রীলোকেরা হীরা হতে কারো আশ্রয় ছাড়াই যাতায়াত করছে। রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর এ ভবিষ্যদ্বাণী পূর্ণ হতে আমি স্বচক্ষে দেখলাম।
দ্বিতীয় ভবিষ্যদ্বাণীও আমার চোখের সামনে পুরো হয়েছে। কিসরার ধনভাণ্ডার জয়কারীদের মধ্যে স্বয়ং আমিও বিদ্যমান ছিলাম। তৃতীয় ভবিষ্যদ্বাণীটিও নিঃসন্দেহে পূর্ণ হবে। কেননা, এটাও রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এরই ভবিষ্যদ্বাণী ।” হযরত উবাই ইবনে কা'ব (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “এই উম্মতকে ভূ-পৃষ্ঠে উন্নতি, উচ্চ মর্যাদা, দ্বীনের প্রসার ও সাহায্যের সুসংবাদ দিয়ে দাও। তবে যে ব্যক্তি দুনিয়া লাভের উদ্দেশ্যে আখিরাতের কাজ করবে তার জানা উচিত যে, পরকালে তার জন্যে কোনই অংশ নেই।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন)মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ তারা আমার ইবাদত করবে এবং আমার সাথে অন্য কাউকেও শরীক করবে না। হযরত মুআয ইবনে জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমি উটের উপরে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর পিছনে বসেছিলাম। আমার ও তার মাঝে জিনের (উটের গদীর) শেষ কাষ্ঠখণ্ড ছাড়া কিছুই ছিল না (অর্থাৎ আমি নবী (সঃ)-এর খুবই সংলগ্ন ছিলাম)। তখন তিনি বললেনঃ “হে মুআয (রাঃ)!” আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! লাব্বায়েক ওয়া সাদায়েক! অতঃপর আল্লাহর রাসূল (সঃ) সামনে কিছুক্ষণ অগ্রসর হলেন। আবার তিনি বললেনঃ “হে মুআয (রাঃ)!” আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! লাব্বায়েক ওয়া সাদায়েক! আবার তিনি কিছুক্ষণ সামনে চললেন।
পুনরায় তিনি বললেনঃ “হে মুআয (রাঃ)!" আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! লাব্বায়েক ওয়া সাদায়েক! তিনি (এবার) বললেনঃ “বান্দার উপর আল্লাহর হক কি তা কি তুমি জান?" আমি বললাম, আল্লাহ ও তার রাসূল (সঃ) অধিকতর ভাল জানেন ও জ্ঞাত আছেন। তিনি বললেনঃ “বান্দার উপর আল্লাহর হক এই যে, তারা একবার তারই ইবাদত করবে এবং তার সাথে এতটুকুও শরীক করবে না।” অতঃ তিনি কিছুক্ষণ সামনে গেলেন এবং আবার বললেনঃ “হে মুআয! (৯)!” আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! লাব্বায়েক ওয়া সাদায়েক! তিনি বললেনঃ “আল্লাহর উপর বান্দার হক কি তা তুমি জান কি?” আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ) সবচেয়ে ভাল জ্ঞাত আছেন। তিনি বললেনঃ “আল্লাহর উপর বান্দার হক হচ্ছে এই যে, তিনি তাদেরকে শাস্তি প্রদান করবেন না। (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম বুখারী (রঃ) ও ইমাম মুসলিম (রঃ) তাদের সহীহ গ্রন্থে এটা তাখরীজ করেছেন)অতঃপর আল্লাহ তাআলা বলেনঃ আর যারা অকৃতজ্ঞ হবে তারা তো সত্যত্যাগী অর্থাৎ এর পরেও যারা আমার আনুগত্য পরিত্যাগ করবে সে আমার হুকুম অমান্য করলো এবং এটা খুবই কঠিন ও বড় পাপ।আল্লাহর মাহাত্ম্য এই যে, যেই যুগে ইসলামের শক্তি বেশী থেকেছে সেই যুগে তিনি সাহায্যও বেশী করেছেন। সাহাবীগণ ঈমানে অগ্রগামী ছিলেন, কাজেই তঁারা বিজয় লাভের ব্যাপারেও সবারই অগ্রে থেকেছেন। যেমন ঈমানে দুর্বলতা দেখা দেয় তেমন পার্থিব অবস্থা, রাজত্ব এবং শান-শওকতও নীচে নেমে গেছে। সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আমার উম্মতের মধ্যে একটি দল সদা সত্যের উপর থাকবে এবং তারা থাকবে সদা জয়যুক্ত। তাদের বিরোধীরা তাদের কোনই ক্ষতি করতে পারবে না। কিয়ামত পর্যন্ত এই অবস্থাই থাকবে। আর একটি রিওয়াইয়াতে আছে যে, শেষ পর্যন্ত আল্লাহর ওয়াদা এসে যাবে। একটি বর্ণনায় রয়েছে যে, শেষ পর্যন্ত এই দলটিই সর্বশেষে দাজ্জালের সাথে যুদ্ধ করবে। আর একটি হাদীসে আছে যে, হযরত ঈসা (আঃ)-এর অবতরণ পর্যন্ত এই লোকগুলো কাফিরদের উপর জয়যুক্ত থাকবে। এই সব রিওয়াইয়াত বিশুদ্ধ এবং সবগুলোরই ভাবার্থ একই।
৫৬-৫৭ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তাআলা স্বীয় ঈমানদার বান্দাদেরকে শুধু তাঁরই ইবাদত করার নির্দেশ দিচ্ছেন। তিনি বলছেনঃ তাঁরই জন্যে তোমরা নামায সুপ্রতিষ্ঠিত কর এবং সাথে সাথে তাঁর বান্দাদের প্রতি অনুগ্রহ কর ও তাদের সাথে সৎ ব্যবহার কর। দুর্বল, দরিদ্র এবং মিসকীনদের খবরাখবর নিতে থাকো। মালের মধ্য হতে আল্লাহর হক অর্থাৎ যাকাত বের কর এবং প্রতিটি কাজে আল্লাহর রাসূল (সঃ)-এর আনুগত্য করতে থাকো। তিনি যে কাজের নির্দেশ দেন তা পালন কর এবং যা করতে নিষেধ করেন তা হতে বিরত থাকো। জেনে রেখো যে, আল্লাহর রহমত লাভের এটাই একমাত্র পন্থা। যেমন অন্য আয়াতে রয়েছেঃ (আরবি) অর্থাৎ “ওরাই তারা যাদের উপর আল্লাহ সত্বরই করুণা বর্ষণ করবেন।” (৯:৭১)মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ হে নবী (সঃ)! তুমি ধারণা করো না যে, তোমাকে অবিশ্বাসকারীরা আমার উপর জয়যুক্ত হবে বা এদিক-ওদিক পালিয়ে গিয়ে আমার কঠিন শাস্তি হতে রক্ষা পেয়ে যাবে। আমি তাদের প্রকৃত বাসস্থান জাহান্নামে ঠিক করে রেখেছি যা বাসের পক্ষে অত্যন্ত জঘন্য স্থান।
৫৮-৬০ নং আয়াতের তাফসীর: এই আয়াতে নিকটাত্মীয়দেরকেও নির্দেশ দেয়া হচ্ছে যে, তারাও যেন অনুমতি নিয়ে বাড়ীতে প্রবেশ করে। ইতিপূর্বে এই সূরার প্রথম দিকের আয়াতে যে হুকুম ছিল তা ছিল পর পুরুষ ও অনাত্মীয়ের জন্যে। এখানে আল্লাহ তাআলা নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তিন সময়ে গোলামদেরকে এমনকি নাবালক বা অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেদেরকেও অনুমতি নিতে হবে। ঐ তিন সময় হলোঃ ফজরের নামাযের পূর্বে। কেননা, এটা হলো ঘুমানোর সময়। দ্বিতীয় হলো দুপুরের সময়, যখন মানুষ সাধারণতঃ কিছুটা বিশ্রামের জন্যে কাপড় ছেড়ে বিছানায় শুয়ে থাকে। আর তৃতীয় হলো এশার নামাযের সময়। কেননা, ওটাই হচ্ছে শিশুদেরকে নিয়ে শয়নের সময়। সুতরাং এই তিন সময় যেন গোলাম ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেরাও অনুমতি ছাড়া ঘরে প্রবেশ না করে। তবে এই তিন সময় ছাড়া অন্যান্য সময়ে তাদের ঘরে প্রবেশের জন্যে অনুমতির প্রয়োজন নেই। কেননা, তাদের ঘরে যাতায়াত জরুরী। তারা বারবার আসে ও যায়। সুতরাং প্রত্যেকবার অনুমতি প্রার্থনা করা তাদের জন্যে এবং বাড়ীর লোকদের জন্যেও বড়ই অসুবিধাজনক ব্যাপার। এ জন্যেই নবী (সঃ) বলেছেনঃ “বিড়াল অপবিত্র নয়। ওটা তো তোমাদের বাড়ীতে তোমাদের আশে পাশে সদা ঘোরাফেরা করেই থাকে।” (এ হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ), ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রঃ) এবং আহলুস সুনান বর্ণনা করেছেন) হুকুম তো এটাই, কিন্তু এর উপর আমল খুব কমই হয়। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ “তিনটি আয়াতের উপর আমল মানুষ প্রায় ছেড়েই দিয়েছে। একটি এই আয়াতটি। দ্বিতীয় হলো সূরায়ে নিসার (আরবি) (৪: ৮) এই আয়াতটি এবং তৃতীয়টি হলো সূরায়ে হুজুরাতের (আরবি) (৪৯: ১৩) এই আয়াতটি। শয়তান লোকদের উপর ছেয়ে গেছে এবং সে তাদেরকে এই আয়াতগুলোর উপর আমল করা হতে উদাসীন রেখেছে, যেন তাদের এ আয়াতগুলোৱ উপর ঈমান নেই। আমি তো আমার দাসটিকেও নির্দেশ দিয়েছি যে, সে যেন এই তিন সময়ে বিনা অনুমতিতে কখনো না আসে।” প্রথম আয়াতটিতে দাস-দাসী ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেদেরকেও অনুমতি গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় আয়াতটিতে ওয়ারিসদের মধ্যে মাল বন্টনের সময় আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম ও মিকসীন এসে গেলে তাদেকেও কিছু দেয়া ও তাদের সাথে নম্র ব্যবহার করার হুকুম করা হয়েছে। আর তৃতীয় আয়াতে বংশ ও আভিজাত্যের উপর গর্ব না করা, বরং আল্লাহভীরু লোককেই সম্মান প্রাপ্তির যোগ্য মনে কর বর্ণনা রয়েছে।
মূসা ইবনে আবি আয়েশা (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি শাবী (রঃ)-কে জিজ্ঞেস করেন (আরবি) -এই আয়াতটি কি মানসূখ বা রহিত হয়ে গেছে?” উত্তরে তিনি বলেনঃ “না, রহিত হয়নি।” তখন পুনরায় তিনি প্রশ্ন করেনঃ “জনগণ এর প্রতি আমল ছেড়ে দিয়েছে যে?” জবাবে তিনি বলেনঃ “(এই আয়াতের প্রতি আমল করার জন্যে) আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করা উচিত।”হযরত ইকরামা (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, দু’জন লোক কুরআন কারীমে বর্ণিত তিন সময়ে অনুমতি প্রার্থনা সম্পর্কে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলে তিনি উত্তরে বলেনঃ “এই আয়াতের উপর আমল ছেড়ে দেয়ার একটি বড় কারণ হলো লোকদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি ও প্রশস্ততা। পূর্বে জনগণের আর্থিক অবস্থা এমন ভাল ছিল না যে, তারা ঘরের দরযার উপর পর্দা লটকাবে বা কয়েকটি কক্ষ বিশিষ্ট একটি বড় ঘর নির্মাণ করবে। বরং তাদের একটিমাত্র ঘর থাকতো এবং অনেক সময় দাস-দাসীরা তাদের অজ্ঞাতে ঘরে প্রবেশ করতো। ঐ সময় স্বামী স্ত্রী হয়তো ঘরে একত্রে থাকতো, ফলে তারা খুবই লজ্জিত হতো এবং বাড়ীর লোকেরাও এতে কঠিনভাবে অস্বস্তিবোধ করতো। অতঃপর যখন আল্লাহ তাআলা মুসলমানদেরকে আর্থিক স্বচ্ছলতা দান করলেন এবং তারা পৃথক পৃথক কক্ষ বানিয়ে নিলো ও দরযার উপর পর্দা লটকিয়ে দিলো তখন তারা রক্ষিত হয়ে গেল। আর এর ফলে যে যৌক্তিকতায় অনুমতি প্রার্থনার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল তা পূর্ণ হয়ে গেল। তাই জনগণ এই হুকুমের পাবন্দী ছেড়ে দিলো এবং তারা এর প্রতি অবহেলা প্রদর্শন করতে শুরু করলো।” (এটা ইবনে আবি হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন)সুদ্দী (রঃ) বলেন যে, এই তিনটি এমন সময় যখন মানুষ কিছুটা অবসর পায় এবং বাড়ীতেই অবস্থান করে।
আল্লাহ জানেন তারা তখন কি অবস্থায় থাকে। এজন্যেই দাস-দাসীদেরও অনুমতি প্রার্থনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কেননা, সাধারণতঃ ঐ সময়েই মানুষ স্ত্রীর সাথে মিলিত হয়ে থাকে, যেন গোসল করে পাক-পবিত্র হয়ে বের হতে পারে এবং নামাযে শরীক হতে পারে। | মুকাতিল ইবনে হাইয়ান (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, একজন আনসারী এবং তার স্ত্রী আসমা বিনতে মুরসিদ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর জন্যে কিছু খাদ্য তৈরী করেন। লোকেরা বিনা অনুমতিতে ঘরে প্রবেশ করতে শুরু করে। তখন হযরত আসমা (রাঃ) বলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! এটাতো খুবই জঘন্য প্রথা যে, স্বামী স্ত্রী একই কাপড়ে রয়েছে এমতাবস্থায় তাদের গোলাম ঘরে প্রবেশ করে।" ঐ সময় (আরবি)-এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয়।এই আয়াত যে মানসূখ বা রহিত নয়, শেষের শব্দগুলো তার ইঙ্গিত বহন করছে। ঘোষিত হয়েছেঃ (আরবি) অর্থাৎ “এইভাবে আল্লাহ তোমাদের নিকট তাঁর নির্দেশ সুস্পষ্টভাবে বিবৃত করেন, আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।” হ্যাঁ, তবে যখন ছেলেরা প্রাপ্ত বয়সে পৌঁছে যাবে তখন তাদেরকে এই তিন সময় ছাড়া অন্য সময়েও অনুমতি নিতে হবে। যে তিন সময়ের কথা মহান আল্লাহ বর্ণনা করেছেন এই তিন সময়ে ছোট ছেলেকেও তার পিতা-মাতার কাছে যাওয়ার সময় অনুমতি প্রার্থনা করতে হবে। কিন্তু প্রাপ্ত বয়সে পৌঁছার পর সব সময়েই অনুমতি চাইতে হবে যেমন অন্যান্য বড় মানুষ অনুমতি চেয়ে থাকে, তারা নিজস্ব লোকই হোক অথবা অপর লোকই হোক।ঘোষিত হচ্ছেঃ বৃদ্ধা নারী, যারা বিবাহের আশা রাখে না, অর্থাৎ তারা এমন বয়সে পৌছে গেছে যে, পুরুষদের প্রতি তাদের কোনই আকর্ষণ নেই, তাদের জন্যে অপরাধ নেই, যদি তারা তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে তাদের বহির্বাস খুলে রাখে।
অর্থাৎ অন্যান্য নারীদের মত তাদের পর্দার দরকার নেই। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, এটি (আরবি) (২৪:৩১) এই আয়াতটি হতে স্বতন্ত্র। হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, এরূপ বৃদ্ধা নারীর জন্যে বুরকা এবং চাদর নামিয়ে দিয়ে শুধু দো-পাট্টা এবং জামা ও পায়জামা পরে থাকার অনুমতি রয়েছে। তার কিরআতও(আরবি) এরূপই বটে। এর দ্বারা দোপাট্টার উপরের চাদরকে বুঝানো হয়েছে। সুতরাং বুড়ী স্ত্রীলোকেরা যখন মোটা, চওড়া দোপাট্টা পরে থাকবে তখন ওর উপরে অন্য চাদর রাখা জরুরী নয়। কিন্তু এর দ্বারাও যেন সৌন্দর্য প্রকাশ উদ্দেশ্য না হয়।শ্রীলোকেরা হযরত আয়েশা (রাঃ)-কে এই ধরনের প্রশ্ন করলে তিনি তাদেরকে বলেনঃ তোমাদের জন্যে সাজ-সজ্জা অবশ্যই বৈধ, কিন্তু এটা যেন অর পুরুষদের চক্ষু ঠাণ্ডা করার জন্যে না হয়।”হযরত হুযাইফা (রাঃ)-এর স্ত্রী খুবই বৃদ্ধা হয়ে গিয়েছিলেন। ঐ সময় তিনি তার গোলামের দ্বারা তার মাথায় মেহেদী লাগিয়ে নিয়েছিলেন। তাঁকে এ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ “আমি এমন বার্ধক্যে উপনীত হয়েছি যে, আমার পুরুষদের প্রতি কোন আকর্ষণই নেই।”শেষে মহান আল্লাহ বলেনঃ (চাদর না নেয়া তো এরূপ বুড়ী স্ত্রীলোকদের জন্যে জায়েয বটে, কিন্তু এটা হতে তাদের বিরত থাকাই (অর্থাৎ বুরকা ও চাদর ব্যবহার করাই) তাদের জন্যে উত্তম। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
৬১ নং আয়াতের তাফসীর: এই আয়াতে যে দোষ না হওয়ার কথা বর্ণিত হয়েছে সে সম্পর্কে হযরত আতা (রঃ) প্রমুখ গুরুজনতো বলেন যে, এর দ্বারা অন্ধ ও খোঁড়াদের জিহাদে যোগদান না করা বুঝানো হয়েছে। যেমন সূরায়ে আল-ফাতহুতে রয়েছে। সুতরাং এ ধরনের লোক যদি জিহাদে গমন না করে তবে তাদের শরীয়ত সম্মত ওজর থাকার কারণে তাদের কোন অপরাধ হবে না। সূরায়ে বারাআতে রয়েছেঃ “যারা দুর্বল, যারা পীড়িত এবং যারা অর্থ সাহায্যে অসমর্থ, তাদের কোন অপরাধ নেই, যদি আল্লাহ ও রাসূল (সঃ)-এর প্রতি তাদের অবিমিশ্র অনুরাগ থাকে। যারা সৎকর্মপরায়ণ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোন হেতু নেই; আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। তাদেরও কোন অপরাধ নেই যারা তোমার নিকট বাহনের জনে আসলে তুমি বলেছিলেঃ তোমাদের জন্যে কোন বাহন আমি পাচ্ছি না, তারা অর্থ ব্যয়ে অসামর্থ্য জনিত দুঃখে অশ্রু বিগলিত নেত্রে ফিরে গেল।” তাহলে এই আয়াতে তাদের জন্যে অনুমতি রইলো যে, তাদের কোন অপরাধ নেই।কতকগুলো লোক ঘৃণা করে তাদের সাথে খেতে বসতো না। শরীয়ত এসব অজ্ঞতাপূর্ণ অভ্যাস উঠিয়ে দেয়। হযরত মুজাহিদ (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, জনগণ এইরূপ লোকদেরকে নিজেদের পিতা, ভ্রাতা, ভগ্নী প্রভৃতি নিকটতম আত্মীয়দের নিকট পৌঁছিয়ে দিতো, যেন তারা সেখানে আহার করে। এ লোকগুলো এটাকে দূষণীয় মনে করতো যে, তাদেরকে অপরের বাড়ী নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তখন এই আয়াত অবতীর্ণ হয়।সুদ্দী (রঃ) বলেন যে, মানুষ যখন তার ভ্রাতা, ভগ্নী প্রভৃতির বাড়ী যেতো এবং স্ত্রীলোকেরা কোন খাদ্য তার সামনে হাযির করতো তখন সে তা খেতো না এই মনে করে যে, সেখানে বাড়ীর মালিক তো নেই। তখন আল্লাহ তা'আলা ঐ খাদ্য খেয়ে নেয়ার অনুমতি দেন।
এটা যে বলা হয়েছে যে, তোমাদের নিজেদের জন্যেও কোন দোষ নেই, এটা তো প্রকাশমানই ছিল, কিন্তু এর উপর অন্যগুলোর সংযোগ স্থাপনের জন্যে এর বর্ণনা দেয়া হয়েছে এবং এর পরবর্তী বর্ণনা এই হুকুমের ব্যাপারে সমান। পুত্রদের বাড়ীর হুকুমও এটাই, যদিও শব্দে এর বর্ণনা দেয়া হয়নি। কিন্তু আনুষঙ্গিকভাবে এটাও এসে যাচ্ছে। এমনকি এই আয়াত দ্বারাই দলীল গ্রহণ করে কেউ কেউ বলেছেন যে, পুত্রের মাল পিতার মালেরই স্থলবর্তী। মুসনাদ ও সুনান গ্রন্থে কয়েকটি সনদে হাদীস এসেছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “তুমি ও তোমার মাল তোমার পিতার (-ই মালিকানাধীন)।” আর যাদের নাম এসেছে তাদের দ্বারা দলীল গ্রহণ করে কেউ কেউ বলেছেন যে, নিকটতম আত্মীয়দের একের খাওয়া পরা অপরের উপর ওয়াজিব। যেমন ইমাম আবু হানীফা (রঃ) ও ইমাম আহমাদ (রঃ)-এর প্রসিদ্ধ উক্তি এটাই।আল্লাহ পাকের যার চাবী তোমাদের মালিকানায় রয়েছে’ -এই উক্তি দ্বারা গোলাম ও প্রহরীকে বুঝানো হয়েছে যে, তারা তাদের মনিবের মাল হতে প্রয়োজন হিসেবে প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী খেতে পারে।
হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) যখন জিহাদে গমন করতেন তখন প্রত্যেকেরই মনের বাসনা এটা হতো যে, সে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সাথে যদি যেতে পেতো! যাওয়ার সময় তারা নিজেদের বিশিষ্ট বন্ধুদেরকে চাবি দিয়ে যেতো এবং তাদেরকে বলে যেতো: “প্রয়োজনবোধে তোমরা আমাদের মাল থেকে খেতে পারবে। আমরা তোমাদেরকে অনুমতি দিলাম। কিন্তু এরপরেও এরা নিজেদেরকে আমানতদার মনে করে এবং এই মনে করে যে, তারা হয়তো ভোলা মনে অনুমতি দেয়নি। পানাহারের কোন জিনিসকে তারা স্পর্শই করতো না। তখন এই হুকুম নাযিল হয়।এরপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ তোমরা তোমাদের বন্ধুদের গৃহেও খেতে পার, যখন তোমরা জানবে যে, তারা এটা খারাপ মনে করবে না এবং তাদের কাছে এটা কঠিনও ঠেকবে না। কাতাদা (রঃ) বলেনঃ “যখন তুমি তোমার বন্ধুর বাড়ীতে যাবে তখন তার অনুমতি ছাড়াই তুমি তার খাদ্য হতে খেতে পারবে।”অতঃপর মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ তোমরা একত্রে আহার কর অথবা পৃথক পৃথকভাবে আহার কর তাতে তোমাদের জন্যে কোন অপরাধ নেই।হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, যখন (আরবি) অর্থাৎ “হে মুমিনগণ! তোমরা অন্যের মাল অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করো না।” (৪: ২৯) এই আয়াত অবতীর্ণ হয় তখন সাহাবীগণ (রাঃ) পরস্পর বলাবলি করেনঃ “পানাহারের জিনিসগুলোও তো মাল, সুতরাং এটাও আমাদের জন্যে হালাল নয় যে, আমরা একে অপরের সাথে আহার করি। কাজেই তারা ওটা থেকেও বিরত হন। ঐ সময় এই আয়াত অবতীর্ণ হয়।
অনুরূপভাবে পৃথক পৃথকভাবে পানাহারকেও তারা খারাপ মনে করতেন। কেউ সঙ্গী না হওয়া পর্যন্ত তারা খেতেন না। এজন্যে আল্লাহ পাক এই হুকুমের মধ্যে দুটোরই অনুমতি দিলেন, অর্থাৎ অন্যদের সাথে খেতেও এবং পৃথক পৃথকভাবে খেতেও। বানু কিনানা গোত্রের লোক বিশেষভাবে এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। তারা ক্ষুধার্ত থাকতো, তথাপি সঙ্গে কাউকেও না পাওয়া পর্যন্ত খেতো না। সওয়ারীর উপর সওয়ার হয়ে তারা সাথে আহারকারী সঙ্গীর খোঁজে বেরিয়ে পড়তো। সুতরাং আল্লাহ তা'আলা একাকী খাওয়ার অনুমতি দান সম্পর্কীয় আয়াত অবতীর্ণ করে অজ্ঞতাযুগের ঐ কঠিন প্রথাকে দূর করে দেন।এ আয়াতে যদিও একাকী খাওয়ার অনুমতি রয়েছে, কিন্তু এটা স্মরণ রাখার বিষয় যে, লোকদের সাথে মিলিত হয়ে খাওয়া নিঃসন্দেহে উত্তম। আর এতে বেশী বরকতও রয়েছে।ওয়াহশী ইবনে হারব (রাঃ) তাঁর পিতা হতে এবং তিনি তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন যে, একটি লোকে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বলেঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমি খাই, কিন্তু পরিতৃপ্ত হই না (এর কারণ কি?)।” উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে বলেনঃ “ সম্ভবতঃ তুমি পৃথকভাবে একাকী খেয়ে থাকো। তোমরা খাদ্যের উপর একত্রিত হও এবং আল্লাহর নাম নিয়ে খেতে শুরু কর, তোমাদের খাদ্যে বরকত দেয়া হবে।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন)হযরত উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “তোমরা সবাই একত্রিতভাবে খাও, পৃথক পৃথকভাবে খেয়ো না। কেননা, বরকত জামাআতের উপর রয়েছে।” (এ হাদীসটি ইমাম ইবনে মাজাহ (রঃ) বর্ণনা করেছেন)এরপর শিক্ষা দেয়া হচ্ছেঃ যখন তোমরা গৃহে প্রবেশ করবে তখন তোমরা তোমাদের স্বজনদের প্রতি অভিবাদন স্বরূপ সালাম করবে। হযরত জাবির (রাঃ) বলেনঃ “যখন তোমরা ঘরে প্রবেশ করবে তখন আল্লাহ তা'আলার শেখানো বরকতময় উত্তম সালাম বলবে।
আমি তো পরীক্ষা করে দেখেছি যে, এটা সরাসরি বরকতই বটে।” ইবনে তাউস (রঃ) বলেনঃ “তোমাদের যে কেউ বাড়ীতে প্রবেশ করবে সে যেন বাড়ীর লোকদেরকে সালাম দেয়।” হযরত আতা (রঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হয়ঃ “এটা কি ওয়াজিব?” উত্তরে তিনি বলেনঃ “কেউ যে এটাকে ওয়াজিব বলেছেন তা আমার জানা নেই। তবে আমি এটা খুবই পছন্দ করি যে, যখনই তোমরা বাড়ীতে প্রবেশ করবে তখন সালাম দিয়ে প্রবেশ করবে। আমি তো এটা কখনো ছাড়িনি। তবে কোন সময় ভুলে গিয়ে থাকি। সেটা অন্য কথা।” মুজাহিদ (রঃ) বলেনঃ “যখন মসজিদে যাবে তখন বলবেঃ (আরবি) অর্থাৎ আল্লাহর রাসূল (সঃ)-এর উপর শান্তি বর্ষিত হোক।' যখন নিজের বাড়ীতে প্রবেশ করবে তখন নিজের ছেলে মেয়েদেরকে সালাম দিবে এবং যখন এমন কোন বাড়ীতে যাবে যেখানে কেউই নেই তখন বলবেঃ(আরবি) অর্থাৎ আমাদের উপর ও আল্লাহর সৎ বান্দাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক।' এটাই হুকুম দেয়া হচ্ছে। এইরূপ সময়ে তোমাদের সালামের জবাব আল্লাহর ফেরেশতারা দিয়ে থাকেন।"হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, নবী (সঃ) আমাকে পাঁচটি অভ্যাসের অসিয়ত করেছেন। তিনি বলেছেনঃ “হে আনাস (রাঃ)! তুমি পূর্ণভাবে অযু কর, তোমার বয়স বৃদ্ধি পাবে। আমার উম্মতের যার সাথেই তোমার সাক্ষাৎ হবে তাকেই সালাম দেবে, এর ফলে তোমার পুণ্য বেড়ে যাবে। যখন তুমি তোমার বাড়ীতে প্রবেশ করবে তখন তোমার পরিবারের লোককে সালাম দেবে, তাহলে তোমার বাড়ীর কল্যাণ বৃদ্ধি পাবে। চাশতের নামায পড়তে থাকবে, তোমাদের পূর্ববর্তী দ্বীনদার লোকদের এই নীতিই ছিল। হে আনাস (রাঃ)! ছোটদেরকে স্নেহ করবে এবং বড়দেরকে সম্মান করবে, তাহলে কিয়ামতের দিন তুমি আমার বন্ধুদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” (এ হাদীসটি হাফিয আবু বকর আল বাযযার (রঃ) বর্ণনা করেছেন)মহান আল্লাহ বলেনঃ এটা আল্লাহর নিকট হতে কল্যাণ ও পবিত্র।
অর্থাৎ এটা হলো দু'আয়ে খায়ের যা আল্লাহর পক্ষ হতে তোমাদেরকে শিক্ষা দেয়া হয়েছে। এটা কল্যাণময় ও পবিত্র।হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ “আমি তাশাহ্হুদ তো আল্লাহর কিতাব হতেই গ্রহণ করেছি। আমি আল্লাহকে বলতে শুনেছিঃ (আরবি)অর্থাৎ “যখন তোমরা গৃহে প্রবেশ করবে তখন তোমরা তোমাদের স্বজনদের প্রতি সালাম করবে অভিবাদন স্বরূপ যা আল্লাহর নিকট হতে কল্যাণময় ও পবিত্র।” সুতরাং নামাযের তাশাহহুদ হলোঃ (আরবি)অর্থাৎ কল্যাণময় অভিবাদন ও পবিত্র সালাত আল্লাহর জন্যে। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মা'বুদ নেই এবং আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সঃ) তাঁর বান্দা ও রাসূল। (হে নবী সঃ)! আপনার উপর শান্তি এবং আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক। আমাদের উপর এবং আল্লাহর সৎ বান্দাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। তারপর নামাযী ব্যক্তি নিজের জন্যে দু'আ করবে, অতঃপর সালাম ফিরাবে।” (এটা মুহাম্মদ ইবনে ইসহাক (রঃ) বর্ণনা করেছেন। আবার সহীহ মুসলিমে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতেই মারফু’রূপে যা বর্ণিত আছে তা এর বিপরীত। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাই সর্বাধিক সঠিক জ্ঞানের অধিকারী)অতঃপর মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ এইভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্যে তাঁর নির্দেশ বিশদভাবে বিবৃত করেন যাতে তোমরা বুঝতে পার এবং জ্ঞান লাভ কর।
৬২ নং আয়াতের তাফসীর: এখানে আল্লাহ তা'আলা স্বীয় মুমিন বান্দাদেরকে আরো একটি আদব বা ভদ্রতা শিক্ষা দিচ্ছেন। তিনি বলেনঃ যেমন তোমরা আগমনের সময় অনুমতি নিয়ে আগমন করে থাকো, অনুরূপভাবে প্রস্থানের সময়ও আমার নবী (সঃ)-এর কাছে অনুমতি নিয়ে প্রস্থান করো। বিশেষ করে যখন কোন সমাবেশ হবে এবং কোন জরুরী বিষয়ের উপর আলোচনা চলবে। যেমন জুমআর নামায, ঈদের নামায, কোন জামাআত এবং পরামর্শ সভা ইত্যাদি। এরূপ স্থলে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর কাছে অনুমতি না নেয়া পর্যন্ত তোমরা কখনো এদিক-ওদিক যাবে না। পূর্ণ মুমিনের এটাও একটা নিদর্শন।এরপর মহান আল্লাহ স্বীয় নবী (সঃ)-কে সম্বোধন করে বলেনঃ হে নবী (সঃ)! তারা তাদের কোন কাজে বাইরে যাবার জন্যে তোমার কাছে অনুমতি চাইলে তাদের মধ্যে যাদেরকে ইচ্ছা তুমি অনুমতি দেবে এবং তাদের জন্যে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনাও করবে।হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “তোমাদের কেউ যখন কোন মজলিসে যাবে তখন সে যেন মজলিসের লোকদেরকে সালাম করে। আর যখন সেখান হতে চলে আসার ইচ্ছা করবে তখনো যেন সালাম দিয়ে আসে। মর্যাদার দিক দিয়ে দ্বিতীয় বারের সালাম প্রথমবারের সালামের চেয়ে কোন অংশেই কম নয়।” (এ হাদীসটি ইমাম আৰু দাউদ (রঃ) ও ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রঃ) বর্ণনা করেছেন। ইমাম তিরমিযী (রঃ) ও ইমাম নাসাঈও (রঃ) এটা বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম তিরমিযী (রঃ) এটাকে হাসান হাদীস বলেছেন)
৬৩ নং আয়াতের তাফসীর: হযরত যহহাক (রঃ) এবং হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, লোকেরা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে ‘হে মুহাম্মাদ (সঃ)!' এবং 'হে আবুল কাসেম (সঃ)!' বলে আহ্বান করতো, যেমন তারা একে অপরকে ডেকে থাকে। আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে এই বেআদবী হতে নিষেধ করে দেন। তাদেরকে তিনি বলেনঃ তোমরা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নাম ধরে ডাকো না। বরং হে আল্লাহর নবী (সঃ)!’ বা ‘হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)!' এই বলে ডাকবে। তাহলে তাঁর বুযর্গী, মর্যাদা ও অদিবের প্রতি লক্ষ্য রাখা হবে। নিম্নলিখিত আয়াতগুলোও এই আয়াতের মতই। আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “হে মুমিনগণ!” রাইনা (হে নির্বোধ) বলো না, এবং ‘উনযুর না’ (আমাদের প্রতি লক্ষ্য করুন!) বলো, আর শুনে রেখো, কাফিরদের জন্যে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে।” (২: ১০৪) আর এক জায়গায় মহান আল্লাহ বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “হে মুমিনগণ! তোমরা নবী (সঃ)-এর কণ্ঠস্বরের উপর নিজেদের কণ্ঠস্বর উঁচু করো না এবং নিজেদের মধ্যে যেভাবে উচ্চ স্বরে কথা বল তার সাথে সেইরূপ উচ্চ স্বরে কথা বলো না, কারণ এতে তোমাদের কর্ম নিষ্ফল হয়ে যাবে তোমাদের অজ্ঞাতসারে।যারা আল্লাহর রাসূল (সঃ)-এর সামনে নিজেদের কণ্ঠস্বর নীচু করে, আল্লাহ তাদের অন্তরকে তাকওয়ার জন্যে পরিশোধিত করেছেন; তাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও মহা পুরস্কার।যারা ঘরের পিছন হতে তোমাকে উচ্চ স্বরে ডাকে, তাদের অধিকাংশই নির্বোধ। তুমি বের হয়ে তাদের নিকট আসা পর্যন্ত যদি তারা ধৈর্যধারণ করতো তবে তাই তাদের জন্যে উত্তম হতো; আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম, দয়ালু।” (৪৯;২-৫)
সুতরাং এসব দ্বারা মুমিনদেরকে দ্রতা শিখানো হয়েছে যে, তাঁকে কিভাবে সম্বোধন করতে হবে, কিভাবে তার সাথে কথাবার্তা বলতে হবে, কিভাবে তার সাথে আলাপ-আলোচনা করতে হবে ইত্যাদি। এমনকি পূর্বে তো তার সাথে আলাপ-আলোচনা করার সময় সাদকা করার হুকুম ছিল। এই আয়াতের একটি ভাবার্থততা এই হলো। দ্বিতীয় ভাবার্থ হলোঃ রাসূল (সঃ)-এর দু'আকে তোমরা তোমাদের পরস্পরের দু'আর মত মনে করো না। তার দু'আতো কবুল হবেই। সুতরাং সাবধান! তোমরা আমার নবী (সঃ)-কে কষ্ট দিয়ো না। অন্যথায় তোমাদের বিরুদ্ধে কোন বদদু'আ যদি তার মুখ দিয়ে বেরিয়ে পড়ে তবে তোমরা ধ্বংস হয়ে যাবে।এর পূর্ববর্তী বাক্যের তাফসীরে মুকাতিল ইবনে হাইয়ান (রঃ) বলেন যে, জুমআর দিন খুৎবায় বসে থাকা মুনাফিকদের কাছে খুবই ভারী বোধ হতো। আর মসজিদে এসে যাওয়া এবং খুৎবা শুরু হয়ে যাবার পর কেউ নবী (সঃ)-এর অনুমতি ছাড়া বাইরে যেতে পারতো না। কারো বাইরে যাওয়ার একান্ত প্রয়োজন হয়ে পড়লে সে নবী (সঃ)-এর কাছে অনুমতি চাইতো এবং তিনি তাকে অনুমতি দিতেন। কেননা, খুত্বার সময় কথা বললে জুমআ বাতিল হয়ে যায়। তখন এই মুনাফিক আড়ে আড়েই দৃষ্টি বাঁচিয়ে সটকে পড়তো। সুদ্দী (রঃ) বলেন যে, জামাআতে যখন এই মুনাফিক থাকতো তখন একে অপরের আড়ালে হয়ে পালিয়ে যেতো। আল্লাহর নবী (সঃ) হতে এবং তার কিতাব হতে সরে যেতো।
জামাআতের সারি হতে বেরিয়ে গিয়ে ইসলামের বিরোধিতায় উঠে পড়ে লেগে যেতো।যে ব্যক্তি রাসূল (সঃ)-এর আদেশের, তাঁর সুন্নাতের, তাঁর হুকুমের, তার নীতির এবং তাঁর শরীয়তের বিরুদ্ধাচরণ করবে সে শাস্তিপ্রাপ্ত হবে। মানুষের কথা ও কাজকে আল্লাহর রাসূল (সঃ)-এর সুন্নাত ও হাদীসের সাথে মিলানো উচিত। যদি তা তাঁর সুন্নাতের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় তবে তো তা ভাল। আর যদি সুন্নাতের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হয় তবে তা অবশ্যই অগ্রাহ্য।রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি এমন কাজ করে যার উপর আমার আদেশ নেই তা অগ্রাহ্য।” (এ হাদীসটি সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে) প্রকাশ্যে বা গোপনে যে কেউই শরীয়তে মুহাম্মাদীর (সঃ) বিপরীত করে, তার অন্তরে কুফরী, নিফাক, বিদাআত ও মন্দের বীজ বপন করে দেয়া হয়। তাকে কঠিন শাস্তি দেয়া হয়, হয়তো দুনিয়াতেই হত্যা, বন্দী, হদ ইত্যাদির মাধ্যমে অথবা পরকালের পারলৌকিক শাস্তি দ্বারা।হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বলতে শুনেছেনঃ “আমি এবং মানুষের দৃষ্টান্ত সেই ব্যক্তির ন্যায়, যে আগুন জ্বালালো। আর আগুন যখন তার চারপাশ আলোকিত করলো, পতঙ্গ ও যেসব প্রাণী আগুনে ঝাঁপ দেয় সেগুলো ঝাঁপ দিতে লাগলো। তখন সেই ব্যক্তি সেগুলোকে (আগুন থেকে ফিরাবার চেষ্টা করলো, তা সত্ত্বেও সেগুলো আগুনে পুড়ে মরে। সুতরাং এটাই আমার ও তোমাদের দৃষ্টান্ত। আমিও তোমাদের কোমর ধরে আগুন থেকে বাঁচাবার চেষ্টা করি, কিন্তু তোমরা তাতে পতিত হও। (হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) স্বীয় মুসনাদে বর্ণনা করেছেন। ইমাম বুখারী (রঃ) ও ইমাম ফুসলিমও (রঃ) এটা তাখরীজ করেছেন)
৬৪ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তা'আলা খবর দিচ্ছেন যে, যমীন ও আসমানের মালিক, অদৃশ্য ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা এবং বান্দাদের প্রকাশ্য ও গোপনীয় কার্যাবলীর জান্তা একমাত্র আল্লাহ। (আরবি)-এর (আরবি) শব্দটি তাহকীক বা নিশ্চয়তা বুঝাবার জন্যে এসেছে। যেমন এর পূর্ববর্তী আয়াতে রয়েছে(আরবি)জায়গায় আছেঃ (আরবি) (৩৩:১৮) আর এক আয়াতে রয়েছেঃ (আরবি) (৫৮: ১) অন্য একটি আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেনঃ (আরবি) (৬:৩৩) আর এক জায়গায় বলেছেনঃ (আরবি) (২:১৪৪) ইত্যাদি। এই সমুদয় স্থানে এসেছে বা ক্রিয়ার বা নিশ্চয়তা বুঝাবার জন্যে। যেমন মুআযযিন বলে থাকেন (আরবি) এখানেও (আরবি)শব্দটি নিশ্চয়তা বুঝাবার জন্যেই এসেছে। মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ তোমরা যাতে ব্যাপৃত রয়েছে তিনি তা জানেন। তোমরা যে অবস্থাতেই থাকে না কেন এবং যে আমল ও বিশ্বাসের উপর থাকে না কেন সবই তাঁর কাছে উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে। আসমান ও যমীনের অণু পরিমাণ জিনিসও তাঁর কাছে গোপন নেই। তোমাদের আমল ও অবস্থা সম্পর্কে তিনি পূর্ণ ওয়াকিফহাল। ক্ষুদ্র হতে ক্ষুদ্রতম বস্তুও তার কাছে প্রকাশমান। ছোট বড় সমস্ত জিনিস স্পষ্ট কিতাবে রক্ষিত রয়েছে। বান্দাদের ভাল-মন্দ সমস্ত কাজ তিনি পূর্ণভাবে পরিজ্ঞাত রয়েছেন। তোমরা কাপড়ের মধ্যে লুকিয়ে থাকো অথবা গোপনে গোপনে কিছু করো না কেন, আল্লাহর কাছে কিছুই গোপন থাকবে না। প্রকাশ্য ও গোপনীয় সবই তাঁর কাছে সমান। চুপি চুপি কথা এবং উচ্চ স্বরের কথা সবই তাঁর কানে পৌঁছে যায়। সমস্ত প্রাণীর রিযকদাতা তিনিই। প্রত্যেক প্রাণীর প্রত্যেক অবস্থার খবর তিনিই রাখেন। প্রথম থেকেই সব কিছু লাওহে মাহফুযে লিপিবদ্ধ রয়েছে। অদৃশ্যের চাবি তাঁরই হাতে আছে, যা তিনি ছাড়া আর কেউই জানে না। জলে ও স্থলে অবস্থানরত সব কিছুর খবর একমাত্র তিনিই রাখেন। গাছের একটি পাতা ঝরে পড়লে সেটাও তাঁর অজানা থাকে না। যমীনের অন্ধকারের মধ্যে কোন দানা নেই এবং শুষ্ক ও সিক্ত এমন কোন জিনিস নেই যা স্পষ্ট কিতাবে লিপিবদ্ধ নেই।
এই বিষয়ের বহু আয়াত এবং হাদীস রয়েছে। যখন সৃষ্টজীব আল্লাহ তা'আলার নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে, ঐ সময় তাদের সামনে ক্ষুদ্র হতে ক্ষুদ্রতম পুণ্য ও পাপ পেশ করা হবে। তারা তাদের পূর্বের ও পরের সমস্ত আমল দেখতে পাবে। আমলনামা তারা ভীত ও কম্পিতভাবে দেখবে এবং ওর মধ্যে তাদের সারা জীবনের কার্যাবলী দেখতে পেয়ে অত্যন্ত বিস্ময়ের সুরে বলবেঃ “এটা কেমন কিতাব যে, এতে বড় তত বড়ই এমনকি ক্ষুদ্র হতে ক্ষুদ্রতম কোন কিছুও বাদ পড়েনি!” যে যা করেছে তার সবই সেখানে বিদ্যমান পাবে। যেমন মহামহিমান্বিত ও প্রবল প্রতাপান্বিত আল্লাহ বলেনঃ (আরবি)অর্থাৎ “সেদিন মানুষকে অবহিত করা হবে সে কি অগ্রে পাঠিয়েছে এবং কি পশ্চাতে রেখে গিয়েছে।” (৭৫: ১৩) আর এক জায়গায় তিনি বলেনঃ (আরবি)অর্থাৎ “আর হাযির করা হবে আমলনামা এবং তাতে যা লিপিবদ্ধ আছে তার কারণে তুমি অপরাধীদেরকে দেখবে আতংকগ্রস্ত এবং তারা বলবেঃ হায়! দুর্ভাগ্য আমাদের! এটা কেমন গ্রন্থ! এটা ছোট বড় কিছুই বাদ দেয় না; রবং ওটা সমস্ত হিসাব রেখেছে। তারা তাদের কৃতকর্ম সামনে হাযির পাবে; তোমার প্রতিপালক কারো প্রতি যুলুম করেন না।” (১৮:৪৯)এজন্যেই মহান আল্লাহ এখানে বলেনঃ যেদিন তারা তাঁর নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে সেদিন তিনি তাদেরকে জানিয়ে দিবেন তারা যা করতো। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ।
HADITH
39. Kafalah | যামিন হওয়া | 2290-2294
(1) Chapter: Al-Kafala
(1) باب الْكَفَالَةِ فِي الْقَرْضِ وَالدُّيُونِ بِالأَبْدَانِ وَغَيْرِهَا
পরিচ্ছেদঃ ৩৯/১. দেনা ও কর্জের ব্যাপারে দেহ এবং অন্য কিছুর আর্থিক দায় প্রসঙ্গে।
Narrated Muhammad bin 'Amr Al-Aslami that his father Hamza said:
'Umar (ra) sent him (i.e. Hamza) as a Sadaqa / Zakat collector. A man had committed illegal sexual intercourse with the slave girl of his wife. Hamza took (personal) sureties for the adulterer till they came to 'Umar. 'Umar had lashed the adulterer one hundred lashes. 'Umar confirmed their claim (that the adulterer had already been punished) and excused him because of being Ignorant. Jarir Al-Ash'ath said to Ibn Mas'ud regarding renegades (i.e., those who became infidels after embracing Islam), "Let them repent and take (personal) sureties for them." They repented and their relatives stood sureties for them. According to Hammad, if somebody stands surety for another person and that person dies, the person giving surety will be released from responsibility. According to Al-Hakam, his responsibilities continues.
وَقَالَ أَبُو الزِّنَادِ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ حَمْزَةَ بْنِ عَمْرٍو الأَسْلَمِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ عُمَرَ ـ رضى الله عنه ـ بَعَثَهُ مُصَدِّقًا، فَوَقَعَ رَجُلٌ عَلَى جَارِيَةِ امْرَأَتِهِ، فَأَخَذَ حَمْزَةُ مِنَ الرَّجُلِ كَفِيلاً حَتَّى قَدِمَ عَلَى عُمَرَ، وَكَانَ عُمَرُ قَدْ جَلَدَهُ مِائَةَ جَلْدَةٍ، فَصَدَّقَهُمْ، وَعَذَرَهُ بِالْجَهَالَةِ. وَقَالَ جَرِيرٌ وَالأَشْعَثُ لِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ فِي الْمُرْتَدِّينَ اسْتَتِبْهُمْ، وَكَفِّلْهُمْ. فَتَابُوا وَكَفَلَهُمْ عَشَائِرُهُمْ. وَقَالَ حَمَّادٌ إِذَا تَكَفَّلَ بِنَفْسٍ فَمَاتَ فَلاَ شَىْءَ عَلَيْهِ. وَقَالَ الْحَكَمُ يَضْمَنُ.
২২৯০. আবূ যিনাদ (রহ.) মুহাম্মাদ ইবনু হামযা ইবনু আমর আসলামী (রহ.)-এর মাধ্যমে তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন যে, ‘উমার (রাঃ) তাঁকে সাদকা উশুলকারী নিযুক্ত করে পাঠান। সেখানে এক ব্যক্তি তার স্ত্রীর দাসীর সাথে ব্যভিচার করে বসল। তখন হামযা (রহ.) কিছু লোককে তার পক্ষ হতে যামিন স্থির করলেন। পরে তিনি ‘উমার (রাঃ)-এর নিকট ফিরে আসলেন। ‘উমার (রাঃ) উক্ত লোকটিকে একশ’ বেত্রাঘাত করলেন এবং লোকদের বিবরণকে সত্য বলে গ্রহণ করলেন। তারপর লোকটিকে তার অজ্ঞতার জন্য (স্ত্রীর দাসীর সাথে যৌন সম্ভোগ করা যে অবৈধ তা সে জানত না) অব্যাহতি দেন। জরীর ও ‘আশ‘আস (রহ.) মুরতাদ-ধর্মচ্যুত ব্যক্তিদের সম্পর্কে ‘আবদুল্লাহ [ইবনু মাসঊদ (রাঃ)]-কে বলেন, তাদেরকে তওবা করতে বলুন এবং গোত্রের লোকেরা তাদের যামিন হয়ে গেল। হাম্মাদ (রহ.) বলেন, যদি কোন ব্যক্তি যামিন হবার পর মৃত্যুবরণ করে তবে সে দায়মুক্ত হয়ে যাবে। হাকাম (রহ.) বলেন, তার উপর দায়িত্ব থেকে যাবে (অর্থাৎ ওয়ারিশদের উপর সে দায়িত্ব বর্তাবে)।
Narrated Abu Huraira:
The Prophet (ﷺ) said, "An Israeli man asked another Israeli to lend him one thousand Dinars. The second man required witnesses. The former replied, 'Allah is sufficient as a witness.' The second said, 'I want a surety.' The former replied, 'Allah is sufficient as a surety.' The second said, 'You are right,' and lent him the money for a certain period. The debtor went across the sea. When he finished his job, he searched for a conveyance so that he might reach in time for the repayment of the debt, but he could not find any. So, he took a piece of wood and made a hole in it, inserted in it one thousand Dinars and a letter to the lender and then closed (i.e. sealed) the hole tightly. He took the piece of wood to the sea and said. 'O Allah! You know well that I took a loan of one thousand Dinars from so-and-so. He demanded a surety from me but I told him that Allah's Guarantee was sufficient and he accepted Your guarantee. He then asked for a witness and I told him that Allah was sufficient as a Witness, and he accepted You as a Witness. No doubt, I tried hard to find a conveyance so that I could pay his money but could not find, so I hand over this money to You.' Saying that, he threw the piece of wood into the sea till it went out far into it, and then he went away. Meanwhile he started searching for a conveyance in order to reach the creditor's country.
One day the lender came out of his house to see whether a ship had arrived bringing his money, and all of a sudden he saw the piece of wood in which his money had been deposited. He took it home to use for fire. When he sawed it, he found his money and the letter inside it. Shortly after that, the debtor came bringing one thousand Dinars to him and said, 'By Allah, I had been trying hard to get a boat so that I could bring you your money, but failed to get one before the one I have come by.' The lender asked, 'Have you sent something to me?' The debtor replied, 'I have told you I could not get a boat other than the one I have come by.' The lender said, 'Allah has delivered on your behalf the money you sent in the piece of wood. So, you may keep your one thousand Dinars and depart guided on the right path.' "
قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي جَعْفَرُ بْنُ رَبِيعَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ هُرْمُزَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَنَّهُ ذَكَرَ رَجُلاً مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ سَأَلَ بَعْضَ بَنِي إِسْرَائِيلَ أَنْ يُسْلِفَهُ أَلْفَ دِينَارٍ، فَقَالَ ائْتِنِي بِالشُّهَدَاءِ أُشْهِدُهُمْ. فَقَالَ كَفَى بِاللَّهِ شَهِيدًا. قَالَ فَأْتِنِي بِالْكَفِيلِ. قَالَ كَفَى بِاللَّهِ كَفِيلاً. قَالَ صَدَقْتَ. فَدَفَعَهَا إِلَيْهِ إِلَى أَجَلٍ مُسَمًّى، فَخَرَجَ فِي الْبَحْرِ، فَقَضَى حَاجَتَهُ، ثُمَّ الْتَمَسَ مَرْكَبًا يَرْكَبُهَا، يَقْدَمُ عَلَيْهِ لِلأَجَلِ الَّذِي أَجَّلَهُ، فَلَمْ يَجِدْ مَرْكَبًا، فَأَخَذَ خَشَبَةً، فَنَقَرَهَا فَأَدْخَلَ فِيهَا أَلْفَ دِينَارٍ، وَصَحِيفَةً مِنْهُ إِلَى صَاحِبِهِ، ثُمَّ زَجَّجَ مَوْضِعَهَا، ثُمَّ أَتَى بِهَا إِلَى الْبَحْرِ، فَقَالَ اللَّهُمَّ إِنَّكَ تَعْلَمُ أَنِّي كُنْتُ تَسَلَّفْتُ فُلاَنًا أَلْفَ دِينَارٍ، فَسَأَلَنِي كَفِيلاً، فَقُلْتُ كَفَى بِاللَّهِ كَفِيلاً، فَرَضِيَ بِكَ، وَسَأَلَنِي شَهِيدًا، فَقُلْتُ كَفَى بِاللَّهِ شَهِيدًا، فَرَضِيَ بِكَ، وَأَنِّي جَهَدْتُ أَنْ أَجِدَ مَرْكَبًا، أَبْعَثُ إِلَيْهِ الَّذِي لَهُ فَلَمْ أَقْدِرْ، وَإِنِّي أَسْتَوْدِعُكَهَا. فَرَمَى بِهَا فِي الْبَحْرِ حَتَّى وَلَجَتْ فِيهِ، ثُمَّ انْصَرَفَ، وَهْوَ فِي ذَلِكَ يَلْتَمِسُ مَرْكَبًا، يَخْرُجُ إِلَى بَلَدِهِ، فَخَرَجَ الرَّجُلُ الَّذِي كَانَ أَسْلَفَهُ، يَنْظُرُ لَعَلَّ مَرْكَبًا قَدْ جَاءَ بِمَالِهِ، فَإِذَا بِالْخَشَبَةِ الَّتِي فِيهَا الْمَالُ، فَأَخَذَهَا لأَهْلِهِ حَطَبًا، فَلَمَّا نَشَرَهَا وَجَدَ الْمَالَ وَالصَّحِيفَةَ، ثُمَّ قَدِمَ الَّذِي كَانَ أَسْلَفَهُ، فَأَتَى بِالأَلْفِ دِينَارٍ، فَقَالَ وَاللَّهِ مَا زِلْتُ جَاهِدًا فِي طَلَبِ مَرْكَبٍ لآتِيَكَ بِمَالِكَ، فَمَا وَجَدْتُ مَرْكَبًا قَبْلَ الَّذِي أَتَيْتُ فِيهِ. قَالَ هَلْ كُنْتَ بَعَثْتَ إِلَىَّ بِشَىْءٍ قَالَ أُخْبِرُكَ أَنِّي لَمْ أَجِدْ مَرْكَبًا قَبْلَ الَّذِي جِئْتُ فِيهِ. قَالَ فَإِنَّ اللَّهَ قَدْ أَدَّى عَنْكَ الَّذِي بَعَثْتَ فِي الْخَشَبَةِ فَانْصَرِفْ بِالأَلْفِ الدِّينَارِ رَاشِدًا ".
২২৯১. লায়স (রহ.) ... আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বনী ইসরাঈলের কোন এক ব্যক্তি বনী ইসরাঈলের অপর এক ব্যক্তির নিকট এক হাজার দ্বীনার ঋণ চাইল। তখন সে (ঋণদাতা) বলল, কয়েকজন সাক্ষী আন, আমি তাদেরকে সাক্ষী রাখব। সে বলল, সাক্ষী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট। তারপর (ঋণদাতা) বলল, তা হলে একজন যামিনদার উপস্থিত কর। সে বলল, যামিনদার হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট। ঋণদাতা বলল, তুমি সত্যই বলেছ। এরপর নির্ধারিত সময়ে পরিশোধের শর্তে তাকে এক হাজার দ্বীনার দিয়ে দিল। তারপর ঋণ গ্রহীতা সামুদ্রিক সফর করল এবং তার প্রয়োজন সমাধা করে সে যানবাহন খুঁজতে লাগল, যাতে সে নির্ধারিত সময়ের ভেতর ঋণদাতার কাছে এসে পৌঁছতে পারে। কিন্তু সে কোন যানবাহন পেল না। তখন সে এক টুকরো কাঠ নিয়ে তা ছিদ্র করল এবং ঋণদাতার নামে একখানা পত্র ও এক হাজার দ্বীনার তার মধ্যে ভরে ছিদ্রটি বন্ধ করে সমুদ্র তীরে এসে বলল, হে আল্লাহ! তুমি তো জান আমি অমুকের নিকট এক হাজার দ্বীনার ঋণ চাইলে সে আমার কাছে যামিনদার চেয়েছিল। আমি বলেছিলাম, আল্লাহই যামিন হিসাবে যথেষ্ট। এতে সে রাজী হয়। তারপর সে আমার কাছে সাক্ষী চেয়েছিল, আমি বলেছিলাম সাক্ষী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট, তাতে সে রাজী হয়ে যায়। আমি তার ঋণ (যথাসময়ে) পরিশোধের উদ্দেশে যানবাহনের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি, কিন্তু পাইনি। তাই আমি তোমার নিকট সোপর্দ করলাম, এই বলে সে কাষ্ঠখন্ডটি সমুদ্রে নিক্ষেপ করল। আর কাষ্ঠখন্ডটি সমুদ্রে প্রবেশ করল। অতঃপর লোকটি ফিরে গেল এবং নিজের শহরে যাওয়ার জন্য যানবাহন খুঁজতে লাগল। ওদিকে ঋণদাতা এই আশায় সমুদ্রতীরে গেল যে, হয়ত বা ঋণগ্রহীতা কোন নৌযানে করে তার মাল নিয়ে এসেছে। তার দৃষ্টি কাষ্ঠখন্ডটির উপর পড়ল, যার ভিতরে মাল ছিল। সে কাষ্ঠখন্ডটি তার পরিবারের জ্বালানীর জন্য বাড়ী নিয়ে গেল। যখন সে তা চিরল, তখন সে মাল ও পত্রটি পেয়ে গেল। কিছুদিন পর ঋণগ্রহীতা এক হাজার দ্বীনার নিয়ে এসে হাযির হল এবং বলল, আল্লাহর কসম! আমি আপনার মাল যথাসময়ে পৌঁছিয়ে দেয়ার উদ্দেশে সব সময় যানবাহনের খোঁজে ছিলাম। কিন্তু আমি যে নৌযানে এখন আসলাম, তার আগে আর কোন নৌযান পাইনি। ঋণদাতা বলল, তুমি কি আমার নিকট কিছু পাঠিয়েছিলে? ঋণগ্রহীতা বলল, আমি তো তোমাকে বললামই যে, এর আগে আর কোন নৌযান আমি পাইনি। সে বলল, তুমি কাঠের টুকরোর ভিতরে যা পাঠিয়েছিলে, তা আল্লাহ তোমার পক্ষ হতে আমাকে আদায় করে দিয়েছেন। তখন সে আনন্দচিত্তে এক হাজার দ্বীনার নিয়ে ফিরে চলে এল।
(2) Chapter: The Statement of Allah jala jalaaluhu:"... To those also with whom you have made a pledge, give them their due portion by Wasiya..."
(2) بَابُ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: {وَالَّذِينَ عَاقَدَتْ أَيْمَانُكُمْ فَآتُوهُمْ نَصِيبَهُمْ}
পরিচ্ছেদঃ ৩৯/২. আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ ‘‘যাদের সঙ্গে তোমরা প্রতিশ্রতিবদ্ধ তাদেরকে তাদের অংশ দিয়ে দিবে।’’ (আন-নিসাঃ ৩৩)
Narrated Sa`id bin Jubair:
Ibn `Abbas said, "In the verse: To every one We have appointed ' (Muwaliya Muwaliya means one's) heirs (4.33).' (And regarding the verse) 'And those with whom your right hands have made a pledge.' Ibn `Abbas said, "When the emigrants came to the Prophet (ﷺ) in Medina, the emigrant would inherit the Ansari while the latter's relatives would not inherit him because of the bond of brotherhood which the Prophet established between them (i.e. the emigrants and the Ansar). When the verse: 'And to everyone We have appointed heirs' (4.33) was revealed, it canceled (the bond (the pledge) of brotherhood regarding inheritance)." Then he said, "The verse: To those also to whom your right hands have pledged, remained valid regarding cooperation and mutual advice, while the matter of inheritance was excluded and it became permissible to assign something in one's testament to the person who had the right of inheriting before.
حَدَّثَنَا الصَّلْتُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ إِدْرِيسَ، عَنْ طَلْحَةَ بْنِ مُصَرِّفٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما – {وَلِكُلٍّ جَعَلْنَا مَوَالِيَ} قَالَ وَرَثَةً {وَالَّذِينَ عَقَدَتْ أَيْمَانُكُمْ} قَالَ كَانَ الْمُهَاجِرُونَ لَمَّا قَدِمُوا الْمَدِينَةَ يَرِثُ الْمُهَاجِرُ الأَنْصَارِيَّ دُونَ ذَوِي رَحِمِهِ لِلأُخُوَّةِ الَّتِي آخَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَيْنَهُمْ، فَلَمَّا نَزَلَتْ {وَلِكُلٍّ جَعَلْنَا مَوَالِيَ} نَسَخَتْ، ثُمَّ قَالَ {وَالَّذِينَ عَقَدَتْ أَيْمَانُكُمْ } إِلاَّ النَّصْرَ وَالرِّفَادَةَ وَالنَّصِيحَةَ، وَقَدْ ذَهَبَ الْمِيرَاثُ وَيُوصِي لَهُ.
২২৯২. ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ( وَلِكُلٍّ جَعَلْنَا مَوَالِيَ ) আয়াতে (مَوَالِيَ) শব্দের অর্থ উত্তরাধিকারী। আর( وَلِكُلٍّ جَعَلْنَا مَوَالِيَ ) আয়াতের তাফসীর প্রসঙ্গে তিনি [ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)] বলেন, (وَالَّذِينَ عَاقَدَتْ أَيْمَانُكُمْ) মদ্বীনায় মুহাজিরদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে আগমনের পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন স্থাপন করেন, তার ভিত্তিতে মুহাজিররা আনসারদের উত্তরাধিকারী হত, কিন্তু আনসারদের আত্মীয়-স্বজনরা ওয়ারিশ হত না। যখন ( وَلِكُلٍّ جَعَلْنَا مَوَالِيَ ) এ আয়াত নাযিল হল, তখন (وَالَّذِينَ عَاقَدَتْ أَيْمَانُكُمْ) আয়াতের হুকুম রহিত হয়ে গেল। তারপর তিনি আরো বলেন, উপরোক্ত আয়াতের প্রেক্ষিতে মুহাজির ও আনসারদের পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতা ও আদেশ-উপদেশের হুকুম বাকী রয়েছে। কিন্তু তাদের জন্য মীরাস বা উত্তরাধিকার স্বত্ব রহিত হয়ে গেছে। অবশ্য তাদের জন্য ওসীয়াত করা যেতে পারে।
Narrated Anas:
`Abdur-Rahman bin `Auf came to us and Allah's Messenger (ﷺ) established a bond of brotherhood between him and Sa`d bin Rabi`a.
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ حُمَيْدٍ، عَنْ أَنَسٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَدِمَ عَلَيْنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ فَآخَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَهُ وَبَيْنَ سَعْدِ بْنِ الرَّبِيعِ.
২২৯৩. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাঃ) যখন আমাদের নিকট (মদ্বীনায়) আসেন, তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ও সা‘দ ইবনু রাবী‘ এর মধ্যে ভ্রাতৃত্ব সম্পর্ক স্থাপন করেন।
Narrated `Asim:
I heard Anas bin Malik, "Have you ever heard that the Prophet (ﷺ) said, 'There is no alliance in Islam?' " He replied, "The Prophet (ﷺ) made alliance between Quraish and the Ansar in my house."
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ زَكَرِيَّاءَ، حَدَّثَنَا عَاصِمٌ، قَالَ قُلْتُ لأَنَسٍ رضى الله عنه أَبَلَغَكَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ حِلْفَ فِي الإِسْلاَمِ ". فَقَالَ قَدْ حَالَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ قُرَيْشٍ وَالأَنْصَارِ فِي دَارِي.
২২৯৪. আসিম (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনার নিকট কি এ হাদীস পৌঁছেছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ইসলামে হিল্ফ (জাহিলী যুগের সহযোগিতা চুক্তি) নেই? তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার ঘরে কুরায়শ এবং আনসারদের মধ্যে সহযোগিতা চুক্তি সম্পাদন করেছিলেন।
YOUTH
WORSHIPPING ALLAH
Khushoo' During Prayer
Khushoo' means that you feel humble when you stand in front of Allah. It means that you focus on your prayer and that you are not distracted by other things. Khushoo' means that you feel a strong love for Allah in your heart while you pray. Some people have so much khushoo' when they pray that it makes them cry. This is what you felt.
Praying Always and on Time
When asked about the best of works, the Prophet, peace and blessings be upon him, replied, "Prayer at its time" (Reported by Al-Bukhari and Muslim)
Once, a young companion of the Prophet named Rabi'ah bin Ka'ab came to the Prophet. Rabi'ah was 14 years old. He wanted to be with the Prophet in Jannah. The Prophet asked him, "Is there anything else that you want, Rabi'ah?" Rabi'ah answered, "No, all that I want is to be with you in Jannah." The Prophet said: "Then, help yourself by making plenty of salah."
Make sure that you pray all of your salah and Sunnah Salah on time and you will be with the Prophet in Jannah, too, inshaAllah!
Questions
Do you sometimes get absent minded during prayer?
Do you enjoy prayer when you are busy thinking of other things?
What is khushoo'?
What is the best of deeds?
What should we do to be with the Prophet in Jannah?