1443H Week-11
Friday, 22 October 2021
QURAN
Al-Mu'minun | The Believers | Verse 101-107
فَإِذَا نُفِخَ فِى ٱلصُّورِ فَلَآ أَنسَابَ بَيْنَهُمْ يَوْمَئِذٍ وَلَا يَتَسَآءَلُونَ
অতঃপর যে দিন শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে সেদিন পরস্পরের মধ্যে আত্মীয়তার বন্ধন থাকবেনা, এবং একে অপরের খোঁজ খবর নিবেনা।
— Sheikh Mujibur Rahman
So when the Horn is blown, no relationship will there be among them that Day, nor will they ask about one another.
— Saheeh International
فَمَن ثَقُلَتْ مَوَٰزِينُهُۥ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ هُمُ ٱلْمُفْلِحُونَ
সুতরাং যাদের পাল্লা ভারী হবে তারাই হবে সফলকাম।
— Sheikh Mujibur Rahman
And those whose scales are heavy [with good deeds] - it is they who are the successful.
— Saheeh International
وَمَنْ خَفَّتْ مَوَٰزِينُهُۥ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ خَسِرُوٓا۟ أَنفُسَهُمْ فِى جَهَنَّمَ خَـٰلِدُونَ
আর যাদের পাল্লা হালকা হবে তারাই নিজেদের ক্ষতি করেছে; তারা জাহান্নামে স্থায়ী হবে।
— Sheikh Mujibur Rahman
But those whose scales are light - those are the ones who have lost their souls, [being] in Hell, abiding eternally.
— Saheeh International
تَلْفَحُ وُجُوهَهُمُ ٱلنَّارُ وَهُمْ فِيهَا كَـٰلِحُونَ
আগুন তাদের মুখমন্ডল দগ্ধ করবে এবং তারা সেখানে থাকবে বীভৎস চেহারায়।
— Sheikh Mujibur Rahman
The Fire will sear their faces, and they therein will have taut smiles.1
— Saheeh International
أَلَمْ تَكُنْ ءَايَـٰتِى تُتْلَىٰ عَلَيْكُمْ فَكُنتُم بِهَا تُكَذِّبُونَ
তোমাদের নিকট কি আমার আয়াতসমূহ আবৃত্তি হতনা? অথচ তোমরা ওগুলি অস্বীকার করতে!
— Sheikh Mujibur Rahman
[It will be said], "Were not My verses recited to you and you used to deny them?"
— Saheeh International
قَالُوا۟ رَبَّنَا غَلَبَتْ عَلَيْنَا شِقْوَتُنَا وَكُنَّا قَوْمًا ضَآلِّينَ
তারা বলবেঃ হে আমাদের রাব্ব! দুর্ভাগ্য আমাদেরকে পেয়ে বসেছিল এবং আমরা ছিলাম এক বিভ্রান্ত সম্প্রদায়।
— Sheikh Mujibur Rahman
They will say, "Our Lord, our wretchedness overcame us, and we were a people astray.
— Saheeh International
رَبَّنَآ أَخْرِجْنَا مِنْهَا فَإِنْ عُدْنَا فَإِنَّا ظَـٰلِمُونَ
হে আমাদের রাব্ব! এই আগুন হতে আমাদেরকে উদ্ধার করুন; অতঃপর আমরা যদি পুনরায় কুফরী করি তাহলেতো আমরা অবশ্যই সীমালংঘনকারী হব।
— Sheikh Mujibur Rahman
Our Lord, remove us from it, and if we were to return [to evil], we would indeed be wrongdoers."
— Saheeh International
Tafsir Ibn Kathir
The sounding of the Trumpet and the weighing of Deeds in the Scales.
Allah says that when the Trumpet is blown for the Resurrection, and the people rise from their graves,
فَلاَ أَنسَـبَ بَيْنَهُمْ يَوْمَئِذٍ وَلاَ يَتَسَآءَلُونَ
(there will be no kinship among them that Day, nor will they ask of one another.) meaning that lineage will be of no avail on that Day, and a father will not ask about his son or care about him. Allah says:
وَلاَ يَسْـَلُ حَمِيمٌ حَمِيماً يُبَصَّرُونَهُمْ
(And no friend will ask a friend (about his condition), though they shall be made to see one another) 70:10-11. meaning, no relative will ask about another relative, even if he can see him and even if he is carrying a heavy burden. Even if he was the dearest of people to him in this world, he will not care about him or take even the slightest part of his burden from him. Allah says:
يَوْمَ يَفِرُّ الْمَرْءُ مِنْ أَخِيهِ - وَأُمِّهِ وَأَبِيهِ - وَصَـحِبَتِهُ وَبَنِيهِ
(That Day shall a man flee from his brother. And from his mother and his father. And from his wife and his children.) 80:34-36 Ibn Mas`ud said, "On the Day of Resurrection, Allah will gather the first and the last, then a voice will call out, `Whoever is owed something by another, let him come forth and take it.' And a man will rejoice if he is owed something or had been mistreated by his father or child or wife, even if it is little. " This is confirmed in the Book of Allah, where Allah says:
فَإِذَا نُفِخَ فِى الصُّورِ فَلاَ أَنسَـبَ بَيْنَهُمْ يَوْمَئِذٍ وَلاَ يَتَسَآءَلُونَ
(Then, when the Trumpet is blown, there will be no kinship among them that Day, nor will they ask of one another.) This was recorded by Ibn Abi Hatim.
فَمَن ثَقُلَتْ مَوَزِينُهُ فَأُوْلَـئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
(Then, those whose Scales are heavy, these! they are the successful.) means, the one whose good deeds outweigh his bad deeds, even by one. This was the view of Ibn `Abbas.
فَأُوْلَـئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
(they are the successful.) means, those who have attained victory and been saved from Hell and admitted to Paradise. Ibn `Abbas said, "These are the ones who have attained what they wanted and been saved from an evil from which there is no escape."
وَمَنْ خَفَّتْ مَوَزِينُهُ
(And those whose Scales are light,) means, their evil deeds outweigh their good deeds.
فَأُوْلَـئِكَ الَّذِينَ خَسِرُواْ أَنفُسَهُم
(they are those who lose themselves,) means, they are doomed and have ended up with the worst deal. Allah says:
فِى جَهَنَّمَ خَـلِدُونَ
(in Hell will they abide. ) meaning, they will stay there forever and will never leave.
تَلْفَحُ وُجُوهَهُمُ النَّارُ
(The Fire will burn their faces,) This is like the Ayah:
وَتَغْشَى وُجُوهَهُمْ النَّارُ
(and fire will cover their faces) 14:50. and:
لَوْ يَعْلَمُ الَّذِينَ كَفَرُواْ حِينَ لاَ يَكُفُّونَ عَن وُجُوهِهِمُ النَّارَ وَلاَ عَن ظُهُورِهِمْ
(If only those who disbelieved knew (the time) when they will not be able to ward off the Fire from their faces, nor from their backs) 21:39.
وَهُمْ فِيهَا كَـلِحُونَ
(and therein they will grin, with displaced lips.) `Ali bin Abi Talhah narrated from Ibn `Abbas, "Frowning."
Rebuking the People of Hell, their admission of Their Wretchedness and their Request to be brought out of Hell
This is a rebuke from Allah to the people of Hell for the disbelief, sins, unlawful deeds and evil actions that they committed, because of which they were doomed. Allah says:
أَلَمْ تَكُنْ ءَايَـتِى تُتْلَى عَلَيْكُمْ فَكُنْتُمْ بِهَا تُكَذِّبُونَ
("Were not My Ayat recited to you, and then you used to deny them") meaning, `I sent Messengers to you, and revealed Books, and cleared the confusion for you, so you have no excuse.' This is like the Ayat:
لِئَلاَّ يَكُونَ لِلنَّاسِ عَلَى اللَّهِ حُجَّةٌ بَعْدَ الرُّسُلِ
(in order that mankind should have no plea against Allah after the Messengers) 4:165
وَمَا كُنَّا مُعَذِّبِينَ حَتَّى نَبْعَثَ رَسُولاً
(And We never punish until We have sent a Messenger) 17:15.
كُلَّمَا أُلْقِىَ فِيهَا فَوْجٌ سَأَلَهُمْ خَزَنَتُهَآ أَلَمْ يَأْتِكُمْ نَذِيرٌ
(Every time a group is cast therein, its keeper will ask: "Did no warner come to you") Until His saying;
فَسُحْقًا لاًّصْحَـبِ السَّعِيرِ
(So, away with the dwellers of the blazing Fire!) They will say:
رَبَّنَا غَلَبَتْ عَلَيْنَا شِقْوَتُنَا وَكُنَّا قَوْماً ضَآلِّينَ
(Our Lord! Our wretchedness overcame us, and we were (an) erring people.) meaning, evidence has been established against us, but we were so doomed that we could not follow it, so we went astray and were not guided. Then they will say:
رَبَّنَآ أَخْرِجْنَا مِنْهَا فَإِنْ عُدْنَا فَإِنَّا ظَـلِمُونَ
(Our Lord! Bring us out of this. If ever we return (to evil), then indeed we shall be wrongdoers.) meaning, send us back to the world, and if we go back to what we used to do before, then we will indeed be wrongdoers who deserve punishment. This is like the Ayat:
فَاعْتَرَفْنَا بِذُنُوبِنَا فَهَلْ إِلَى خُرُوجٍ مِّن سَبِيلٍ
(Now we confess our sins, then is there any way to get out) Until His statement:
فَالْحُكْمُ للَّهِ الْعَلِـىِّ الْكَبِيرِ
(So the judgment is only with Allah, the Most High, the Most Great!") 40:11-12 meaning, there will be no way out, because you used to associate partners in worship with Allah whereas the believers worshipped Him Alone.
তাফসীর ইবনে কাছীর
১০১-১০৪ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তা'আলা খবর দিচ্ছেন যে, যখন পুনরুত্থানের জন্যে শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে এবং মানুষ জীবিত হয়ে কবর হতে বেরিয়ে পড়বে তখন আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে এবং একে অপরের কোন খোঁজ খবর নিবে না। না পিতার সন্তানের উপর কোন ভালবাসা থাকবে, না সন্তান পিতার দুঃখে দুঃখিত হবে। অন্য জায়গায় আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “সুহৃদ সুহৃদের তত্ত্ব নিবে না, তাদের এককে অপরের দৃষ্টি গোচর করা হবে।” (৭০-১০-১১) আর এক জায়গায় আছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “সেই দিন মানুষ পলায়ন করবে তার ভ্রাতা হতে, তার মাতা, তার পিতা, তার পত্নী ও তার সন্তান হতে।” (৮০:৩৪-৩৬)
হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন যে, আল্লাহ তা'আলা কিয়ামতের দিন পূর্ববর্তী ও পরবর্তী লোকদেরকে একত্রিত করবেন। অতঃপর একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করবেনঃ “যার কোন হক অন্যের উপর রয়েছে সে যেন এসে তার হক তার নিকট থেকে নিয়ে যায়।” এ কথা শুনে কারো হক তার পিতার উপর থাকলে বা পুত্রের উপর থাকলে অথবা স্ত্রীর উপর থাকলে সেও আনন্দিত হয়ে দৌড়িয়ে আসবে এবং নিজের হক বা প্রাপ্যের জন্যে তার কাছে তাগাদা শুরু করে দেবে। যেমন এই আয়াতে রয়েছে। (এটা ইবনে আবি হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন)মিসওয়ার ইবনে মাখরামা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “ফাতেমা (রাঃ) আমার দেহের একটা অংশ। যে তাকে কষ্ট দেয় সে আমাকেও কষ্ট দেয়। আর যে তাকে খুশী করে সে আমাকেও খুশী করে। কিয়ামতের দিন সমস্ত আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে, কিন্তু আমার আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন হবে না।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন)এই হাদীসের মূল সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমেও রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “ফাতেমা (রাঃ) আমার দেহের একটা অংশ। তাকে অসন্তুষ্টকারী ও কষ্টদানকারী আমাকেও অসন্তুষ্টকারী ও কষ্টদানকারী।”
হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে মিম্বরের উপর বলতে শুনেছেনঃ “লোকদের কি হয়েছে যে, তারা বলে-রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর আত্মীয়তার সম্পর্কও তাঁর কওমের কোন উপকারে আসবে না? আল্লাহর শপথ! আমার আত্মীয়তার সম্পর্ক দুনিয়া ও আখিরাতে মিলিতভাবে রয়েছে। হে লোক সকল! আমি তোমাদের আসবাব পত্রের রক্ষক হবো যখন তোমরা আসবে।” একটি লোক বলবেঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমি অমুকের পুত্র অমুক।” আমি উত্তরে বলবোঃ “হ্যা, আমি বংশ চিনে নিয়েছি। কিন্তু আমার পরে তুমি বিদআতের আবিষ্কার করেছিলে এবং উল্টো পদে ফিরে গিয়েছিলে।” (এ হাদীসটিও মুসনাদে আহমাদে বর্ণিত হয়েছে)আমীরুল মুমিনীন হযরত উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-এর মুসনাদে কয়েকটি সনদের মাধ্যমে আমরা বর্ণনা করেছি যে, যখন তিনি হযরত আলী ইবনে আবি তালিব (রাঃ)-এর কন্যা উম্মে কুলসুম (রাঃ)-কে বিয়ে করেন তখন তিনি বলতেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বলতে শুনেছিঃ “কিয়ামতের দিন সমস্ত মূল ও বংশের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে, কিন্তু আমার বংশ ও মূলের সম্পর্ক ছিন্ন হবে না।”
এটাও বর্ণিত আছে যে, হযরত উমার (রাঃ) হযরত উম্মে কুলসুম (রাঃ)-এর মর্যাদার প্রতি লক্ষ্য রেখে তাঁর মোহরর ধার্য করেছিলেন চল্লিশ হাজার (দিরহাম)।হযরত ইবনে উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “কিয়ামতের দিন আমার বংশগত ও বৈবাহিক সম্পর্ক ছাড়া সমস্ত বংশগত ও বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে।” (এ হাদীসটি হাফিয ইবনে আসাকির (রঃ) বর্ণনা করেছেন)হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আমি আমার প্রতিপালক মহামহিমান্বিত আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করেছি যে, যেখানে আমার বিয়ে হয়েছে এবং যার সাথে আমি বৈবাহিক সূত্রে আবদ্ধ হয়েছি তারা সবাই যেন জান্নাতে আমার সঙ্গ লাভ করে। আল্লাহ তা'আলা আমার এ দু'আ কবুল করেছেন।”মহান আল্লাহ বলেনঃ যাদের পাল্লা ভারী হবে তারাই হবে সফলকাম। যার একটি মাত্র পুণ্য পাপের উপর বেশী হবে সেই পরিত্রাণ পেয়ে যাবে। সে জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাবে এবং জান্নাতে প্রবেশ লাভ করবে। তার উদ্দেশ্য সফল হবে এবং যা থেকে সে ভয় করতো তা থেকে সে বেঁচে যাবে।
পক্ষান্তরে, যাদের পাল্লা হালকা হবে, অর্থাৎ পুণ্যের চেয়ে পাপ বেশী হয়ে যাবে তারা হবে চরমভাবে ক্ষগ্রিস্ত।হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, কিয়ামতের দিন একজন ফেরেশতা দাঁড়িপাল্লার উপর নিযুক্ত থাকবেন যিনি প্রত্যেক মানুষকে দাড়ি-পাল্লার দুই পাল্লার মাঝে দাঁড় করিয়ে দিবেন। অতঃপর পাপ ও পুণ্য ওজন করা হবে। যদি পুণ্য বেশী হয়ে যায় তবে তিনি উচ্চ স্বরে ঘোষণা করবেনঃ “অমুকের পুত্র অমুক মুক্তি পেয়ে গেছে। এরপর ক্ষতি ও ধ্বংস তার কাছেও যাবে না। আর যদি পাপ বেশী হয়ে যায় তবে সবারই সামনে তিনি উচ্চ স্বরে ঘোষণা করবেনঃ “অমুকের পুত্র অমুক ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন সে কল্যাণ লাভে বঞ্চিত হয়েছে।” (এটা হাফিয আবু বকর আল বাযযার (রঃ) বর্ণনা করেছেন। এর সনদ দুর্বল। বর্ণনাকারী দাউদ ইবনে হাজর দুর্বল ও বর্জনীয়)মহান আল্লাহর উক্তিঃ তারা জাহান্নামে স্থায়ী হবে। অর্থাৎ তারা চিরদিনই জাহান্নামে থাকবে। কখনো তাদেরকে তা থেকে বের করা হবে না। অগ্নি তাদের মুখমণ্ডল দগ্ধ করবে। আগুনকে সরিয়ে ফেলার ক্ষমতা তাদের হবে না।হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “প্রথম অগ্নিশিখা তাদেরকে জড়িয়ে ধরামাত্রই তাদের গোশ্ত অস্থি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে এবং তাদের পায়ের উপর পড়ে যাবে। (এ হাদীসটি ইবনে আবি হাতিমে বর্ণিত হয়েছে) ফলে তাদের চেহারা বীভৎস ও বিকৃত হয়ে যাবে। দাঁত বের হয়ে থাকবে, ওষ্ঠ উপরের দিকে উঠে যাবে এবং অধর নীচের দিকে নেমে থাকবে। উপরের ঠোট তালু পর্যন্ত উঠে যাবে এবং নীচের ঠোট নাভী পর্যন্ত নেমে আসবে।” (এটা মুসনাদে আহমাদে হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে মারফু’রূপে বর্ণিত আছে)
১০৫-১০৭ নং আয়াতের তাফসীর: কাফিরদেরকে তাদের কুফরী, পাপ ও সত্য-প্রত্যাখ্যানের কারণে কিয়ামতের দিন যে ভীতি প্রদর্শন করা হবে ও ধমক দেয়া হবে এখানে তারই বর্ণনা দেয়া হচ্ছে।তাদেরকে আল্লাহ তা'আলা বলবেনঃ আমি তোমাদের নিকট রাসূল পাঠিয়েছিলাম, তোমাদের উপর কিতাব অবতীর্ণ করেছিলাম, তোমাদের সন্দেহ। দূর করে দিয়েছিলাম, তোমাদের কোনই যুক্তি-প্রমাণ অবশিষ্ট রাখিনি। যেমন মহান আল্লাহ অন্য জায়গায় বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “যেন রাসূলদের পরে লোকদের জন্যে আল্লাহর উপর কোন বাদানুবাদের সুযোগ না থাকে।” (৪: ১৬৫) আর এ জায়গায় বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “রাসূল প্রেরণ না করা পর্যন্ত আমি শাস্তি প্রদানকারী নই।” (১৭:১৫)
তিনি আরো বলেনঃ (আরবী) পর্যন্ত। অর্থাৎ “যখনই তাতে (জাহান্নামে) কোন দলকে নিক্ষেপ করা হবে, তাদেরকে রক্ষীরা জিজ্ঞেস করবেঃ তোমাদের কাছে কি কোন সতর্ককারী আসেনি? তারা বলবেঃ অবশ্যই আমাদের কাছে সতর্ককারী এসেছিল, আমরা তাদেরকে মিথ্যাবাদী গণ্য করেছিলাম এবং বলেছিলামঃ আল্ল। "ই অবতীর্ণ করেননি, তোমরা তো মহা-বিভ্রান্তিতে রয়েছে। তারা আরো বলবেঃ যদি আমরা শুনতাম অথবা বিবেক-বুদ্ধি প্রয়োগ করতাম তাহলে আমরা জাহান্নামবাসী হতাম না। তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করবে; সুতরাং অভিশাপ জাহান্নামীদের জন্যে।” (৬৭: ৮-১১)এ জন্যেই তারা বলবেঃ হে আমাদের প্রতিপালক! দুর্ভাগ্য আমাদেরকে পেয়ে বসেছিল এবং আমরা ছিলাম এক বিভ্রান্ত সম্প্রদায়।তারা বলবেঃ হে আমাদের প্রতিপালক! এই আগুন হতে আমাদেরকে উদ্ধার করুন এবং পুনরায় দুনিয়ায় ফিরিয়ে দিন।
অতঃপর আমরা যদি পুনরায় কুফরী করি তবে তো আমরা অবশ্যই সীমালংঘনকারী হবো ও শাস্তির যোগ্য হয়ে যাবো। যেমন অন্য জায়গায় আল্লাহ তা'আলা তাদের উক্তির উদ্ধৃতি দিয়ে বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমরা আমাদের অপরাধ স্বীকার করছি, এখন বের হওয়ার কোন পথ আছে কি? তোমাদের এই শাস্তি তো এই জন্যে যে, যখন এক আল্লাহকে ডাকা হতো তখন তোমরা তাকে অস্বীকার করতে এবং আল্লাহর শরীক স্থির করা হলে তোমরা তা বিশ্বাস করতে; বস্তুতঃ সমুচ্চ, মহান আল্লাহরই সমস্ত কর্তৃত্ব।” (৪০:১১-১২) অর্থাৎ এখন তোমাদের জন্যে সব পথই বন্ধ। আমলের সময় শেষ হয়ে গেছে। এখন হলো প্রতিদান প্রদানের সময়। তাওহীদের সময় তোমরা শিরক করেছিলে। সুতরাং এখন অনুশোচনা করে কি লাভ?
DUA
Dua from Quran - 2
Dua from Quran-2
رَبَّنَا وَاجْعَلْنَا مُسْلِمَيْنِ لَكَ وَمِن ذُرِّيَّتِنَا أُمَّةً مُّسْلِمَةً لَّكَ وَأَرِنَا مَنَاسِكَنَا وَتُبْ عَلَيْنَآ إِنَّكَ أَنتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ
Rabbana wa-j'alna Muslimayni laka wa min Dhurriyatina 'Ummatan Muslimatan laka wa 'Arina Manasikana wa tub 'alayna 'innaka 'antat-Tawwabu-Raheem
Our Lord! Make of us Muslims, bowing to Thy (Will), and of our progeny a people Muslim, bowing to Thy (will); and show us our place for the celebration of (due) rites; and turn unto us (in Mercy); for Thou art the Oft-Returning, Most Merciful.
হে আমাদের রাব্ব! আমাদের উভয়কে আপনার অনুগত করুন, এবং আমাদের বংশধরদের মধ্য হতেও আপনার অনুগত এক দল লোক সৃষ্টি করুন, আর আমাদেরকে হাজ্জের আহকাম বলে দিন এবং আমাদের প্রতি দয়া করুন, নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল, করুণাময়।
Surah Al-Baqarah - 2:128
Surah Al-Baqarah - 2:128
رَبَّنَا وَٱجْعَلْنَا مُسْلِمَيْنِ لَكَ وَمِن ذُرِّيَّتِنَآ أُمَّةً مُّسْلِمَةً لَّكَ وَأَرِنَا مَنَاسِكَنَا وَتُبْ عَلَيْنَآ ۖ إِنَّكَ أَنتَ ٱلتَّوَّابُ ٱلرَّحِيمُ
হে আমাদের রাব্ব! আমাদের উভয়কে আপনার অনুগত করুন, এবং আমাদের বংশধরদের মধ্য হতেও আপনার অনুগত এক দল লোক সৃষ্টি করুন, আর আমাদেরকে হাজ্জের আহকাম বলে দিন এবং আমাদের প্রতি দয়া করুন, নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল, করুণাময়।
— Sheikh Mujibur Rahman
Our Lord, and make us Muslims [in submission] to You and from our descendants a Muslim nation [in submission] to You. And show us our rites [of worship] and accept our repentance. Indeed, You are the Accepting of Repentance, the Merciful.
— Saheeh International
Tafsir Abu Bakr Zakaria
رَبَّنَا وَٱجْعَلْنَا مُسْلِمَيْنِ لَكَ وَمِن ذُرِّيَّتِنَآ أُمَّةً مُّسْلِمَةً لَّكَ وَأَرِنَا مَنَاسِكَنَا وَتُبْ عَلَيْنَآ ۖ إِنَّكَ أَنتَ ٱلتَّوَّابُ ٱلرَّحِيمُ
‘হে আমাদের রব ! আর আমাদের উভয় কে আপনার একান্ত অনুগত করুন এবং আমাদের বংশধর হতে আপনার এক অনুগত জাতি উত্থিত করুন। আর আমাদের কে ‘‘ইবাদাতের নিয়ম-পদ্ধতি দেখিয়ে দিন [১] এবং আমদের তাওবা কবুল করুন। নিশ্চয় আপনিই বেশী তাওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু।
[১] আয়াতে বর্ণিত (مَنَاسِكَ) এর অর্থ ইবাদাতও হয়, যেমনটি উপরে করা হয়েছে। কাতাদাহ বলেন, এর অর্থ হচ্ছে, হজের নিয়মাবলী। [তাবারী]
DUA
Remembrance After Prayer - 2
Remembrance After Prayer - 2
اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لاَ تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلاَ نَوْمٌ لَّهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الأَرْضِ مَن ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلاَّ بِإِذْنِهِ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلاَ يُحِيطُونَ بِشَىْءٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلاَّ بِمَا شَاءَ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضَ وَلاَ يَؤُودُهُ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ
Allaahu laa 'ilaaha 'illaa Huwal-Hayyul-Qayyoom, laa ta'khuthuhu sinatun wa laa nawm, lahu maa fis-samaawaati wa maafil-'ardh, man thal-lathee yashfa'u 'indahu 'illaa bi'ithnih, ya'lamu maa bayna 'aydeehim wa maa khalfahum, wa laa yuheetoona bishay'im-min 'ilmihi 'illaa bimaa shaa'a, wasi'a kursiyyuhus-samaawaati wal'ardh, wa laa ya'ooduhu hifdhuhumaa, wa Huwal-'Aliyyul- 'Adheem.
আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, সুপ্রতিষ্ঠিত ধারক। তাঁকে তন্দ্রা ও নিদ্রা স্পর্শ করে না। তাঁর জন্যই আসমানসমূহে যা রয়েছে তা এবং যমীনে যা আছে তা। কে সে, যে তাঁর নিকট সুপারিশ করবে তাঁর অনুমতি ছাড়া? তিনি জানেন যা আছে তাদের সামনে এবং যা আছে তাদের পেছনে। আর তারা তাঁর জ্ঞানের সামান্য পরিমাণও আয়ত্ব করতে পারে না, তবে তিনি যা চান তা ছাড়া। তাঁর কুরসী আসমানসমূহ ও যমীন পরিব্যাপ্ত করে আছে এবং এ দু’টোর সংরক্ষণ তাঁর জন্য বোঝা হয় না। আর তিনি সুউচ্চ, মহান। (আয়াতুল কুরসী)
Allah! There is none worthy of worship but He, the Ever Living, the One Who sustains and protects all that exists. Neither slumber nor sleep overtakes Him. To Him belongs whatever is in the heavens and whatever is on the earth. Who is he that can intercede with Him except with His Permission? He knows what happens to them in this world, and what will happen to them in the Hereafter. And they will never compass anything of His Knowledge except that which He wills. His Throne extends over the heavens and the earth, and He feels no fatigue in guarding and preserving them. And He is the Most High, the Most Great.
Surah Al-Baqarah - 2:255
Surah Al-Baqarah - 2:255
ٱللَّهُ لَآ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلْحَىُّ ٱلْقَيُّومُ ۚ لَا تَأْخُذُهُۥ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ ۚ لَّهُۥ مَا فِى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِ ۗ مَن ذَا ٱلَّذِى يَشْفَعُ عِندَهُۥٓ إِلَّا بِإِذْنِهِۦ ۚ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۖ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَىْءٍ مِّنْ عِلْمِهِۦٓ إِلَّا بِمَا شَآءَ ۚ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ ۖ وَلَا يَـُٔودُهُۥ حِفْظُهُمَا ۚ وَهُوَ ٱلْعَلِىُّ ٱلْعَظِيمُ
আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, সুপ্রতিষ্ঠিত ধারক। তাঁকে তন্দ্রা ও নিদ্রা স্পর্শ করে না। তাঁর জন্যই আসমানসমূহে যা রয়েছে তা এবং যমীনে যা আছে তা। কে সে, যে তাঁর নিকট সুপারিশ করবে তাঁর অনুমতি ছাড়া? তিনি জানেন যা আছে তাদের সামনে এবং যা আছে তাদের পেছনে। আর তারা তাঁর জ্ঞানের সামান্য পরিমাণও আয়ত্ব করতে পারে না, তবে তিনি যা চান তা ছাড়া। তাঁর কুরসী আসমানসমূহ ও যমীন পরিব্যাপ্ত করে আছে এবং এ দু’টোর সংরক্ষণ তাঁর জন্য বোঝা হয় না। আর তিনি সুউচ্চ, মহান। (আয়াতুল কুরসী)
— Sheikh Mujibur Rahman
Allah - there is no deity except Him, the Ever-Living,1 the Self-Sustaining.2 Neither drowsiness overtakes Him nor sleep. To Him belongs whatever is in the heavens and whatever is on the earth. Who is it that can intercede with Him except by His permission? He knows what is [presently] before them and what will be after them,3 and they encompass not a thing of His knowledge except for what He wills. His Kursī4 extends over the heavens and the earth, and their preservation tires Him not. And He is the Most High,5 the Most Great.6
— Saheeh International
Tafsir Abu Bakr Zakaria
আল্লাহ্ [১], তিনি ছাড়া কোন সত্য ইলাহ নেই [২]। তিনি চিরঞ্জীব , সর্বসত্তার ধারক [৩]। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না, নিদ্রাও নয় [৪]। আসমানসমূহে যা রয়েছে ও যমীনে যা রয়েছে সবই তাঁর [৫]। কে সে , যে তাঁর অনুমতি বেতিত তাঁর কাছে সুপারিশ করবে [৬]? তাদের সামনে ও পেছনে যা কিছু আছে তা তিনি জানেন [৭]। আর যা তিনি ইচ্ছে করেন তা ছাড়া তাঁর জ্ঞানের কোন কিছুকেই তারা পরিবেষ্টন করতে পারে না [৮]। তাঁর ‘কুরসী’ আসমানসমূহ ও যমীনকে পরিব্যাপ্ত করে আছে [৯]; আর এ দুটোর রক্ষণাবেক্ষণ তাঁর জন্য বোঝা হয় না [১০]। আর তিনি সুউচ্চ সুমহান। [১১]
[১] এ আয়াতটিকে আয়াতুল কুরসী বলা হয়। এটি মর্যাদার দিক থেকে কুরআনের সর্ববৃহৎ আয়াত। হাদীসে এ আয়াতের অনেক ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। হাদীসে আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম উবাই ইবনে কাবকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, কুরআনের মধ্যে কোন আয়াতটি সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ? উবাই ইবনে কা'ব আরয করলেন, তা হচ্ছে আয়াতুল কুরসী। রাসূল সাল্লাল্লাহু '‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা সমর্থন করে বললেন, হে আবুল মুনযির! জ্ঞান তোমার জন্য সহজ হোক। [মুসলিমঃ ৮১০]
রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেনঃ যে লোক প্রত্যেক ফরয সালাতের পর আয়াতুল-কুরসী নিয়মিত পাঠ করে, তার জন্য জান্নাতে প্রবেশের পথে একমাত্র মৃত্যু ছাড়া অন্য কোন অন্তরায় থাকে না’। [নাসায়ী, দিন-রাতের আমলঃ ১০০]
অর্থাৎ মৃত্যুর সাথে সাথেই সে জান্নাতের ফলাফল এবং আরাম আয়েশ উপভোগ করতে শুরু করবে। অনেকেই এ সূরার আয়াতুল কুরসীতে “ইসমে আযম” আছে বলে মত দিয়েছেন।
আয়াতুল কুরসীর বিশেষ তাৎপর্যঃ এ আয়াতে মহান রব আল্লাহ্ জাল্লা-শানুহুর একক অস্তিত্ব, তাওহীদ ও গুণাবলীর বর্ণনা এক অত্যাশ্চর্য ও অনুপম ভঙ্গিতে দেয়া হয়েছে, যাতে আল্লাহ্র অস্তিত্ববান হওয়া, জীবিত হওয়া, শ্রবণকারী হওয়া, দর্শক হওয়া, বাকশক্তিসম্পন্ন হওয়া, তাঁর সত্তার অপরিহার্যতা, তাঁর অসীম-অনন্ত কাল পর্যন্ত থাকা, সমগ্র বিশ্বের স্রষ্টা ও উদ্ভাবক হওয়া, যাবতীয় ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার প্রভাব থেকে মুক্ত হওয়া, সমগ্র বিশ্বের একচ্ছত্র অধিপতি হওয়া, এমন শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ত্বের অধিকারী হওয়া যাতে তাঁর অনুমতি ছাড়া তার সামনে কেউ কোন কথা বলতে না পারে, এমন পরিপূর্ণ ক্ষমতার অধিকারী হওয়া যাতে সমগ্র বিশ্ব ও তার যাবতীয় বস্তুনিচয়কে সৃষ্টি করা এবং সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ এবং তাদের শৃংখলা বজায় রাখতে গিয়ে তাঁকে কোন ক্লান্তি বা পরিশ্রান্তির সম্মুখীন হতে হয় না এবং এমন ব্যাপক জ্ঞানের অধিকারী হওয়া যাতে কোন প্রকাশ্য কিংবা গোপন বস্তু কিংবা কোন অণু-পরমাণুর বিন্দু-বিসর্গও যাতে বাদ পড়তে না পারে। এই হচ্ছে আয়াতটির মোটামুটি ও সংক্ষিপ্ত বিষয়বস্তু। আল্লামা ইবনে কাসীর বলেনঃ এ আয়াতটিতে দশটি বাক্য রয়েছে। প্রতিটি বাক্যের সাথেই গুরুত্বপূর্ণ কিছু শিক্ষা রয়েছে।
[২] প্রথম বাক্য (اَللّٰهُ لَآ اِلٰهَ اِلَّا ھُوَ) এতে ‘আল্লাহ্' শব্দটি অস্তিত্ববাচক নাম। (لَآ اِلٰهَ اِلَّا ھُوَ) সে সত্তারই বর্ণনা, যে সত্তা ‘ইবাদাতের যোগ্য। মহান আল্লাহ্ ব্যতীত আর কোন সত্তা-ই ইবাদাত পাওয়ার যোগ্য নয়। তিনিই একমাত্র হক মা’বুদ। আর সবই বাতিল উপাস্য ।
[৩] দ্বিতীয় বাক্য (اَلْـحَيُّ الْقَيُّوْمُ) আরবী ভাষায় (اَلْـحَيُّ) অর্থ হচ্ছে জীবিত আল্লাহ্র নামের মধ্য থেকে এ নামটি ব্যবহার করে বলে দিয়েছে যে, তিনি সর্বদা জীবিত; মৃত্যু তাঁকে স্পর্শ করতে পারবে না। (قَيُّوْمُ) শব্দ কেয়াম থেকে উৎপন্ন, এটা ব্যুৎপত্তিগত আধিক্যের অর্থে ব্যবহৃত। এর অর্থ হচ্ছে এই যে, তিনি নিজে বিদ্যমান থেকে অন্যকেও বিদ্যমান রাখেন এবং নিয়ন্ত্রণ করেন। ‘কাইয়ূম’ আল্লাহ্র এমন এক বিশেষ গুণবাচক নাম যাতে কোন সৃষ্টি অংশীদার হতে পারে না। তাঁর সত্তা স্থায়ীত্বের জন্য কারো মুখাপেক্ষী নয়। কেননা, যে নিজের স্থায়ীত্ব ও অস্তিত্বের জন্য অন্যের মুখাপেক্ষী, সে অন্যের পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ কি করে করবে? সে জন্যই কোন মানুষকে 'কাইয়ূম’ বলা জায়েয নয়। যারা ‘আবদুল কাইয়ূম’ নামকে বিকৃত করে শুধু কাইয়ূম’ বলে, তারা গোনাহগার হবে। অনুরূপভাবে, আল্লাহ্র এমন আরও কিছু নাম আছে, যেগুলো কোন বান্দাহর বিশেষণ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে না। যেমন, রাহমান, মান্নান, দাইয়্যান, ওয়াহহাব এ জাতীয় নামের ব্যাপারেও উপরোক্ত হুকুম প্রযোজ্য। আল্লাহ্র নামের মধ্যে (اَلْـحَيُّ الْقَيُّوْمُ) অনেকের মতে ‘ইসমে-আযম’।
[৪] তৃতীয় বাক্য (لَا تَاْخُذُهٗ سِـنَةٌ وَّلَا نَوْمٌ) আরবীতে (سِـنَةٌ) শব্দের সীন-এর (كَسرة) দ্বারা উচ্চারণ করলে এর অর্থ হয় তন্দ্রা বা নিদ্রার প্রাথমিক প্রভাব (نَوْمٌ) পূর্ণ নিদ্রাকে বলা হয়। এর অর্থ হচ্ছে এই যে, আল্লাহ্ তা'আলা তন্দ্রা ও নিদ্রা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। পূর্ববর্তী বাক্যে 'কাইইয়্যুম’ শব্দে মানুষকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, আসমান ও যমীনের যাবতীয় বস্তুর নিয়ন্ত্রণকারী হচ্ছেন আল্লাহ্ তা'আলা। সমস্ত সৃষ্টিরাজি তাঁর আশ্রয়েই বিদ্যমান। এতে করে হয়ত ধারণা হতে পারে যে, যে সত্তা এত বড় কার্য পরিচালনা করেছেন, তাঁর কোন সময় ক্লান্তি আসতে পারে এবং কিছু সময় বিশ্রাম ও নিদ্রার জন্য থাকা দরকার। দ্বিতীয় বাক্য দ্বারা সীমিত জ্ঞান-বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষকে জানানো হয়েছে যে, আল্লাহ্কে নিজের বা অন্য কোন সৃষ্টির সঙ্গে তুলনা করবে না, নিজের মত মনে করবে না। তিনি সমকক্ষতা ও সকল তুলনার উর্ধ্বে। তাঁর পরিপূর্ণ ক্ষমতার পক্ষে এসব কাজ করা কঠিন নয়। আবার তাঁর ক্লান্তিরও কোন কারণ নেই। আর তাঁর সত্তা যাবতীয় ক্লান্তি, তন্দ্রা ও নিদ্রার প্রভাব থেকে মুক্ত ও পবিত্র।
[৫] চতুর্থ বাক্য
(لَهٗ مَا فِي السَّمٰوٰتِ وَمَا فِي الْاَرْضِ)
বাক্যের প্রারম্ভে ব্যবহৃত (لام) অক্ষর মালিকানা অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থাৎ আকাশ এবং যমীনে যা কিছু রয়েছে সে সবই আল্লাহ্র মালিকানাধীন। তিনি স্বয়ংসম্পূর্ণ ইচ্ছাশক্তির মালিক। যেভাবে ইচ্ছা তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।
[৬] পঞ্চম বাক্য
(مَنْ ذَا الَّذِيْ يَشْفَعُ عِنْدَهٗٓ اِلَّا بِاِذْنِهٖ)
অর্থ হচ্ছে, এমন কে আছে যে, তাঁর সামনে কারো সুপারিশ করতে পারে, তাঁর অনুমতি ব্যতীত? এতে বুঝা যায় যে, যখন আল্লাহ্ তা'আলা যাবতীয় সৃষ্ট বস্তুর মালিক এবং কোন বস্তু তাঁর চাইতে বড় নয়, তাই কেউ তাঁর কোন কাজ সম্পর্কে প্রশ্ন করার অধিকারী নয়। তিনি যা কিছু করেন, তাতে কারো আপত্তি করার অধিকার নেই। তবে এমন হতে পারত যে, কেউ কারো জন্য সুপারিশ করে, তাই এ বিষয়টিও স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে যে, এ ক্ষমতাও কারো নেই। তবে আল্লাহ্র কিছু খাস বান্দা আছেন, যারা তাঁর অনুমতি সাপেক্ষে তা করতে পারবেন, অন্যথায় নয়। হাদীসে এরশাদ হয়েছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ "হাশরের ময়দানে সর্বপ্রথম আমি সুপারিশ করব’। [মুসলিমঃ ১৯৩]
একে ‘মাকামে-মাহমুদ’ বলা হয়, যা রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামএর জন্য খাস। অন্য কারো জন্য নয়।
[৭] ষষ্ঠ বাক্য
(يَعْلَمُ مَا بَيْنَ اَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَھُمْ)
অর্থাৎ আল্লাহ্ তা'আলা অগ্র-পশ্চাত যাবতীয় অবস্থা ও ঘটনা সম্পর্কে অবগত। অগ্র-পশ্চাত বলতে এ অর্থও হতে পারে যে, তাদের জন্মের পূর্বের ও জন্মের পরের যাবতীয় অবস্থা ও ঘটনাবলী আল্লাহ্র জানা রয়েছে। আর এ অর্থও হতে পারে যে, অগ্র বলতে সে অবস্থা বোঝানো হয়েছে যা মানুষের জন্য প্রকাশ্য, আর পশ্চাত বলতে বোঝানো হয়েছে যা অপ্রকাশ্য। তাতে অর্থ হবে এই যে, কোন কোন বিষয় মানুষের জ্ঞানের আওতায় রয়েছে কিন্তু কোন কোন বিষয়ে তাদের জ্ঞান নেই। কিছু তাদের সামনে প্রকাশ্য আর কিছু গোপন। কিন্তু আল্লাহ্র ক্ষেত্রে সবই প্রকাশ্য। তাঁর জ্ঞান সে সমস্ত বিষয়ের উপরই পরিব্যপ্ত। সুতরাং এ দু'টিতে কোন বিরোধ নেই। আয়াতের ব্যাপকতায় উভয়দিকই বোঝানো হয়।
[৮] সপ্তম বাক্য
(وَلَا يُحِيْطُوْنَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهٖٓ اِلَّا بِمَا شَاءَ)
অর্থাৎ মানুষ ও সমগ্র সৃষ্টির জ্ঞান আল্লাহ্র জ্ঞানের কোন একটি অংশবিশেষকেও পরিবেষ্টিত করতে পারে না। কিন্তু আল্লাহ্ তা'আলা যাকে যে পরিমাণ জ্ঞান দান করেন শুধু ততটুকুই সে পেতে পারে। এতে বলা হয়েছে যে, সমগ্র সৃষ্টির অণু-পরমাণুর ব্যাপক জ্ঞান আল্লাহ্র জ্ঞানের আওতাভুক্ত, এটা তাঁর বৈশিষ্ট্য। মানুষ অথবা অন্য কোন সৃষ্টি এতে অংশীদার নয়।
[৯] অষ্টম বাক্য
(وَسِعَ كُرْسِـيُّهُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ)
অর্থাৎ তাঁর কুরসী এত বড় যার মধ্যে সাত আকাশ ও যমীন পরিবেষ্টিত রয়েছে। হাদীসের বর্ণনা দ্বারা এতটুকু বোঝা যায় যে, আরশ ও কুরসী এত বড় যে, তা সমগ্র আকাশ ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে রেখেছে। ইবনে কাসীর আবু যর গিফারী রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর উদ্ধৃতিতে বর্ণনা করেছেন যে, ‘তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, কুরসী কি এবং কেমন? তিনি (রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘যাঁর হাতে আমার প্রাণ তাঁর কছম, কুরসীর সাথে সাত আসমানের তুলনা একটি বিরাট ময়দানে ফেলে দেয়া একটি আংটির মত। আর কুরসীর উপর আরশের শ্রেষ্ঠত্ব যেমন আংটির বিপরীতে বিরাট ময়দানের শ্রেষ্ঠত্ব’। [ইবন হিব্বান: ৩৬১ বায়হাকী: ৪০৫]
[১০] নবম বাক্য
(وَلَا يَـــــئُـــوْدُهٗ حِفْظُهُمَا)
"অর্থাৎ আল্লাহ্ তা'আলার পক্ষে এ দুটি বৃহৎ সৃষ্টি, আসমান ও যমীনের হেফাজত করা কোন কঠিন কাজ বলে মনে হয় না। কারণ, এই অসাধারণ ও একক পরিপূর্ণ সত্তার পক্ষে এ কাজটি একান্তই সহজ ও অনায়াসসাধ্য।
[১১] দশম বাক্য (وَھُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيْمُ) অর্থাৎ তিনি অতি উচ্চ ও অতি মহান। পূর্বের নয়টি বাক্যে আল্লাহ্র সত্তা ও গুণের পূর্ণতা বর্ণনা করা হয়েছে। তা দেখার এবং বোঝার পর প্রত্যেক বুদ্ধিমান ব্যক্তি বলতে বাধ্য হবে যে, সকল শান-শওকত, বড়ত্ব ও মহত্ব এবং শক্তির একমাত্র মালিক আল্লাহ্ তা'আলা। এ দশটি বাক্যে আল্লাহ্র যাত ও সিফাতের পূর্ণ বর্ণনা দেয়া হয়েছে।
YOUTH
PILLARS OF FAITH
The Shining Treasures
Allah sent many books with His prophets to teach people Islam. The Holy Qur'an was the last book that Allah sent to people. Allah ordered Angel Jibreel to bring Al-Qur'an's words to Prophet Muhammad ﷺ. Prophet Muhammad ﷺ told the people about the Qur'an.
The Holy Qur'an. has the words and teachings of Allah in Arabic. The Qur'an is full of stories that teach us lessons. They tell us how we should live in peace, be nice, and be happy.
We must read and learn Al-Qur'an every day so that we can become better Muslims. Allah will be pleased with Muslims who read and practice the Qur'an. The more we read Al-Qur'an, the more hasanat we will get.
The Qur'an is the words of Allah. It makes us happy and we shine with iman if we learn and follow Allah's guidance. The hadeeth book has the sayings and teachings of our Prophet ﷺ.
The Prophet ﷺ learned Al-Qur'an over 23 years. Each time Angel Jibreel came, the Prophet ﷺ would learn a surah or a few ayat.
A hadeeth is something the Prophet ﷺ said, did or approved, and ahadeeth are more than one hadeeth. We also call the teachings of the Prophet Sunnah.
There are thousands and thousands of ahadeeth that the companions of the Prophets ﷺ have passed on to us. The two most famous hadeeth books are Saheeh Al-Bukhari and Saheeh Muslim.
As our beloved Prophet ﷺ learned the Qur'an, he remembered everything in it by heart. Then he did everything it said to do. That's why his wife Aisha said, "His behavior was Al-Qur'an."
As Muslims, we don't only learn Al-Qur'an and hadeeth, we also share them and teach them to others. We also practice their teachings in every day of our lives.
Questions
Whose words are in the Qur'an?
What does Al-Qur'an teach us?
Who brought the Qur'an from Allah to the Prophet ﷺ ?
What are ahadeeth?
Where did the Prophet ﷺ learn how to behave so well?