1445H Week-01

Friday, 21 July 2023

QURAN

Al-'Ankabut | The Spider | Verse 31-37

29:31

وَلَمَّا جَآءَتْ رُسُلُنَآ إِبْرَٰهِيمَ بِٱلْبُشْرَىٰ قَالُوٓا۟ إِنَّا مُهْلِكُوٓا۟ أَهْلِ هَـٰذِهِ ٱلْقَرْيَةِ ۖ إِنَّ أَهْلَهَا كَانُوا۟ ظَـٰلِمِينَ ٣١

And when Our messengers [i.e., angels] came to Abraham with the good tidings, they said, "Indeed, we will destroy the people of that [i.e., Lot's] city. Indeed, its people have been wrongdoers."

— Saheeh International

যখন আমার প্রেরিত মালাইকা/ফেরেশতারা সুসংবাদসহ ইবরাহীমের নিকট এলো, তারা বলেছিলঃ আমরা এই জনপদবাসীকে ধ্বংস করব, এর অধিবাসীতো সীমা লংঘনকারী।

— Sheikh Mujibur Rahman


29:32

قَالَ إِنَّ فِيهَا لُوطًۭا ۚ قَالُوا۟ نَحْنُ أَعْلَمُ بِمَن فِيهَا ۖ لَنُنَجِّيَنَّهُۥ وَأَهْلَهُۥٓ إِلَّا ٱمْرَأَتَهُۥ كَانَتْ مِنَ ٱلْغَـٰبِرِينَ ٣٢

[Abraham] said, "Indeed, within it is Lot." They said, "We are more knowing of who is within it. We will surely save him and his family, except his wife. She is to be of those who remain behind."

— Saheeh International

ইবরাহীম বললঃ এই জনপদে লূত রয়েছে। তারা বললঃ সেখানে কারা আছে তা আমরা ভাল জানি; আমরাতো লূতকে ও তাঁর পরিজনবর্গকে রক্ষা করবই, তাঁর স্ত্রীকে ব্যতীত; সে পশ্চাতে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত।

— Sheikh Mujibur Rahman


29:33

وَلَمَّآ أَن جَآءَتْ رُسُلُنَا لُوطًۭا سِىٓءَ بِهِمْ وَضَاقَ بِهِمْ ذَرْعًۭا وَقَالُوا۟ لَا تَخَفْ وَلَا تَحْزَنْ ۖ إِنَّا مُنَجُّوكَ وَأَهْلَكَ إِلَّا ٱمْرَأَتَكَ كَانَتْ مِنَ ٱلْغَـٰبِرِينَ ٣٣

And when Our messengers [i.e., angels] came to Lot, he was distressed for them and felt for them great discomfort. They said, "Fear not, nor grieve. Indeed, we will save you and your family, except your wife; she is to be of those who remain behind.

— Saheeh International

এবং যখন আমার প্রেরিত মালাইকা/ফেরেশতারা লূতের নিকট এলো তখন তাদের জন্য সে বিষণ্ণ হয়ে পড়ল এবং নিজেকে তাদের রক্ষায় অসমর্থ মনে করল। তারা বললঃ ভয় করনা, দুঃখও করনা; আমরা তোমাকে ও তোমার পরিবারবর্গকে রক্ষা করব, তোমার স্ত্রী ব্যতীত; সে পশ্চাতে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত।

— Sheikh Mujibur Rahman


29:34

إِنَّا مُنزِلُونَ عَلَىٰٓ أَهْلِ هَـٰذِهِ ٱلْقَرْيَةِ رِجْزًۭا مِّنَ ٱلسَّمَآءِ بِمَا كَانُوا۟ يَفْسُقُونَ ٣٤

Indeed, we will bring down on the people of this city punishment from the sky because they have been defiantly disobedient."

— Saheeh International

আমরা এই জনপদবাসীর উপর আকাশ হতে শাস্তি নাযিল করব, কারণ তারা ছিল পাপাচারী।

— Sheikh Mujibur Rahman


29:35

وَلَقَد تَّرَكْنَا مِنْهَآ ءَايَةًۢ بَيِّنَةًۭ لِّقَوْمٍۢ يَعْقِلُونَ ٣٥

And We have certainly left of it a sign as clear evidence for a people who use reason.

— Saheeh International

আমি বোধশক্তি সম্পন্ন সম্প্রদায়ের জন্য এতে একটি স্পষ্ট নিদর্শন রেখেছি।

— Sheikh Mujibur Rahman


29:36

وَإِلَىٰ مَدْيَنَ أَخَاهُمْ شُعَيْبًۭا فَقَالَ يَـٰقَوْمِ ٱعْبُدُوا۟ ٱللَّهَ وَٱرْجُوا۟ ٱلْيَوْمَ ٱلْـَٔاخِرَ وَلَا تَعْثَوْا۟ فِى ٱلْأَرْضِ مُفْسِدِينَ ٣٦

And to Madyan [We sent] their brother Shuʿayb, and he said, "O my people, worship Allāh and expect the Last Day and do not commit abuse on the earth, spreading corruption."

— Saheeh International

আমি মাদইয়ানবাসীদের প্রতি তাদের ভাই শুআ’ইবকে পাঠিয়েছিলাম। সে বলেছিলঃ হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর, শেষ দিনকে ভয় কর এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় ঘটিওনা।

— Sheikh Mujibur Rahman


29:37

فَكَذَّبُوهُ فَأَخَذَتْهُمُ ٱلرَّجْفَةُ فَأَصْبَحُوا۟ فِى دَارِهِمْ جَـٰثِمِينَ ٣٧

But they denied him, so the earthquake seized them, and they became within their home [corpses] fallen prone.

— Saheeh International

কিন্তু তারা তার প্রতি মিথ্যা আরোপ করল; অতঃপর তারা ভূমিকম্প দ্বারা আক্রান্ত হল; ফলে তারা নিজ গৃহে নতজানু অবস্থায় শেষ হয়ে গেল।

— Sheikh Mujibur Rahman

Tafsir Ibn Kathir 

The Angels went to Ibrahim and then to Lut, may peace be upon them both

When Lut, peace be upon him, asked Allah to help him against them, Allah sent angels to help him. They first came to Ibrahim in the form of guests, so he offered them hospitality in the appropriate manner. When he saw that they had no interest in the food, he felt some mistrust of them and was fearful of them. They started to calm him down and gave him the news of a righteous son born by his wife Sarah, who was present, and she was astonished by this, as we have already explained in our Tafsir of Surat Hud and Surat Al-Hijr. When they brought this news to Ibrahim and told him that they were sent to destroy the people of Lut, he began to speak up for them, hoping to win more time for them so that they might be guided by Allah. When they said, "We have come to destroy the people of this township,"

قَالَ إِنَّ فِيهَا لُوطاً قَالُواْ نَحْنُ أَعْلَمُ بِمَن فِيهَا لَنُنَجِّيَنَّهُ وَأَهْلَهُ إِلاَّ امْرَأَتَهُ كَانَتْ مِنَ الْغَـبِرِينَ

((Ibrahim) said: "But there is Lut in it." They said: "We know better who is there. We will verily, save him and his family except his wife, she will be of those who remain behind.") meaning, one of those who will be destroyed, because she used to support them in their disbelief and wrongdoing. Then the angels left him and visited Lut in the form of handsome young men. When he saw them like that,

سِىءَ بِهِمْ وَضَاقَ بِهِمْ ذَرْعًا

(he was grieved because of them, and felt straitened on their account.) means, he was worried since if he had them as guests then he was afraid for them and what his people might do to them, but if he did not host them, he was still afraid of what might happen to them. At that point he did not know who they were.

وَلَمَّآ أَن جَآءَتْ رُسُلُنَا لُوطاً سِىءَ بِهِمْ وَضَاقَ بِهِمْ ذَرْعاً وَقَالُواْ لاَ تَخَفْ وَلاَ تَحْزَنْ إِنَّا مُنَجُّوكَ وَأَهْلَكَ إِلاَّ امْرَأَتَكَ كَانَتْ مِنَ الْغَـبِرينَ - إِنَّا مُنزِلُونَ عَلَى أَهْلِ هَـذِهِ الْقَرْيَةِ رِجْزاً مِّنَ السَّمَآءِ بِمَا كَانُواْ يَفْسُقُونَ

(They said: "Have no fear, and do not grieve! Truly, we shall save you and your family except your wife: she will be of those who remain behind. Verily, we are about to bring down on the people of this town a great torment from the sky, because they have been rebellious.") Jibril, peace be upon him, uprooted their town from the depths of the earth, lifted it up to the sky, then threw it upside down upon them. Allah rained upon them:

فَلَمَّا جَآءَ أَمْرُنَا جَعَلْنَا عَـلِيَهَا سَافِلَهَا وَأَمْطَرْنَا عَلَيْهَا حِجَارَةً مِّن سِجِّيلٍ مَّنْضُودٍ - مُّسَوَّمَةً عِندَ رَبِّكَ وَمَا هِى مِنَ الظَّـلِمِينَ بِبَعِيدٍ

(stones of Sijjil, in a well-arranged manner one after another. Marked from your Lord; and they are not ever far from the evil doers.) 11:82-83 Allah turned the place where they had lived into a putrid, stinking lake, which will remain as a lesson to mankind until the Day of Resurrection, and they will be among those who are most severely punished on the Day of Resurrection. Allah says:

وَلَقَد تَّرَكْنَا مِنْهَآ ءَايَةً بَيِّنَةً

(And indeed We have left thereof an evident Ayah) i. e., a clear sign, n

لِّقَوْمٍ يَعْقِلُونَ

(for a folk who understand.) This is like the Ayah,

وَإِنَّكُمْ لَّتَمُرُّونَ عَلَيْهِمْ مُّصْبِحِينَ - وَبِالَّيْلِ أَفَلاَ تَعْقِلُونَ

(Verily, you pass by them in the morning And at night; will you not then reflect) (37:137-138)

Shu`ayb and His People

Allah tells us that His servant and Messenger Shu`ayb, peace be upon him, warned his people, the people of Madyan, and commanded them to worship Allah Alone with no partner or associate, and to fear the wrath and punishment of Allah on the Day of Resurrection. He said:

يقَوْمِ اعْبُدُواْ اللَّهَ وَارْجُواْ الْيَوْمَ الاٌّخِرَ

(O my people! Worship Allah and hope for the last Day,) Ibn Jarir said: "Some of them said that this meant: Fear the Last Day." This is like the Ayah,

لِّمَن كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الاٌّخِرَ

(for those who look forward to (meeting with) Allah and the Last Day) (60:6).

وَلاَ تَعْثَوْاْ فِى الاٌّرْضِ مُفْسِدِينَ

(and commit no mischief on the earth as mischief-makers.) This is forbidding them to make mischief on earth by spreading corruption, which means going around doing evil to people. They used to cheat in weights and measures, and ambush people on the road; this is in addition to their disbelief in Allah and His Messenger. So Allah destroyed them with a mighty earthquake that convulsed their land, and the Sayhah (shout) which tore their hearts from their bodies, and the torment of the Day of Shade, when their souls were taken. This was the torment of a great day. We have already examined their story in detail in Surat Al-A`raf, Surat Hud and Surat Ash-Shu`ara'.

فَأَصْبَحُواْ فِي دَارِهِمْ جَـثِمِينَ

(and they lay, prostrate in their dwellings.) Qatadah said, "They were dead." Others said that they were thrown on top of one another.

তাফসীর ইবনে কাছীর 

৩১-৩৫ নং আয়াতের তাফসীর: হযরত লূত (আঃ)-এর কওম যখন তার কথা মানলো না তখন তিনি আল্লাহ তাআলার নিকট সাহায্য প্রার্থনা করলেন। ফলে মহান আল্লাহ ফেরেশতাদেরকে প্রেরণ করলেন। মানুষের রূপ ধরে ফেরেশতারা প্রথমে হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর বাড়ীতে মেহমান হিসেবে আগমন করলেন। হযরত ইবরাহীম (আঃ) তাদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা করে ফেললেন এবং তাদের সামনে তা হাযির করলেন। কিন্তু যখন তিনি দেখলেন যে, তারা খাদ্যের প্রতি মোটেই আগ্রহ প্রকাশ করছেন না তখন তিনি মনে মনে ভয় পেয়ে গেলেন। ফেরেশতারা তখন তার মনতুষ্টি করতে গিয়ে বললেন যে, তাঁদের একটি সুসন্তান জন্মগ্রহণ করবে। 

তাঁর স্ত্রী হযরত সারা (রাঃ), যিনি তথায় উপস্থিত ছিলেন, এ খবর শুনে অত্যন্ত বিস্ময় প্রকাশ করলেন। সূরায়ে হৃদে ও সূরায়ে হিজরে এর বিস্তারিত তাফসীর বর্ণিত হয়েছে। অতঃপর ফেরেশতারা তাদের আগমনের প্রকৃত উদ্দেশ্য ব্যক্ত করলেন। হযরত ইবরাহীম (আঃ) তাঁদের উদ্দেশ্য অবগত হয়ে ধারণা করলেন যে, যদি হযরত লুত (আঃ)-এর কওমকে আরো কিছুদিন অবকাশ দেয়া হয় তবে হয়তো তারা সুপথে ফিরে আসবে। তাই তিনি ফেরেশতাদেরকে বললেনঃ “সেখানে তো হযরত লুত (আঃ) রয়েছেন!” উত্তরে ফেরেশতারা বললেনঃ “তাঁর ব্যাপারে আমরা উদাসীন বা অমনোযোগী নই। তাকে ও তার পরিবারবর্গকে রক্ষা করতে আমরা আদিষ্ট হয়েছি। তবে তার স্ত্রী অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাবে। কেননা, সে তার কওমের সাথে সহযোগিতা করে থাকে। এখান হতে বিদায় গ্রহণ করে তাঁরা হযরত লূত (আঃ)-এর নিকট পৌঁছলেন। তাঁদেরকে দেখেই হযরত লূত (আঃ)-এর অন্তরাত্মা কেঁপে উঠলো। তাঁর কেঁপে ওঠার কারণ এই যে, যদি তাঁর কওম তাঁর মেহমানদের আগমন সংবাদ শুনতে পায় তবে দৌড়িয়ে তার বাড়ীতে আসবে এবং তাঁকে অপ্রস্তুত ও ব্যতিব্যস্ত করে ফেলবে। যদি তিনি তাঁর এই মেহমানদেরকে তার বাড়ীতে রাখেন তবে তারা এদের হাতে পড়ে যাবেন। 

তিনি তো তাঁর কওমের বদভ্যাস সম্পর্কে অবহিত ছিলেন। এ জন্যেই তিনি অত্যন্ত চিন্তিত ও লজ্জিত হয়ে পড়লেন। কিন্তু ফেরেশতারা তার মনোভাব বুঝতে পেরে তাকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে বলেনঃ “আপনি ভয় করবেন না, দুঃখও করবেন না। আমরা তো আল্লাহর প্রেরিত ফেরেশতা। আপনার কওমকে ধ্বংস করার জন্যে আমাদেরকে প্রেরণ করা হয়েছে। আপনাকে ও আপনার পরিবারর্গকে আমরা রক্ষা করবো। তবে আপনার স্ত্রীকে ধ্বংস করে দেয়া হবে। কেননা, সেও আপনার কওমের সাথে সহযোগিতা করেছে। তাদের উপর আসমানী গযব নাযিল করা হবে এবং তাদের দুষ্কর্মের ফল দেখিয়ে দেয়া হবে।” অতঃপর হযরত জিবরাঈল (আঃ) তাদের জনপদকে যমীন হতে উঠিয়ে আসমান পর্যন্ত নিয়ে যান এবং সেখান হতে উল্টিয়ে ফেলে দেন। তারপর তাদের নাম অংকিত পাথর তাদের উপর বর্ষিত হয় এবং যে শাস্তিকে তারা বহু দূরের মনে করছিল তা খুবই নিকটে হয়ে গেল। তাদের বসতি স্থলে একটি তিক্ত ও দুর্গন্ধময় পানির বিল বা জলাশয় রয়ে গেল। এটা লোকদের জন্যে শিক্ষা ও উপদেশ গ্রহণের মাধ্যম হয়ে গেল। জ্ঞানী লোকেরা তাদের দূরবস্থা ও ধ্বংসলীলার কথা স্মরণ করে যেন আল্লাহর বিরুদ্ধাচরণের আস্পর্ধা না দেখায়। আরববাসীদের ভ্রমণের পথে রাত-দিন এই দৃশ্য চোখের সামনে পড়তো। 

৩৬-৩৭ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তা'আলা খবর দিচ্ছেন যে, তাঁর বান্দা ও রাসূল হযরত শুআইব (আঃ) মাদইয়ানে স্বীয় কওমকে উপদেশ দেন। তাদেরকে তিনি এক ও অংশীবিহীন আল্লাহর ইবাদত করার হুকুম করেন। তিনি তাদেরকে আল্লাহর আযাব হতে ভয় প্রদর্শন করেন। তাদেরকে কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার কথা বিশ্বাস করাতে গিয়ে তিনি বলেনঃ “ঐদিনের জন্যে তোমরা কিছু প্রস্তুতি গ্রহণ কর। ঐ দিনের খেয়াল। রেখে লোকদের উপর যুলুম ও অবিচার করা হতে বিরত থাকো। আল্লাহর যমীনে বিপর্যয়, বিশৃংখলা ও অশান্তি সৃষ্টি করো না। অন্যায় ও দুষ্কর্ম হতে দূরে থাকো।”

তাদের মধ্যে একটি দোষ এও ছিল যে, তারা মাপে ও ওজনে কম করতো, মানুষের হক তারা নষ্ট করে দিতো। তারা রাস্তা বন্ধ করে ফেলতো এবং সাথে সাথে তারা আল্লাহ ও তার রাসূল (আঃ)-এর সাথে কুফরী করতো। তারা তাদের নবী (আঃ)-এর উপদেশের প্রতি কর্ণপাত করেনি। বরং তাকে তারা মিথ্যাবাদী বলে। এর ফলে তাদের উপর আল্লাহর শাস্তি নেমে আসে। কঠিন ভূমিকম্প শুরু হয় এবং সাথে সাথে এমন জোরে শব্দ হয় যে, প্রাণ উড়ে যায়। তারা নিজ নিজ গৃহে নতজানু অবস্থায় শেষ হয়ে যায়। তাদের পূর্ণ ঘটনা সূরায়ে আরাফ ও সূরায়ে শুআ'রাতে গত হয়েছে। 

SURAH

Al-Ma'un | The Small Kindness | Verse 01-07

اَرَءَیۡتَ الَّذِیۡ یُکَذِّبُ بِالدِّیۡنِ ؕ﴿۱﴾

 فَذٰلِکَ الَّذِیۡ یَدُعُّ الۡیَتِیۡمَ ۙ﴿۲﴾

 وَ لَا یَحُضُّ عَلٰی طَعَامِ الۡمِسۡکِیۡنِ ؕ﴿۳﴾

 فَوَیۡلٌ لِّلۡمُصَلِّیۡنَ ۙ﴿۴﴾

 الَّذِیۡنَ هُمۡ عَنۡ صَلَاتِهِمۡ سَاهُوۡنَ ۙ﴿۵﴾

 الَّذِیۡنَ هُمۡ یُرَآءُوۡنَ ۙ﴿۶﴾

 وَ یَمۡنَعُوۡنَ الۡمَاعُوۡنَ ﴿۷﴾

107:1

أَرَءَيْتَ ٱلَّذِى يُكَذِّبُ بِٱلدِّينِ 

তুমি কি দেখেছ তাকে, যে কর্মফলকে মিথ্যা বলে থাকে?

— Sheikh Mujibur Rahman

Have you seen the one who denies the Recompense?

— Saheeh International

107:2

فَذَٰلِكَ ٱلَّذِى يَدُعُّ ٱلْيَتِيمَ 

সেতো সে, যে পিতৃহীনকে রূঢ়ভাবে তাড়িয়ে দেয়,

— Sheikh Mujibur Rahman

For that is the one who drives away the orphan

— Saheeh International

107:3

وَلَا يَحُضُّ عَلَىٰ طَعَامِ ٱلْمِسْكِينِ 

এবং সে অভাবগ্রস্তকে খাদ্য দানে উৎসাহ প্রদান করেনা,

— Sheikh Mujibur Rahman

And does not encourage the feeding of the poor.

— Saheeh International

107:4

فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّينَ 

সুতরাং পরিতাপ সেই সালাত আদায়কারীদের জন্য –

— Sheikh Mujibur Rahman

So woe to those who pray

— Saheeh International

107:5

ٱلَّذِينَ هُمْ عَن صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ 

যারা তাদের সালাতে অমনোযোগী,

— Sheikh Mujibur Rahman

[But] who are heedless of their prayer1 -

— Saheeh International

107:6

ٱلَّذِينَ هُمْ يُرَآءُونَ 

যারা লোক দেখানোর জন্য ওটা করে।

— Sheikh Mujibur Rahman

Those who make show [of their deeds]

— Saheeh International

107:7

وَيَمْنَعُونَ ٱلْمَاعُونَ 

এবং গৃহস্থালীর প্রয়োজনীয় ছোট খাট সাহায্য দানে বিরত থাকে।

— Sheikh Mujibur Rahman

And withhold [simple] assistance.

— Saheeh International


Tafsir Ibn Kathir 

Allah says, "O Muhammad! Have you seen the one who denies the Din"

Here the word Din means the Hereafter, the Recompense and the Final Reward.

فَذَلِكَ الَّذِى يَدُعُّ الْيَتِيمَ

(That is he who repulses the orphan, ) meaning, he is the one who oppresses the orphan and does not give him his just due. He does not feed him, nor is he kind to him.

وَلاَ يَحُضُّ عَلَى طَعَامِ الْمِسْكِينِ

(And urges not the feeding of Al-Miskin.) This is as Allah says,

كَلاَّ بَل لاَّ تُكْرِمُونَ الْيَتِيمَ - وَلاَ تَحَاضُّونَ عَلَى طَعَامِ الْمِسْكِينِ

(Nay! But you treat not the orphans with kindness and generosity! And urge not one another on the feeding of Al-Miskin!) (89:17-18) meaning, the poor man who has nothing to sustain him and suffice his needs. Then Allah says,

فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّينَ - الَّذِينَ هُمْ عَن صَلَـتِهِمْ سَاهُونَ

(So, woe unto those performers of Salah, those who with their Salah are Sahun.) Ibn `Abbas and others have said, "This means the hypocrites who pray in public but do not pray in private." Thus, Allah says,

لِّلْمُصَلِّينَ

(unto those performers of Salah,) They are those people who pray and adhere to the prayer, yet they are mindless of it. This may either be referring to its act entirely, as Ibn `Abbas said, or it may be referring to performing it in its stipulated time that has been legislated Islamically. This means that the person prays it completely outside of its time.

This was said by Masruq and Abu Ad-Duha.

`Ata' bin Dinar said, "All praise is due to Allah, the One Who said,

عَن صَلَـتِهِمْ سَاهُونَ

(with their Salah are Sahun.) and He did not say, `those who are absent minded in their prayer."' It could also mean the first time of the prayer, which means they always delay it until the end of its time, or they usually do so. It may also refer to not fulfilling its pillars and conditions, and in the required manner. It could also mean performing it with humility and contemplation of its meanings. The wording of the Ayah comprises all of these meanings. However, whoever has any characteristic of this that we have mentioned then a portion of this Ayah applies to him. And whoever has all of these characteristics, then he has completed his share of this Ayah, and the hypocrisy of actions is fulfilled in him. This is just as is confirmed in the Two Sahihs that the Messenger of Allah said,

«تِلْكَ صَلَاةُ الْمُنَافِقِ، تِلْكَ صَلَاةُ الْمُنَافِقِ، تِلْكَ صَلَاةُ الْمُنَافِقِ، يَجْلِسُ يَرْقُبُ الشَّمْسَ، حَتَّى إِذَا كَانَتْ بَيْنَ قَرْنَي الشَّيْطَانِ قَامَ فَنَقَرَ أَرْبَعًا، لَا يَذْكُرُ اللهَ فِيهَا إِلَّا قَلِيلًا»

(This is the prayer of the hypocrite, this is the prayer of the hypocrite, this is the prayer of the hypocrite. He sits watching the sun until it is between the two horns of Shaytan. Then he stands and pecks four (Rak`ahs) and he does not remember Allah (in them) except very little.) This Hadith is describing the end of the time for the `Asr prayer, which is the middle prayer as is confirmed by a text (Hadith). This is the time in which it is disliked to pray. Then this person stands to pray it, pecking in it like the pecking of a crow. He does not have tranquility or humility in it at all. Thus, the Prophet said,

«لَا يَذْكُرُ اللهَ فِيهَا إِلَّا قَلِيلًا»

(He does not remember Allah (in them) except very little.) He probably only stands to pray it so that the people will see him praying, and not seeking the Face of Allah. This is just as if he did not pray at all. Allah says,

إِنَّ الْمُنَـفِقِينَ يُخَـدِعُونَ اللَّهَ وَهُوَ خَادِعُهُمْ وَإِذَا قَامُواْ إِلَى الصَّلَوةِ قَامُواْ كُسَالَى يُرَآءُونَ النَّاسَ وَلاَ يَذْكُرُونَ اللَّهَ إِلاَّ قَلِيلاً

(Verily, the hypocrites seek to deceive Allah, but it is He Who deceives them. And when they stand up with laziness and to be seen of men, and they do not remember Allah but little.) (4:142) and Allah says here,

الَّذِينَ هُمْ يُرَآءُونَ

(Those who do good deeds only to be seen,) Imam Ahmad recorded from `Amr bin Murrah that he said, "We were sitting with Abu `Ubaydah when the people mentioned showing-off. A man known as Abu Yazid said, "I heard `Abdullah bin `Amr saying that the Messenger of Allah said,

«مَنْ سَمَّعَ النَّاسَ بِعَمَلِهِ، سَمَّعَ اللهُ بِهِ سَامِعَ خَلْقِهِ، وَحَقَّرَهُ وَصَغَّرَه»

(Whoever tries to make the people hear of his deed, Allah, the One Who hears His creation, will hear it and make him despised and degraded.)" from what is related to his statement,

الَّذِينَ هُمْ يُرَآءُونَ

(Those who do good deeds only to be seen.) is that whoever does a deed solely for Allah, but the people come to know about it, and he is pleased with that, then this is not considered showing off. Allah said:

وَيَمْنَعُونَ الْمَاعُونَ

(And withhold Al-Ma`un.) This means that they do not worship their Lord well, nor do they treat His creation well. They do not even lend that which others may benefit from and be helped by, even though the object will remain intact and be returned to them. These people are even stingier when it comes to giving Zakah and different types of charity that bring one closer to Allah. Al-Mas`udi narrated from Salamah bin Kuhayl who reported from Abu Al-`Ubaydin that he asked Ibn Mas`ud about Al-Ma`un and he said, "It is what the people give to each other, like an axe, a pot, a bucket and similar items." This is the end of the Tafsir of Surat Al-Ma`un, and all praise and thanks are due to Allah.

তাফসীর ইবনে কাছীর 

ঐ সূরার তাফসীর যার মধ্যে মাঊন (গৃহস্থালীর প্রয়োজনীয় ছোট খাট জিনিস) এর বর্ণনা দেয়া হয়েছে এবং এটা মক্কী।

১-৭ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তাআলা স্বীয় রাসূল (সঃ)-কে বলেনঃ হে মুহাম্মদ (সঃ)! তুমি কি ঐ লোকটিকে দেখেছো যে প্রতিফল দিবসকে অবিশ্বাস করে? সেতো ঐ ব্যক্তি যে ইয়াতীমকে ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেয় এবং অভাবগ্রস্তকে আহার্যদানে উৎসাহ প্রদান করে না। যেমন আল্লাহ তা'আলা অন্য জায়গায় বলেছেনঃ (আরবি)অর্থাৎ “না, কখনই নয়। বস্তুতঃ তোমরা ইয়াতীমকে সম্মান কর না এবং তোমরা অভাবগ্রস্তদেরকে খাদ্য দানে পরস্পরকে উৎসাহিত কর না।” (৮৯:১৭-১৮) অর্থাৎ ঐ ভিক্ষুককে, যে প্রয়োজন অনুপাতে ভিক্ষা পায় না।এরপর আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ সুতরাং দুর্ভোগ ঐ নামাযীদের যারা নিজেদের নামায সম্বন্ধে উদাসীন। অর্থাৎ সর্বনাশ রয়েছে ঐসব মুনাফিকের জন্যে যারা লোকদের সামনে নামায আদায় করে, কিন্তু অন্য সময় করে না। অর্থাৎ লোক দেখানোই তাদের নামায আদায়ের প্রকৃত উদ্দেশ্য। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) এ অর্থই করেছেন। এ অর্থও করা হয়েছে যে, তারা নির্দিষ্ট সময় পার করে দেয়। মাসরূক (রঃ) এবং আবু যুহা (রঃ) এ কথা বলেছেন। হযরত আতা ইবনে দীনার (রঃ) বলেনঃ আল্লাহর শুকরিয়া যে, তিনি (আরবি) বলেছেন, (আরবি) বলেননি। অর্থাৎ আল্লাহপাক বলছেন যে, তারা নামাযের ব্যাপারে উদাসীন থাকে, নামাযের মধ্যে গাফিল বা উদাসীন থাকে এরূপ কথা বলেননি। আবার এ শব্দেই এ অর্থও রয়েছে যে, এমন নামাযীদের জন্যেও সর্বনাশ রয়েছে যারা সব সময় শেষ সময় নামায আদায় করে। অথবা আরকান আহকাম আদায়ের ব্যাপারে মনোযোগ দেয় না। রুকু সিজদার ব্যাপারে উদাসীনতার পরিচয় দেয়। 

এসব কিছু যার মধ্যে রয়েছে সে নিঃসন্দেহে দুর্ভাগা। যার মধ্যে এসব অন্যায় যতো বেশী রয়েছে সে ততো বেশী সর্বনাশের মধ্যে পতিত হয়েছে। তার আমল ততো বেশী ক্রটিপুর্ণ এবং ক্ষতিকারক।সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “ওটা মুনাফিকের নামায, ওটা মুনাফিকের নামায, ওটা মুনাফিকের নামায, যে সূর্যের প্রতীক্ষায় বসে থাকে, সূর্য অস্ত যেতে শুরু করলে শয়তান যখন তার শিং মিলিয়ে দেয় তখন এ ব্যক্তি দাঁড়িয়ে মোরগের মত চারটি ঠোকর মারে। তাতে আল্লাহর স্মরণ খুব কমই করে।" এখানে আসরের নামাযকে বুঝানো হয়েছে। এ নামাযকে “সালাতুল ভূসতা” বা মধ্যবর্তী নামায বলে হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লিখিত ব্যক্তি মাকরূহ সময়ে উঠে দাড়ায় এবং কাকের মত ঠোকর দেয়। তাতে আরকান, আহকাম, রুকু, সিজদাহ ইত্যাদি যথাযথভাবে পালন করা হয় না এবং আল্লাহর স্মরণও খুব কম থাকে। লোক দেখানো নামায আদায় করা করা একই কথা। ঐ মুনাফিকদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “মুনাফিকরা আল্লাহকে ধােকা দেয় এবং তিনি তাদেরকে ধােকা (-র প্রতিফল) দেন, তারা যখন নামাযে দাঁড়ায় তখন অলসতা ও উদাসীনতার সাথে দাঁড়ায়, তারা শুধু লোক দেখানোর জন্যেই নামায পড়ে থাকে এবং তারা আল্লাহকে খুব কমই স্মরণ করে থাকে।" (৪:১৪২)। 

হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী করীম (সঃ) বলেছেনঃ (আরবি) জাহান্নামের একটি ঘাঁটির নাম। ওর আগুন এমন তেজস্বী ও গরম যে, জাহান্নামের অন্যান্য আগুন এই আগুন থেকে আল্লাহর কাছে দৈনিক চারশ’ বার আশ্রয় প্রার্থনা করে থাকে। এই (আরবি) এই উম্মতের অহংকারী আলেমদের জন্যে নির্ধারিত রয়েছে এবং যারা লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে ও গর্ব প্রকাশের উদ্দেশ্যে দান খায়রাত করে থাকে তাদের জন্যে নির্ধারিত রয়েছে। আর যারা লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে ও গর্ব প্রকাশের উদ্দেশ্যে হজ্ব করে ও জিহাদ করে তাদের জন্যে নির্ধারিত রয়েছে।” (এ হাদীসটি ইমাম তিবরানী (রঃ) বর্ণনা করেছেন)তবে হ্যা, এখানে স্মরণ রাখার বিষয় যে, কোন ব্যক্তি যদি সম্পূর্ণ সদুদ্দেশ্যে কোন ভাল কাজ করে, আর জনগণ তা জেনে ফেলে এবং এতে সে খুশী হয় তাহলে এটা রিয়াকারী ও অহংকার বলে গণ্য হবে না।মুসনাদে আবী ইয়ালা মুসিলীতে হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমি একাকী (নফল) নামায পড়ছিলাম এমন সময় হঠাৎ করে একটি লোক আমার কাছে এসে পড়ে, এতে আমি কিছুটা আনন্দিত হই (এতে কি আমার রিয়া হবে?)” উত্তরে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বললেন “(না, না, বরং) তুমি এতে দুটি পুণ্য লাভ করবে। একটি গোপন করার পুণ্য এবং আরেকটি প্রকাশ করার পুণ্য।” ইবনে মুবারক (রঃ) বলেন যে, (এ হাদীসটি রিয়াকারদের জন্যে খুবই উত্তম।

 কিন্তু সনদের দিক থেকে এটা গারীব। তবে একই অর্থবোধক হাদীস অন্য সনদেও বর্ণিত আছে)ইমাম  ইবনে জারীর (রঃ) একটি গারীব সনদে হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, যখন (আরবি) এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয় তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ “আল্লাহ মহান! তোমাদের প্রত্যেককে সারা পৃথিবীর সমান দেয়ার চেয়েও এটাই তোমাদের জন্যে উত্তম। এখানে ঐ ব্যক্তিকে বুঝানো হয়েছে, যে নামায পড়লে কোন কল্যাণের আশা করে না এবং না পড়লেও স্বীয় প্রতিপালকের:ভয় তার মনে কোন রেখাপাত করে না।”অন্য এক রিওয়াইয়াতে আছে যে, নবী করীম (সঃ)-কে এ আয়াতের তাৎপর্য জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেনঃ “এখানে ঐ সব লোকের কথা বলা হয়েছে যারা নামায আদায়ের ব্যাপারে নির্ধারিত সময় থেকে বিলম্ব করে। এর একটি অর্থ এও রয়েছে যে, আদৌ নামায পড়ে না। অন্য একটি অর্থ এই আছে যে, শরীয়ত অনুমোদিত সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর নামায পড়ে। আবার এটাও অর্থ রয়েছে যে, সময়ের প্রথম দিকে নামায পড়ে না। একটি মাওকুফ হাদীসে রয়েছে যে, হযরত সা'দ ইবনে আবী অক্কাস (রাঃ) বলেনঃ এর ভাবার্থ হলোঃ নামাযের সময়কে সংকীর্ণ করে ফেলে। এ বর্ণনাটিই সবচেয়ে নির্ভুল ও নির্ভরযোগ্য। ইমাম বায়হাকীও (রঃ) বলেছেন যে, মার’ রিওয়াইয়াত যঈফ বা দুর্বল এবং মাওকূফ রিওয়াইয়াত সহীহ বা বিশুদ্ধ। ইমাম হাকিমও (রঃ) একথা বলেছেন। 

কাজেই এসব লোক আল্লাহর ইবাদতের ক্ষেত্রে যেমন অলসতা করে, তেমনি লোকদের অধিকারও আদায় করে না। তারা রিয়াকারী করে ও যাকাত দেয় না। হযরত আলী (রাঃ) মাউন শব্দের অর্থ যাকাত পরিশোধ বলেও উল্লেখ করেছেন। হযরত ইবনে উমার (রাঃ) এবং অন্যান্য নির্ভরযোগ্য তাফসীরকারগণও একই কথা বলেছেন। হযরত হাসান বসরী (রাঃ) বলেন যে, তাদের নামায আদায়ও রিয়াকারী ও অহংকার প্রকাশক। তাদের সম্পদের সাদকার মধ্যে রিয়া বা লোক দেখানো উদ্দেশ্য রয়েছে। হযরত যায়েদ ইবনে আসলাম (রঃ) বলেন যে, এই মুনাফিকরা লোক দেখানোর জন্যে নামায আদায় করে, কারণ নামায প্রকাশ্য ব্যাপার। তবে তারা যাকাত আদায় করে না, কারণ যাকাত গোপনীয় ব্যাপার। হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন যে, মাউন ঐ সব জিনিষকে বলা হয় যা মানুষ একে অন্যের নিকট চেয়ে থাকে। যেমন কোদাল, বালতি, ডেকচি ইত্যাদি। অন্য এক বর্ণনায় রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সাহাবীগণ মাউনের এ অর্থই বর্ণনা করেছেন। অন্য এক বর্ণনায় আছে যে, বর্ণনাকারী বলেনঃ “আমরা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সাথে ছিলাম এবং মাউনের আমরা এ তাফসীর করেছি।”সুনানে নাসাঈতে হযরত আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ “প্রত্যেক ভাল জিনিষই সদকা। ডোল, হাঁড়ি, বালতি ইত্যাদি দেয়াকে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর আমলে আমরা মাউন নামে অভিহিত করতাম। 

মোটকথা, এর অর্থ হলো যাকাত না দেয়া, আনুগত্য না করা, কোন জিনিষ চাইলে না দেয়া, ছোট ছোট জিনিষ কেউ কিছু সময়ের জন্যে নিতে চাইলে না দেয়া, যেমন চালুনি, কোদাল, দা, কুড়াল, ডেকচি ডোল ইত্যাদি।একটি গারীব বা দুর্বল হাদীসে রয়েছে যে, নুমায়ের গোত্রের প্রতিনিধি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বললেনঃ “হে আল্লাহর রাসুল (সঃ)! আমাদেরকে বিশেষ আদেশ কি দিচ্ছেন?” রাসূলুল্লাহ (সঃ) উত্তরে বললেনঃ “মাউনের ব্যাপারে নিষেধ করো না। প্রতিনিধি পুনরায় প্রশ্ন করলেনঃ “মাঊন কি?” তিনি জবাব দিলেনঃ “পাথর, লোহা, পানি।” প্রতিনিধি জিজ্ঞেস করলেনঃ “লোহা দ্বারা কোন লোহাকে বুঝানো হচ্ছে?” রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেনঃ “মনে কর, তোমাদের তামার পাতিল, লোহার কোদাল ইত্যাদি। প্রতিনিধি প্রশ্ন করলেনঃ “পাথরের অর্থ কি?” রাসূলুল্লাহ বললেনঃ “ডেকচি, শীলবাটা ইত্যাদি।” (এ হাদীসটি খুবই গরীব বা দুর্বল) এর রাভী বা বর্ণনাকারী মাশহুর’ শ্রেণীভুক্ত নন।আলী ইবনে ফুলান নুমাইরী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বলতে শুনেছেনঃ “মুসলমান মুসলমানের ভাই। দেখা হলে সালাম করবে, সালাম করলে ভাল জবাব দিবে এবং মাঊনের ব্যাপারে অস্বীকৃতি জানাবে অর্থাৎ নিষেধ করবে না।” আলী নুমাইরী (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ “মাউন কি?” উত্তরে তিনি বললেনঃ “পাথর, লোহা এবং এ জাতীয় অন্যান্য জিনিষ।” এসব ব্যাপারে আল্লাহ সবচেয়ে ভাল জানেন। 

YOUTH

Tawheed : The Faith of All Prophets

Surat-ul-Mulk: The Kingdom (6)