1444H Week-10

Friday, 07 October 2022

 

 

QURAN

An-Naml | The Ant | Verse 27-35

27:27

۞ قَالَ سَنَنظُرُ أَصَدَقْتَ أَمْ كُنتَ مِنَ ٱلْكَـٰذِبِينَ ٢٧

[Solomon] said, "We will see whether you were truthful or were of the liars.

— Saheeh International

সুলাইমান বললঃ আমি দেখব, তুমি সত্য বলেছ, না কি তুমি মিথ্যাবাদী?

— Sheikh Mujibur Rahman


27:28

ٱذْهَب بِّكِتَـٰبِى هَـٰذَا فَأَلْقِهْ إِلَيْهِمْ ثُمَّ تَوَلَّ عَنْهُمْ فَٱنظُرْ مَاذَا يَرْجِعُونَ ٢٨

Take this letter of mine and deliver it to them. Then leave them and see what [answer] they will return."

— Saheeh International

তুমি যাও আমার এই পত্র নিয়ে এবং এটা তাদের নিকট অর্পন কর; অতঃপর তাদের নিকট হতে দূরে সরে থেক এবং লক্ষ্য কর তাদের প্রতিক্রিয়া কি?

— Sheikh Mujibur Rahman


27:29

قَالَتْ يَـٰٓأَيُّهَا ٱلْمَلَؤُا۟ إِنِّىٓ أُلْقِىَ إِلَىَّ كِتَـٰبٌۭ كَرِيمٌ ٢٩

She said, "O eminent ones, indeed, to me has been delivered a noble letter.

— Saheeh International

সেই নারী বললঃ হে পরিষদবর্গ! আমাকে এক সম্মানিত পত্র দেয়া হয়েছে।

— Sheikh Mujibur Rahman


27:30

إِنَّهُۥ مِن سُلَيْمَـٰنَ وَإِنَّهُۥ بِسْمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحْمَـٰنِ ٱلرَّحِيمِ ٣٠

Indeed, it is from Solomon, and indeed, it is [i.e., reads]: 'In the name of Allāh, the Entirely Merciful, the Especially Merciful,

— Saheeh International

ইহা সুলাইমানের নিকট হতে এবং ইহা দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে।

— Sheikh Mujibur Rahman


27:31

أَلَّا تَعْلُوا۟ عَلَىَّ وَأْتُونِى مُسْلِمِينَ ٣١

Be not haughty with me but come to me in submission [as Muslims].'"

— Saheeh International

অহমিকা বশে আমাকে অমান্য করনা, এবং আনুগত্য স্বীকার করে আমার নিকট উপস্থিত হও।

— Sheikh Mujibur Rahman


27:32

قَالَتْ يَـٰٓأَيُّهَا ٱلْمَلَؤُا۟ أَفْتُونِى فِىٓ أَمْرِى مَا كُنتُ قَاطِعَةً أَمْرًا حَتَّىٰ تَشْهَدُونِ ٣٢

She said, "O eminent ones, advise me in my affair. I would not decide a matter until you witness [for] me."

— Saheeh International

সেই নারী বললঃ হে পরিষদবর্গ! আমার এই সমস্যায় তোমাদের অভিমত দাও; আমি যা সিদ্ধান্ত নিই তাতো তোমাদের উপস্থিতিতেই নিই।

— Sheikh Mujibur Rahman


27:33

قَالُوا۟ نَحْنُ أُو۟لُوا۟ قُوَّةٍۢ وَأُو۟لُوا۟ بَأْسٍۢ شَدِيدٍۢ وَٱلْأَمْرُ إِلَيْكِ فَٱنظُرِى مَاذَا تَأْمُرِينَ ٣٣

They said, "We are men of strength and of great military might, but the command is yours, so see what you will command."

— Saheeh International

তারা বললঃ আমরাতো শক্তিশালী ও কঠোর যোদ্ধা; তবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা আপনারই। কি আদেশ করবেন তা আপনি ভেবে দেখুন।

— Sheikh Mujibur Rahman


27:34

قَالَتْ إِنَّ ٱلْمُلُوكَ إِذَا دَخَلُوا۟ قَرْيَةً أَفْسَدُوهَا وَجَعَلُوٓا۟ أَعِزَّةَ أَهْلِهَآ أَذِلَّةًۭ ۖ وَكَذَٰلِكَ يَفْعَلُونَ ٣٤

She said, "Indeed kings - when they enter a city, they ruin it and render the honored of its people humbled. And thus do they do.

— Saheeh International

সে বললঃ রাজা-বাদশাহরা যখন কোন জনপদে প্রবেশ করে তখন ওকে বিপর্যস্ত করে দেয় এবং সেখানকার মর্যাদাবান ব্যক্তিদেরকে অপদস্থ করে; এরাও এ রূপই করবে।

— Sheikh Mujibur Rahman


27:35

وَإِنِّى مُرْسِلَةٌ إِلَيْهِم بِهَدِيَّةٍۢ فَنَاظِرَةٌۢ بِمَ يَرْجِعُ ٱلْمُرْسَلُونَ ٣٥

But indeed, I will send to them a gift and see with what [reply] the messengers will return."

— Saheeh International

আমি তাদের নিকট উপঢৌকন পাঠাচ্ছি, দেখি দূতেরা কি বার্তা নিয়ে ফিরে আসে!

— Sheikh Mujibur Rahman

Tafsir Ibn Kathir 

Sulayman's Letter to Bilqis

Allah tells us what Sulayman said to the hoopoe when he told him about the people of Saba' and their queen:

قَالَ سَنَنظُرُ أَصَدَقْتَ أَمْ كُنتَ مِنَ الْكَـذِبِينَ

((Sulayman) said: "We shall see whether you speak the truth or you are (one) of the liars.") meaning, `are you telling the truth'

أَمْ كُنتَ مِنَ الْكَـذِبِينَ

(or you are (one) of the liars.) meaning, `or are you telling a lie in order to save yourself from the threat I made against you'

اذْهَب بِّكِتَابِى هَـذَا فَأَلْقِهْ إِلَيْهِمْ ثُمَّ تَوَلَّ عَنْهُمْ فَانْظُرْ مَاذَا يَرْجِعُونَ

(Go you with this letter of mine and deliver it to them then draw back from them and see what they return.) Sulayman wrote a letter to Bilqis and her people and gave it to the hoopoe to deliver. It was said that he carried it on his wings, as is the way with birds, or that he carried it in his beak. He went to their land and found the palace of Bilqis, then he went to her private chambers and threw the letter through a small window, then he stepped to one side out of good manners. Bilqis was amazed and confused when she saw that, then she went and picked up the letter, opened its seal and read it. The letter said:

إِنَّهُ مِن سُلَيْمَانَ وَإِنَّهُ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَـنِ الرَّحِيمِ - أَلاَّ تَعْلُواْ عَلَىَّ وَأْتُونِى مُسْلِمِينَ

(it is from Sulayman, and it (reads): `In the Name of Allah, the Most Gracious, the Most Merciful; Be you not exalted against me, but come to me submitting (as Muslims).') So she gathered her commanders and ministers and the leaders of her land, and said to them:

يأَيُّهَا الْمَلأُ إِنَّى أُلْقِىَ إِلَىَّ كِتَابٌ كَرِيمٌ

("O chiefs! Verily, here is delivered to me a noble letter.") She described it as such because of the wondrous things she had seen, that it was delivered by a bird who threw it to her, then stood aside out of good manners. This was something that no king could do. Then she read the letter to them:

إِنَّهُ مِن سُلَيْمَانَ وَإِنَّهُ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَـنِ الرَّحِيمِ - أَلاَّ تَعْلُواْ عَلَىَّ وَأْتُونِى مُسْلِمِينَ

(Verily, it is from Sulayman, and it (reads): `In the Name of Allah, the Most Gracious, the Most Merciful; Be you not exalted against me, but come to me submitting (as Muslims).') Thus they knew that it was from Allah's Prophet Sulayman, upon him be peace, and that they could not match him. This letter was the utmost in brevity and eloquence, coming straight to the point.

أَلاَّ تَعْلُواْ عَلَىَّ

(Be you not exalted against me,) Qatadah said: "Do not be arrogant with me.

وَأْتُونِى مُسْلِمِينَ

(but come to me submitting (as Muslims). )" `Abdur-Rahman bin Zayd bin Aslam said: "Do not refuse or be too arrogant to come to me

وَأْتُونِى مُسْلِمِينَ

(but come to me submitting (as Muslims).)"

Bilqis consults with Her Chiefs

When she read Sulayman's letter to them and consulted with them about this news, she said:

يأَيُّهَا الْمَلأ أَفْتُونِى فِى أَمْرِى مَا كُنتُ قَـطِعَةً أَمْراً حَتَّى تَشْهَدُونِ

("O chiefs! Advise me in (this) case of mine. I decide no case till you are present with me.") meaning, `until you come together and offer me your advice.'

قَالُواْ نَحْنُ أُوْلُواْ قُوَّةٍ وَأُولُو بَأْسٍ شَدِيدٍ

(They said: "We have great strength, and great ability for war...") They reminded her of their great numbers, preparedness and strength, then they referred the matter to her and said:

وَالاٌّمْرُ إِلَيْكِ فَانظُرِى مَاذَا تَأْمُرِينَ

(but it is for you to command; so think over what you will command.) meaning, `we have the power and strength, if you want to go to him and fight him.' The matter is yours to decide, so instruct us as you see fit and we will obey. Ibn `Abbas said: "Bilqis said:

إِنَّ الْمُلُوكَ إِذَا دَخَلُواْ قَرْيَةً أَفْسَدُوهَا وَجَعَلُواْ أَعِزَّةَ أَهْلِهَآ أَذِلَّةً

(Verily, kings, when they enter a town, they destroy it and make the most honorable amongst its people the lowest.) And Allah said:

وَكَذلِكَ يَفْعَلُونَ

(And thus they do. ) Then she resorted to peaceful means, seeking a truce and trying to placate Sulayman, and said:

وَإِنِّى مُرْسِلَةٌ إِلَيْهِمْ بِهَدِيَّةٍ فَنَاظِرَةٌ بِمَ يَرْجِعُ الْمُرْسَلُونَ

(But verily, I am going to send him a present, and see with what the messengers return.) meaning, `I will send him a gift befitting for one of his status, and will wait and see what his response will be. Perhaps he will accept that and leave us alone, or he will impose a tax which we can pay him every year, so that he will not fight us and wage war against us.' Qatadah said: "May Allah have mercy on her and be pleased with her -- how wise she was as a Muslim and (before that) as an idolator! She understood how gift-giving has a good effect on people." Ibn `Abbas and others said: "She said to her people, if he accepts the gift, he is a king, so fight him; but if he does not accept it, he is a Prophet, so follow him."

তাফসীর ইবনে কাছীর 

২৭-৩১ নং আয়াতের তাফসীর: হুদহুদের খবর শ্রবণ মাত্রই হযরত সুলাইমান (আঃ) এর সত্যতা নিরূপণ শুরু করলেন যে, যদি সে তার কথায় সত্যবাদী হয় তবে সে ক্ষমার যোগ্য হবে, আর যদি সে মিথ্যাবাদী প্রমাণিত হয় তবে হবে সে শাস্তির যোগ্য। তাই তিনি তাকেই বললেনঃ “তুমি আমার এ চিঠিখানা নিয়ে গিয়ে বিলকীসকে দিয়ে এসো যে সেখানে শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিতা রয়েছে।” তখন ঐ চিঠিখানা চঞ্চুতে করে নিয়ে বা পালকের সাথে বাধিয়ে নিয়ে হুদহুদ উড়ে চললো। সেখানে পৌছে সে বিলকীসের প্রাসাদে প্রবেশ করলো। ঐ সময় বিলকীস নির্জন কক্ষে অবস্থান করছিল। হুদহুদ একটি তাকের মধ্য দিয়ে ঐ চিঠিখানা তার সামনে রেখে দিলো এবং ভদ্রতার সাথে একদিকে সরে গেল। এতে সে অত্যন্ত বিস্মিত হলো এবং সাথে সাথে কিছুটা ভয়ও তার অন্তরে জেগে উঠলো। চিঠিখানা উঠিয়ে নিয়ে মোহর ছিড়ে দিয়ে পত্রটি খুললো এবং পড়তে শুরু করলো। 

ওর বিষয়বস্তু অবগত হয়ে নিজের সভাষদবর্গকে একত্রিত করলো এবং বললোঃ “আমাকে এক সম্মানিত পত্র দেয়া হয়েছে।” ঐ পত্রটি যে সম্মানিত ছিল এটা তার কাছে প্রকাশিত হয়ে পড়েছিল। কারণ, একটি পাখী ওটাকে নিয়ে আসছে, অতি সতর্কতার সাথে তার কাছে পৌঁছিয়ে দিচ্ছে এবং তার সামনে আদবের সাথে রেখে দিয়ে এক দিকে সরে দাঁড়াচ্ছে! তাই সে বুঝে নিলো যে, নিঃসন্দেহে চিঠিটি সম্মানিত এবং কোন মর্যাদা সম্পন্ন লোকের পক্ষ হতে প্রেরিত।তারপর সে পত্রটির বিষয়বস্তু সকলকে শুনিয়ে দিলো। শুরুতেই বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম লিখা রয়েছে এবং সাথে সাথে মুসলমান হওয়ার ও তাঁর অনুগত হওয়ার আহ্বান রয়েছে।সুতরাং তারা সবাই বুঝে নিলো যে, এটা আল্লাহর নবীরই দাওয়াতনামা। তারা এটাও বুঝতে পারলো যে, তাঁর সাথে মুকাবিলা করার শক্তি তাদের নেই।অতঃপর পত্রটির সুন্দর বাচনভঙ্গী, সংক্ষেপণ, অথচ গভীর ভাব তাদের সকলকেই বিস্ময়াভিভূত করলো। 

অল্প কথায় গভীর ভাব প্রকাশ করা হয়েছে। এ যেন সমুদ্রকে কুঁজো বা কলসির মধ্যে বন্ধ করা।উলামায়ে কিরামের উক্তি রয়েছে যে, হযরত সুলাইমান (আঃ)-এর পূর্বে কেউ পত্রে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম লিখেননি। হযরত বারীদা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সাথে চলছিলাম। তিনি আমাকে বলেনঃ “এমন একটি আয়াত আমি জানি যা আমার পূর্বে হযরত সুলাইমান ইবনে দাউদ (আঃ)-এর পরে আর কোন নবীর উপর অবতীর্ণ হয়নি।” আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! ঐ আয়াতটি কি? তিনি উত্তরে বললেনঃ “মসজিদ হতে বের হওয়ার পূর্বেই আমি তোমাকে আয়াতটির কথা বলে দিবো।” অতঃপর তিনি মসজিদ থেকে বের হতে উদ্যত হন, এমনকি মসজিদ হতে একটি পা বাইরে রেখেও দেন। আমি মনে করলাম যে, হয়তো তিনি ভুলে গেছেন। 

এমতাবস্থায় তিনি আমার দিকে ফিরে তাকান এবং (আরবি) -এই আয়াতটিপাঠ করেন।” (এ হাদীসটি মুসনাদে ইবনে আবি হাতিমে বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু এটা খুবই গরীব ও দুর্বল হাদীস)অন্য রিওয়াইয়াতে আছে যে, এই আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে রাসূলল্লাহ (সঃ) (আরবি) লিখতেন। যখন এই আয়াত অবতীর্ণ হয় তখন তিনি(আরবি) লিখতে শুরু করেন। হযরত সুলাইমান (আঃ)-এর পত্রের বিষয়বস্তু শুধু নিম্নরূপই ছিলঃ “আমার সামনে হঠকারিতা করো না, আমাকে বাধ্য করো না, আমার কথা মেনে নাও, অহংকার করো না, বরং খাটী একত্ববাদী ও অনুগত হয়ে আমার নিকট চলে এসো।” 

৩২-৩৫ নং আয়াতের তাফসীর: বিলকীস তার সভাষদবর্গকে হযরত সুলাইমান (আঃ)-এর পত্রের বিষয়বস্তু শুনিয়ে তাদের কাছে পরামর্শ চেয়ে বললোঃ “তোমরা তো জান যে, যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তোমাদের সাথে পরামর্শ না করি এবং তোমরা উপস্থিত না থাকো ততক্ষণ পর্যন্ত আমি কোন বিষয়ের সিদ্ধান্ত একা গ্রহণ করি না। কাজেই এই ব্যাপারেও আমি তোমাদের নিকট পরামর্শ চাচ্ছি যে, তোমাদের মতামত কি?” সবাই সমস্বরে জবাব দিলোঃ “আমাদের যুদ্ধের শক্তি যথেষ্ট রয়েছে এবং আমাদের ক্ষমতা সর্বজনবিদিত। আপনি আমাদের ব্যাপারে নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন যে, আপনি যা হুকুম করবেন তা আমরা পালন করার জন্যে প্রস্তুত আছি।বিলকীসের সভাষদবর্গ ও সৈন্য-সামন্ত যুদ্ধের প্রতি বেশ আগ্রহ প্রকাশ করলো বটে, কিন্তু সে ছিল বড়ই বুদ্ধিমতী ও দূরদর্শিনী। আর সে হুদহুদের মাধ্যমে পত্র পাওয়ার সুস্পষ্ট মু'জিযা স্বচক্ষে দেখেছিল। 

সে এটাও বুঝতে পেরেছিল যে, হযরত সুলাইমান (আঃ)-এর শক্তির মুকাবিলা করার ক্ষমতা তার সেনাবাহিনীর নেই। যদি যুদ্ধ সংঘটিত হয় তবে তার রাজ্যও ধ্বংস হবে এবং তার নিজেরও কোন নিরাপত্তা থাকবে না। তাই সে তার মন্ত্রীবর্গ ও উপদেষ্টাদেরকে বললোঃ “রাজা-বাদশাহদের নিয়ম এই যে, যখন তারা বিজয়ীর বেশে কোন জনপদে প্রবেশ করে তখন ওকে বিপর্যস্ত করে দেয় এবং তথাকার মর্যাদাবান ব্যক্তিদের অপদস্থ করে। এরাও এইরূপই করবে।”অতঃপর সে একটি কৌশল অবলম্বন করলো যে হযরত সুলাইমান (আঃ)-এর সাথে সন্ধি করা যাক। সুতরাং সে তার কৌশলপূর্ণ কথা সভাদদের সামনে পেশ করলো। সে তাদেরকে বললোঃ “এখন আমি তাঁর কাছে এক মূল্যবান উপঢৌকন পাঠাচ্ছি। দেখা যাক, দূতেরা কি নিয়ে ফিরে আসে? খুব সম্ভব তিনি এটা কবুল করবেন এবং ভবিষ্যতেও প্রতি বছর আমরা এটা জিযিয়া হিসেবে তাঁর নিকট পাঠাতে থাকবো। সুতরাং তার আমাদের দেশকে আক্রমণ করার প্রয়োজন হবে না।কাতাদা (রঃ) বলেন যে, এভাবে উপঢৌকন পাঠিয়ে সে বড়ই বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছিল। সে জানতো যে, টাকা পয়সা এমনই জিনিস যা লোহাকেও নরম করে দেয়। আর হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, সে তার কওমকে বলেছিলঃ “যদি তিনি আমাদের উপঢৌকন গ্রহণ করেন তবে বুঝবে যে, তিনি একজন বাদশাহ। আর যদি গ্রহণ না করেন তবে বুঝবে যে, তিনি একজন নবী। সুতরাং তখন তাঁর আনুগত্য স্বীকার করা আমাদের জন্যে অপরিহার্য কর্তব্য হবে। 

 

SURAH

Al-Falaq | The Daybreak  | Verse 01-05

قُلۡ اَعُوۡذُ بِرَبِّ الۡفَلَقِ ۙ﴿۱﴾

 مِنۡ شَرِّ مَا خَلَقَ ۙ﴿۲﴾

 وَ مِنۡ شَرِّ غَاسِقٍ اِذَا وَقَبَ ۙ﴿۳﴾

 وَ مِنۡ شَرِّ النَّفّٰثٰتِ فِی الۡعُقَدِ ۙ﴿۴﴾

 وَ مِنۡ شَرِّ حَاسِدٍ اِذَا حَسَدَ ﴿۵﴾ 

113:1

قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ ٱلْفَلَقِ ١

Say, "I seek refuge in the Lord of daybreak

— Saheeh International

বলঃ আমি আশ্রয় চাচ্ছি ঊষার স্রষ্টার।

— Sheikh Mujibur Rahman


113:2

مِن شَرِّ مَا خَلَقَ ٢

From the evil of that which He created

— Saheeh International

তিনি যা সৃষ্টি করেছেন উহার অনিষ্টতা হতে।

— Sheikh Mujibur Rahman


113:3

وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ ٣

And from the evil of darkness when it settles

— Saheeh International

অনিষ্টতা হতে রাতের, যখন ওটা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়।

— Sheikh Mujibur Rahman


113:4

وَمِن شَرِّ ٱلنَّفَّـٰثَـٰتِ فِى ٱلْعُقَدِ ٤

And from the evil of the blowers in knots

— Saheeh International

এবং ঐ সব নারীর অনিষ্টতা হতে যারা গ্রন্থিতে ফুৎকার দেয়,

— Sheikh Mujibur Rahman


113:5

وَمِن شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ ٥

And from the evil of an envier when he envies."

— Saheeh International

এবং অনিষ্টতা হতে হিংসুকের, যখন সে হিংসা করে।

— Sheikh Mujibur Rahman

Tafsir Ibn Kathir 

Which was revealed in Makkah

The Position of Ibn Mas`ud concerning Al-Mu`awwidhatayn

Imam Ahmad recorded from Zirr bin Hubaysh that Ubayy bin Ka`b told him that Ibn Mas`ud did not record the Mu`awwidhatayn in his Mushaf (copy of the Qur'an). So Ubayy said, "I testify that the Messenger of Allah informed me that Jibril said to him,

قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ

(Say: "I seek refuge with the Lord of Al-Falaq.")(113:1) So he said it. And Jibril said to him,

قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ

(Say: "I seek refuge with the Lord of mankind.") (114:1) So he said it. Therefore, we say what the Prophet said."

The Virtues of Surahs Al-Falaq and An-Nas

In his Sahih, Muslim recorded on the authority of `Uqbah bin `Amir that the Messenger of Allah said,

«أَلَمْ تَرَ آيَاتٍ أُنْزِلَتْ هَذِهِ اللَّيْلَةَ لَمْ يُرَ مِثْلُهُنَّ قَطُّ:

(Do you not see that there have been Ayat revealed to me tonight the like of which has not been seen before) They are

قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ »

(Say: "I seek refuge with, the Lord of Al-Falaq.")(113:1) and;

قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ

(Say: "I seek refuge with the Lord of mankind.") (114:1)) This Hadith was recorded by Ahmad, At-Tirmidhi and An-Nasa'i. At-Tirmidhi said, "Hasan Sahih."

Another Narration

Imam Ahmad recorded from `Uqbah bin `Amir that he said, "While I was leading the Messenger of Allah along one of these paths he said,

«يَا عُقْبَةُ أَلَا تَرْكَبُ؟»

(O `Uqbah! Will you not ride) I was afraid that this might be considered an act of disobedience. So the Messenger of Allah got down and I rode for a while. Then he rode. Then he said,

«يَا عُقْبَةُ، أَلَا أُعَلِّمُكَ سُورَتَيْنِ مِنْ خَيْرِ سُورَتَيْنِ قَرَأَ بِهِمَا النَّاسُ؟»

(O `Uqbah! Should I not teach you two Surahs that are of the best two Surahs that the people recite) I said, `Of course, O Messenger of Allah.' So he taught me to recite

قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ

(Say: "I seek refuge with the Lord of Al-Falaq.") (113:1) and

قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ

(Say: "I seek refuge with the Lord of mankind.") (114:1) Then the call was given to begin the prayer and the Messenger of Allah went forward (to lead the people), and he recited them in the prayer. Afterwards he passed by me and said,

«كَيْفَ رَأَيْتَ يَا عُقَيْبُ، اقْرَأْ بِهِمَا كُلَّمَا نِمْتَ وَكُلَّمَا قُمْتَ»

(What do you think, O `Uqayb Recite these two Surahs whenever you go to sleep and whenever you get up.)"

An-Nasa'i and Abu Dawud both recorded this Hadith.

Another Narration

«إِنَّ النَّاسَ لَمْ يَتَعَوَّذُوا بِمِثْلِ هَذَيْنِ:

(Verily, the people do not seek protection with anything like these two:

قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ

(Say: "I seek refuge with the Lord of Al-Falaq.")(113:1) and;

قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ »

(Say: "I seek refuge with (Allah) the Lord of mankind.")) (114:1)

Another Narration

An-Nasa'i recorded that `Uqbah bin `Amir said, "I was walking with the Messenger of Allah when he said,

«يَا عُقْبَةُ قُلْ»

(O `Uqbah! Say!) I replied, `What should I say' So he was silent and did not respond to me. Then he said,

«قُلْ»

(Say!) I replied, `What should I say, O Messenger of Allah' He said,

«قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ »

(Say: "I seek refuge with the Lord of Al-Falaq.") So, I recited it until I reached its end. Then he said,

«قُلْ»

(Say!) I replied, `What should I say O Messenger of Allah' He said,

«قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ »

(Say: "I seek refuge with the Lord of mankind.") So, I recited it until I reached its end. Then the Messenger of Allah said,

«مَا سَأَلَ سَائِلٌ بِمِثْلِهَا، وَلَا اسْتَعَاذَ مُسْتَعِيذٌ بِمِثْلِهَا»

(No person beseeches with anything like these, and no person seeks refuge with anything like these.)"

Another Hadith

An-Nasa'i recorded that Ibn `Abis Al-Juhani said that the Prophet said to him,

«يَا ابْنَ عَابِسٍ أَلَا أَدُلُّكَ أَوْ أَلَا أُخْبِرُكَ بِأَفْضَلِ مَا يَتَعَوَّذُ بِهِ الْمُتَعَوِّذُونَ؟»

(O Ibn `Abis! Shall I guide you to -- or inform you -- of the best thing that those who seek protection use for protection) He replied, "Of course, O Messenger of Allah!" The Prophet said,

«قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ

قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ

هَاتَانِ السُّورَتَانِ»

(Say: "I seek refuge with the Lord of Al-Falaq.")( and (Say: "I seek refuge with the Lord of mankind.")( These two Surahs (are the best protection).) Imam Malik recorded from `A'ishah that whenever the Messenger of Allah was suffering from an ailment, he would recite the Mu`awwidhatayn over himself and blow (over himself). Then if his pain became severe, `A'ishah said that she would recite the Mu`awwidhatayn over him and take his hand and wipe it over himself seeking the blessing of those Surahs. Al-Bukhari, Abu Dawud, An-Nasa'i and Ibn Majah all recorded this Hadith.

It has been reported from Abu Sa`id that the Messenger of Allah used to seek protection against the evil eyes of the Jinns and mankind. But when the Mu`awwi- dhatayn were revea- led, he used them (for protection) and aban- doned all else besides them. At-Tirmidhi, An-Nasa'i and Ibn Majah recorded this. At-Tirmidhi said, "This Hadith is Hasan Sahih."

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَـنِ الرَّحِيمِ

(In the Name of Allah, the Most Gracious, the Most Merciful.

Ibn Abi Hatim recorded that Jabir said, "Al-Falaq is the morning." Al-`Awfi reported from Ibn `Abbas, "Al-Falaq is the morning." The same has been reported from Mujahid, Sa`id bin Jubayr, `Abdullah bin Muhammad bin `Aqil, Al-Hasan, Qatadah, Muhammad bin Ka`b Al-Qurazi and Ibn Zayd. Malik also reported a similar statement from Zayd bin Aslam. Al-Qurazi, Ibn Zayd and Ibn Jarir all said, "This is like Allah's saying,

فَالِقُ الإِصْبَاحِ

(He is the Cleaver of the daybreak.)." (6:96) Allah said,

مِن شَرِّ مَا خَلَقَ

(From the evil of what He has created,) This means from the evil of all created things. Thabit Al-Bunani and Al-Hasan Al-Basri both said, "Hell, Iblis and his progeny, from among that which He (Allah) created."

وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ

(And from the evil of the Ghasiq when Waqab,) Mujahid said, "Ghasiq is the night, and `when it Waqab' refers to the setting of the sun." Al-Bukhari mentioned this from him. Ibn Abi Najih also reported a similar narration from him (Mujahid).

The same was said by Ibn `Abbas, Muhammad bin Ka`b Al-Qurazi, Ad-Dahhak, Khusayf, Al-Hasan and Qatadah. They said, "Verily, it is the night when it advances with its darkness." Az-Zuhri said,

وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ

(And from the evil of the Ghasiq when Waqab,) "This means the sun when it sets." Abu Al-Muhazzim reported that Abu Hurayrah said,

وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ

(And from the evil of the Ghasiq when Waqab, ) "This means the star." Ibn Zayd said, "The Arabs used to say, `Al-Ghasiq is the declination (of the position) of the heavenly body known as Pleiades. The number of those who were ill and stricken with plague would increase whenever it would decline, and their number would lessen whenever it rose."'

Ibn Jarir said, "Others have said that it is the moon."

The support for the people who hold this position (that it means the moon) is a narration that Imam Ahmad recorded from Al-Harith bin Abi Salamah. He said that `A'ishah said, "The Messenger of Allah took me by my hand and showed me the moon when it rose, and he said,

«تَعَوَّذِي بِاللهِ مِنْ شَرِّ هَذَا الْغَاسِقِ إِذَا وَقَبَ»

(Seek refuge with Allah from the evil of this Ghasiq when it becomes dark.)" At-Tirmidhi and An-Nasa'i both recorded this Hadith in their Books of Tafsir in their Sunans. Allah said,

وَمِن شَرِّ النَّفَّـثَـتِ فِى الْعُقَدِ

(And from the evil of the blowers in knots,) Mujahid, `Ikrimah, Al-Hasan, Qatadah and Ad-Dahhak all said, "This means the witches." Mujahid said, "When they perform their spells and blow into the knots."

In another Hadith it has been reported that Jibril came to the Prophet and said, "Are you suffering from any ailment, O Muhammad" The Prophet replied,

«نَعَمْ»

(Yes.) So Jibril said, "In the Name of Allah, I recite prayer (Ruqyah) over you, from every illness that harms you, from the evil of every envious person and evil eye. May Allah cure you."

Discussion of the Bewitchment of the Prophet

In the Book of Medicine of his Sahih, Al-Bukhari recorded that `A'ishah said, "The Messenger of Allah was bewitched until he thought that he had relations with his wives, but he had not had relations with them." Sufyan said, "This is the worst form of magic when it reaches this stage." So the Prophet said,

«يَا عَائِشَةُ، أَعَلِمْتِ أَنَّ اللهَ قَدْ أَفْتَانِي فِيمَا اسْتَفْتَيْتُهُ فِيهِ؟ أَتَانِي رَجُلَانِ فَقَعَدَ أَحَدُهُمَا عِنْدَ رَأْسِي وَالْاخَرُ عِنْدَ رِجْلَيَّ، فَقَال الَّذِي عِنْدَ رَأْسِي لِلْاخَرِ: مَا بَالُ الرَّجُلِ؟ قَالَ: مَطْبُوبٌ، قَالَ: وَمَنْ طَبَّهُ، قَالَ: لَبِيدُ بْنُ أَعْصَمَ: رَجُلٌ مِنْ بَنِي زُرَيْقٍ حَلِيفٌ لِيَهُودَ، كَانَ مُنَافِقًا، قَالَ: وَفِيمَ؟ قَالَ: فِي مُشْطٍ وَمُشَاطَةٍ، قَالَ: وَأَيْنَ؟ قَالَ: فِي جُفِّ طَلْعَةٍ ذَكَرٍ، تَحْتَ رَاعُوفَةٍ فِي بِئْرِ ذَرْوَانَ»

(O `A'ishah! Do you know that Allah has answered me concerning that which I asked Him Two men came to me and one of them sat by my head while the other sat by my feet. The one who was sitting by my head said to the other one, `What is wrong with this man' The other replied, `He is bewitched.' The first one said, `Who bewitched him' The other replied, `Labid bin A`sam. He is a man from the tribe of Banu Zurayq who is an ally of the Jews, and a hypocrite.' The first one asked, `With what (did he bewitch him)' The other replied, `With a comb and hair from the comb.' The first one asked, `Where (is the comb)' The other answered, `In the dried bark of a male date palm under a rock in a well called Dharwan.') `A'ishah said, "So he went to the well to remove it (the comb with the hair). Then he said,

«هَذِهِ الْبِئْرُ الَّتِي أُرِيتُهَا، وَكَأَنَّ مَاءَهَا نُقَاعَةُ الحِنَّاءِ،وَكَأَنَّ نَخْلَهَا رُؤُوسُ الشَّيَاطِين»

(This is the well that I saw. It was as if its water had henna soaked in it and its palm trees were like the heads of devils.) So he removed it (of the well). Then I (`A'ishah) said, `Will you not make this public' He replied,

«أَمَّا اللهُ فَقَدْ شَفَانِي، وَأَكْرَهُ أَنْ أُثِيرَ عَلَى أَحَدٍ مِنَ النَّاسِ شَرًّا»

(Allah has cured me and I hate to spread (the news of) wickedness to any of the people.)"

তাফসীর ইবনে কাছীর 

১-৫ নং আয়াতের তাফসীর: মুসনাদে ইবনে আবী হাতিমে হযরত জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, (আরবি) সকাল বেলাকে বলা হয়। আওফী (রঃ) হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতেও এটাই বর্ণনা করেছেন। কুরআন কারীমেরই অন্য জায়গায় (আরবি) রয়েছে। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে এটাও বর্ণিত আছে যে, (আরবি) এর অর্থ হলো মাখলুক। হযরত কা'ব আহবার (রাঃ) বলেন যে, (আরবি) হলো জাহান্নামের একটি জায়গা। ঐ জায়গার দরজা খোলা হলে তথাকার আগুনের উত্তাপ এবং ভয়াবহতায় জাহান্নামের সমস্ত অধিবাসী চীৎকার করতে শুরু করে। একটি মারফু হাদীসেও উপরোক্ত হাদীসেরই প্রায় অনুরূপ উক্তি রয়েছে। কিন্তু ওটাকে মুনকার হাদীস বলা হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন যে, (আরবি) জাহান্নামের নাম। ইমাম ইবনে জারীর (রঃ) বলেন যে, প্রথমটিই সবচেয়ে বেশী নির্ভরযোগ্য উক্তি। অর্থাৎ (আরবি) এর অর্থ হলো সকাল বেলা। 

ইমাম বুখারীও (রঃ) একথাই বলেছেন এবং এটাই নির্ভুল।সমস্ত সৃষ্ট বস্তুর অপকারিতার মধ্যে জাহান্নাম, ইবলীস ও ইবলীসের সন্তান সন্ততিও রয়েছে। (আরবি) এর অর্থ হলো রাত। (আরবি) এর অর্থ হলো সূর্যাস্ত। অর্থাৎ যখন অন্ধকার রাত উপস্থিত হয়। ইবনে যায়েদ (রঃ) বলেন যে, আরবের লোকেরা সুরাইয়া নক্ষত্রের অস্তমিত হওয়াকে বলে। অসুখ এবং বিপদ আপদ সুরাইয়া নক্ষত্র উদিত হওয়ার পর বৃদ্ধি পায় এবং ঐ নক্ষত্র অস্তমিত হওয়ার পর অসুখ বিপদ আপদ কেটে যায়।একটি মারফু হাদীসে রয়েছে যে, (আরবি) হলো নক্ষত্রের নাম। কিন্তু এ হাদীসের মারফু হওয়ার কথা সত্য নয়। কোন কোন তাফসীরকার বলেন যে, (আরবি) এর অর্থ হলো চাঁদ। তাফসীরকারদের দলীল হলো মুসনাদে আহমদে বর্ণিত একটি হাদীস, যাতে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর হাত ধরে চাঁদের প্রতি ইশারা করে বললেনঃ “আল্লাহর কাছে ঐ (আরবি) এর অপকারিতা হতে আশ্রয় প্রার্থনা কর।"অন্য রিওয়াইয়াতে আছে যে, (আরবি) দ্বারা এটাই বুঝানো হয়েছে। 

উভয় উক্তির মধ্যে সহজেই সামঞ্জস্য বিধানের জন্যে বলা যেতে পারে যে, এটা হলো চাদের ক্রমবৃদ্ধি এবং নক্ষত্ররাজির আত্মপ্রকাশ ইত্যাদি। এসব কিছু রাত্রিকালেই হয়ে থাকে এবং যখন রাত্রির আগমন ঘটে। এ সব ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাই সঠিক জ্ঞানের অধিকারী। গ্রন্থিসমূহের উপর পড়ে পড়ে ফুৎকারকারিণীরা অর্থাৎ যাদুকর নারীগণ।হযরত মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, যেই মন্ত্র পাঠ করে সাপে কাটা রোগীর উপর ফু দেয়া হয় এবং ভূত প্রেত তাড়ানোর জন্যে ফু দেয়া হয় এগুলো শিরকের খুবই কাছাকাছি। অন্য হাদীসে রয়েছে যে, হযরত জিবরাঈল (আঃ) রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর কাছে এসে বললেনঃ “হে মুহাম্মদ (সঃ) আপনি কি রোগাক্রান্ত?” রাসূলুল্লাহ (সঃ) উত্তরে বললেন “হ্যা” হযরত জিবরাঈল (আঃ) তখন নিম্নের দু'আ দু'টি পাঠ করেনঃ (আরবি)অর্থাৎ “আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ফু দিচ্ছি সেই সব রোগের জন্যে যা আপনাকে কষ্ট দেয়, প্রত্যেক হিংসুকের অনিষ্ট ও কুদৃষ্টি হতে আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য দান করুন। এই রোগ দ্বারা সম্ভবতঃ ঐ রোগকেই বুঝানো হয়েছে যে রোগে তিনি যাদুকৃত হওয়ার পর আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন। অতঃপর আল্লাহ তা'আলা স্বীয় রাসূল (সঃ) কে সুস্থতা ও আরোগ্য দান করেন। 

এতে হিংসুটে ইয়াহুদীদের যাদুর প্রভাব নস্যাৎ হয়ে যায়। তাদের সকল ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত ব্যর্থ করে দেয়া হয়। তারা চরমভাবে লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়। রাসূলুল্লাহ (সঃ) কে যাদু করা সত্ত্বেও তিনি যাদুকারীদেরকে কোন কটু কথা বলেননি এবং ধমকও। দেননি। আল্লাহ তা'আলা স্বীয় নবী (সঃ) কে সুস্থতা ও আরোগ্য দান করেন।মুসনাদে আহমদে হযরত যায়েদ ইবনে আরকাম (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী (সঃ) এর উপর একজন ইয়াহূদী যাদু করেছিল। এই কারণে নবী (সঃ) কয়েকদিন পর্যন্ত অসুস্থ ছিলেন। তারপর হযরত জিবরাঈল (আঃ) এসে তাঁকে জানান যে, অমুক ইয়াহূদী তার উপর যাদু করেছে এবং অমুক অমুক কুঁয়ায় গ্রন্থি বেঁধে রেখেছে। সুতরাং তিনি যেন কাউকে পাঠিয়ে ঐ গ্রন্থি খুলিয়ে আনেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) লোক পাঠিয়ে তখন কুঁয়া থেকে ঐ যাদু বের করিয়ে আনান এবং গ্রন্থিখুলে ফেলেন। ফলে যাদুর প্রভাব কেটে যেতে শুরু করে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ। (সঃ) ঐ ইয়াহুদীকে এ সম্পর্কে একটি কথাও বলেননি। এবং তাকে দেখে। কখনো মুখও মলিন করেননি।

সহীহ বুখারীতে কিতাবুত তিব্বে হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর উপর যাদু করা হয়েছিল। রাসূলুল্লাহ ভেবেছিলেন যে, তিনি তাঁর স্ত্রীদের কাছে গিয়েছেন, অথচ তিনি তাদের কাছে যাননি। হযরত সুফইয়ান (রঃ) বলেন যে, এটাই যাদুর সবচেয়ে বড় প্রভাব। এ অবস্থা হওয়ার পর একদিন রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেনঃ “হে আয়েশা (রাঃ)! আমি আমার প্রতিপালককে জিজ্ঞেস করেছি এবং তিনি আমাকে জানিয়েছেন। দু’জন লোকে আমার কাছে আসেন। একজন আমার মাথার কাছে এবং অন্যজন আমার পায়ের কাছে বসেন 'আমার কাছে অর্থাৎ শিয়রে যিনি বসেছিলেন, তিনি দ্বিতীয়জনকে জিজ্ঞেস করলেনঃ “এর অবস্থা কি?” দ্বিতীয়জন উত্তরে বললেনঃ “এঁর উপর যাদু করা হয়েছে। প্রথম জন প্রশ্ন করলেনঃ “কে যাদু করেছে?" দ্বিতীয়জন জবাব দিলেনঃ “লুবাইদ ইবনে আসাম। সে বান্ যুরাইক গোত্রের লোক। 

সে ইয়াহূদীদের মিত্র এবং মুনাফিক।" প্রথম জন জিজ্ঞেস করলেনঃ “কিসের মধ্যে যাদু করেছে?" দ্বিতীয়জন উত্তর দিলেনঃ “মাথার চুলে ও চিরুণীতে। প্রথমজন প্রশ্ন করলেনঃ “কোথায়, তা দেখাও।” দ্বিতীয়জন উত্তর দিলেনঃ “খেজুর গাছের বাকলে, পাথরের নিচে এবং যারওয়ান কূপে।” অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সঃ) ঐ কূপের কাছে গমন করলেন এবং তা থেকে ওসব বের করলেন। ঐ কূপের পানি ছিল যেন মেহদীর রঙ। ওর পাশের খেজুর গাছগুলোকে ঠিক শয়তানের মাথার মত মনে হচ্ছিল। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেনঃ আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল (সঃ): এ কাজের জন্যে তার উপর প্রতিশোধ গ্রহণ করা উচিত। রাসূলুল্লাহ (সঃ) একথা শুনে বললেনঃ “সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর। তিনি আমাকে নিরাময় করেছেন ও সুস্থতা দিয়েছেন। আমি মানুষের মধ্যে মন্দ ছড়ানো পছন্দ করি না।”অন্য একটি বর্ণনায় আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) কোন একটা কাজ করেননি। অথচ তাঁর মনে হতো যে, তিনি ওটা করেছেন। এটাও বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহর (সঃ) নির্দেশক্রমে ঐ কূপে মাটি ভর্তি করে দেয়া হয়। এও বর্ণনা করা হয়েছে যে, ছয় মাস পর্যন্ত রাসূলুল্লাহর (সঃ) এরূপ অবস্থা ছিল।

তাফসীরে সালাবীতে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) ও হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, ইয়াহূদীদের একটা ছেলে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর খিদমত করতো। ঐ ছেলেটিকে ফুসলিয়ে ইয়াহুদীরা রাসূলুল্লাহর (সঃ) কয়েকটি চুল এবং তাঁর চুল আঁচড়াবার চিরুনীর কয়েকটি দাঁত হস্তগত করে। তারপর তারা ওগুলোতে যাদু করে। এ কাজে সবচেয়ে বেশী সচেষ্ট ছিল লুবাইদ ইবনে আসাম। এরপর যাদুর গ্রন্থি বা সুরাইক যারওয়ান নামক কূপে স্থাপন করে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সঃ) অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তার স্ত্রীদের কাছে গমন না করেও তাঁর মনে হতো যে তিনি তাদের কাছে গমন করেছেন। এইমন ভুলো অবস্থা দূরীকরণের জন্যে রাসূলুল্লাহ (সঃ) সচেষ্ট ছিলেন, কিন্তু এরকম অবস্থা হওয়ার কারণ তাঁর জানা ছিল না। ছয় মাস পর্যন্ত ঐ একই অবস্থা চলতে থাকে। তারপর উপরোল্লিখিত ঘটনা ঘটে। দুজন ফেরেশতা এসে কথােপকথনের মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ (সঃ) কে প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে সচেতন করেন। 

রাসূলুল্লাহ (সঃ) তখন হযরত আলী (রাঃ), হযরত যুবায়ের (রাঃ) এবং হযরত আম্মার (রাঃ) কে পাঠিয়ে কূপ থেকে যাদুর গ্রন্থিগুলো বের করিয়ে আনেন। ঐ যাদুকৃত জিনিষগুলোর মধ্যে একটি ধনুকের রঞ্জু ছিল, তাতে ছিল বারোটি গ্রন্থি বা গেরো। প্রত্যেক গেরোতে একটি করে সূচ বিদ্ধ করে দেয়া হয়েছিল। তারপর আল্লাহ তা'আলা এ সূরা দু’টি অবতীর্ণ করেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) এ সূরা দু’টির এক একটি আয়াত পাঠ করছিলেন আর ঐ গ্রন্থিসমূহ একটি একটি করে আপনা আপনি খুলে যাচ্ছিল। সূরা দু'টি পূর্ণ হওয়ার সাথে সাথে সমস্ত গেরোই খুলে যায় এবং রাসূলুল্লাহ (সঃ) সম্পূর্ণরূপে সুস্থ হয়ে ওঠেন। এদিকে হযরত জিবরাঈল (আঃ) উপরোল্লিখিত দু'আ পাঠ করেন। সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ (সঃ) কে বলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমরা কি ঐ নরাধমকে ধরে হত্যা করে ফেলবো রাসূলুল্লাহ (সঃ) উত্তরে বললেনঃ “না, আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা আমাকে আরোগ্য দান করেছেন। আমি মানুষের মধ্যে অনিষ্ট ও বিবাদ ফাসাদ সৃষ্টি করতে চাই না।”এ বর্ণনায় গারাবাত ও নাকারাত রয়েছে। এ সব ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন।

YOUTH

Tawheed: The Faith of All Prophets

Prophets of Islam -1